স্বপনচারী
স্বপনচারী


সেদিন তুমি নিবীড় ভাবে কাছে এসে বললে আমায়, স্বপ্ন দেখতে।
নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সড়িয়ে নিলেও, কথাটা মনে ধরল।
যদিও এখন তোমার কোনো কথাই আর ভালো লাগেনা, আগের মতো।
সব মনে হয় অবান্তর, সৃষ্টিছাড়া, ভিত্তিহীন।
একদিন এই কথার যাদুতেই হয়েছিলাম পাগলপারা,
মনে পড়ে যায় প্রথম দিকের সে সব দিন।
অপলক বিস্মিত দৃষ্টি মেলে, শুনতাম তোমার কথা,
ঘন্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন, ক্লান্তিহীন আবেশে।
রামধনু রঙ কল্পনার সূতোয় বেঁধেছিলাম,
আগামীর নিটোল বুনন।
না, এখন এসব ভাবলে বড্ড হাসি পায়, সকলই সীমাহীন আদিখ্যেতা ছাড়া কিছুই নয়।
তোমার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষেরা আর যাই হোক, জীবনসঙ্গী হতে পারে না।
সারাজীবন মনের কোণের ধূলিজমা হাজারো স্মৃতির তলানিতে, অপদার্থ প্রেমিক হয়েই থেকে যায়।
শুনলাম তোমার কথা, স্বপ্ন দেখলাম।
সত্যি একটা গোটা রাত জুড়ে এক সফল পুরুষের স্বপ্ন।
মুখটা যদিও অস্পষ্ট,তবু গড়ন দেখে বুঝলাম তুমি নও।
গত পরশু যে ডাক্তার ছেলেটি আমায় দেখতে এসেছিল,হুবহু সেই গড়ন।
স্বপ্নে ও আমার হাত ধরেছিল, নিয়ে যাবে বলে এক অন্তহীন সুখের দেশে।
যেখানে না আছে দুঃখ, রাগ, অভিমান, হতাশা, না আছে অক্ষমতা, সৃষ্টিছাড়া স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকার মতো অনন্ত অলস সময়।
কিন্তু একি অদ্ভুত অনুভূতি, এ স্পর্শ যে আমার বড় চেনা।
এ যে তোমার স্পর্শ, হ্যাঁ তোমারই।
স্বপ্নেও কি এভাবেই অধিকার ফলাতে চাও?
অপরিসীম বিচক্ষণতা তোমার,
এজন্যই কি বলেছিলে স্বপ্ন দেখতে?
বাস্তবের সাথে সাথে অবচেতন সত্ত্বাকেও গ্রাস করে আছো, তার জানান দিতে?
মুক্তি দাও আমায়, মুক্তি দাও ওগো,
স্বপ্ন থেকে না পারো, বাস্তব থেকে, দূরে চলে যাও, অনেক দূরে।
আমার জগতটা করে দাও একান্ত আমারই।
তুমি না হয় থেকে যেও হয়ে, এক অতি ব্যার্থ, অসহায় স্বপনচারী।