পিসিদিদান
পিসিদিদান
মনে পড়ছে, যিনি স্বপাক নিরামিষ আহার করতেন,
আমার একান্ত আপন, সাদা থান পরা পিসিদিদান।
টকটকে ফর্সা, অনেকটা যেন তাঁর বৌদির মতন,
আমি তো ছিলাম তাঁর দুর সম্পর্কের নাতিন।
নিজের নাতনিদের চেয়ে একটু বেশি ভালোবাসতেন,
কি করে বলছি? ছোটোবেলাতেই পেয়েছি প্রমাণ।
মায়ের সাথে যখন ও বাড়ি যেতাম একটু বেড়াতে,
তুলে রাখা দুধের সর ছোটদের লুকিয়ে দিতেন খেতে।
মায়ের জমানো ঘী তৈরীর সর খাই যে চুরি করে,
কথাটা কি উনি বুঝে গিয়েছিলেন কোনোমতে !
এটা ভেবেই একটু লজ্জা লজ্জা মুখে খাই খুশিতে।
মনে ভাবি, দুধের সর না খেয়ে বড়রা কি করে থাকে!
ঘী বানিয়েও তো তবু আনতেই হয় দোকান থেকে।
অবশ্য ঘীয়ের চাছি আর মাঠা(ঘোল), দুটোই ভালো,
পিসিদিদান বেশী দরাজ, যেন মায়ের চেয়েও ভালো।
একবার এক গুরুগোঁসাই ওদের বাড়িতে এসেছিল,
কি জানি নিরামিষ রান্নাগুলো কে যে রেঁধেছিল !
মহাপ্রভূর ভোগ কলাপাতায় খেতে বসে সবার সাথে,
খুউব তৃপ্তি করেই খেয়েছিলাম! মেখে নিজের হাতে।
মাছ, মাংস, ডিম খাওয়া আমার ছাতা-পড়া মুখে,
অপূর্ব সুন্দর সেই স্বাদ, খেয়েছি যেন অমৃত সুখে।
সুগন্ধি আতব চালের ভাত আজও মন টানে,
কোথাও মাইকের শব্দ যখন পাই "হরেকৃষ্ণ" গানে!
মহাপ্রভূর ভোগের কথা অবশ্যই পড়ে আমার মনে।
অবশ্য আজকাল এটা খেতে গেলে খেতে হয় কিনে,
তবু যদি হতো কোয়ালিটি মেনটেইন, নিতাম মেনে।
এভাবেই কিছু স্বাদু নিরামিষ আহার পায় জনগনে,
পাওয়া যায় এখনও নানা কীর্তন কমিটির কল্যাণে।
বাড়ির নিরামিষে এত পদ একসাথে কে আর করে,
শেষ পাতে অপূর্ব এক পায়েস না হলে কি মন ভরে!
