না ভোলা মুহূর্ত কিছু
না ভোলা মুহূর্ত কিছু
যেদিন নিমতলা শ্মশানে
জ্বলছিল ভাইয়ের চিতা
অশ্রু ধারা বইতে ছিল নীরবে
সেই স্মৃতির চিতা আজও জ্বলছে
সে কি ভোলা যায়!
যেদিন হাসপাতালের ঢুকতেই শুনলাম
13 নম্বর বেডের পেসেন্ট চলে গেল !
নির্বাক হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন
সেই বেড যে আছে আমার মা!
খবর মিথ্যে হোক ,মনকে শক্ত করে
ঢুকে পড়লাম আই সি ইউ কেবিনে
লাইফ সাপোর্টিং সিস্টেমে
মায়ের বুকের দুক দুকানিটা চলছে
সারা শরীর মেশিনের অক্টোপাশে
বাঁধা পড়ে আছে যেন
মার নিশ্চল, স্থবির শরীর
অপলক, ভাষাহীন দুটি চোখ
কত কি যেন আমায় বলতে চাইছিল
সে কি ভোলা যায়!
শুধুমাত্র জলের বোতল আর মেয়েকে
কোলে নিয়ে
নাম-না-জানা স্টেশনে নেমে পড়া
বুকফাটা তেষ্টা নিয়ে
কুষ্ঠ রোগী এক
চাতক চোখে তাকিয়ে আছে যেন!
নলকূপ চালাতেই
শীতল বারিধারা বইলো
তৃষ্ঞার্তের তৃষ্ণা মিটলো হয়তো
সেই যে নান্দনিক প্রশান্তি!
সেই অসহায় করুণা চোখ দুটি
জানু আজ তাকিয়ে রয়েছে আমার পানে
সে কি ভোলা যায়!
সেদিন ছিল জগন্নাথের বাহুড়া যাত্রা
বাবার চলে যাওয়ার খবর এলো
রাতের দ্বিপ্রহর বাবা আমার শুয়ে পড়েছে
মহাকালের বুকে চির নিদ্রায়
নিষ্পাপ শিশুর মতো বাবার মুখ খানি
সে কি ভোলা যায়!
এইরকম না ভোলা মুহূর্ত কিছু
জীবনের চালাপথের চির সহচর
স্মৃতির মনিকোঠায় যে এদের ঘর
একান্তের প্রেরণা যে এরা
জীবনকে করে সরস সুন্দর ।।
