শাস্তি দাও নারী
শাস্তি দাও নারী
পাড়ার মোড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়,
দীর্ঘ দিন আলমারির কোনে পড়ে থাকা ধূলোমাখা মোমবাতি,
সব বিক্রি হয়ে যায় নিমেষে।
এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষ রূপী হায়নার বিকৃত পৌরুষের উন্মাদনায়, যখন শিকার হয় কোনো নারী,
তখনই বাজারে আকাল পড়ে মোমবাতির।
কিছু জমায়েত হয়, হয় কিছু মৌন মিছিল,
পুড়ে ছাই হয়ে যায় লাখো লাখো মোমবাতি,
কিন্তু সেই অগ্নিশিখা কখনও দগ্ধ করতে পারে না,
বিকৃত কাম ধর্ষকের উত্থিত যৌনাঙ্গ।
হতে পারো তুমি দ্রৌপদী বা সীতা, নির্ভয়া বা মৌমিতা,
হতে পারো তুমি গৃহবধূ বা পরিচারিকা, ডাক্তার বা শিক্ষিকা,
হতে পারে এটা আর জি কর বা দিল্লী বা কামদুনি,
পার্ক স্ট্রিট বা কোনো মহাকাব্যিক পটভূমি।
স্থান, কাল, কর্মদক্ষতা প্রতিনিয়ত বদলে গেলেও,
তোমার পরিচয় একই থেকে যায়,
তুমি নারী।
মা, বোন, মেয়ে, স্ত্রী বা দেবী এমন কতশত পরিচয়ের সাথে সাথে,
তুমি নিজ কাঁধে বয়ে বেড়াও ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বের পাহাড়,
কখনো চালাও দেশ, কখনো সংসার।
তবে পিশাচ রূপী ধর্ষকের চোখে তুমি শুধুই নারী,
একটি অপেক্ষাকৃত দূর্বল ও কোমল শরীর,
বিপরীত লিঙ্গ,
চূড়ান্ত ভোগের অমৃত খনি।
শাস্তি দাও নারী, রুখে দাড়াও,
বুকের মধ্যে জমা ক্রোধের স্ফুলিঙ্গে মশাল জ্বালাও,
দাও মৃত্যুদণ্ড বা হোক উরু ভঙ্গ,
দগ্ধ করো, বিকৃত কাম ধর্ষকের উত্থিত যৌনাঙ্গ।
নারীর সতীত্ব বড়ই ঠুনকো,
তাই তো আদি অনন্ত কাল ধরে তাকে বারবার,
পরীক্ষা দিতে হয় অটুট সতীত্বের।
হয়তো ধর্ষিতার মৃত্যুই শ্রেয়।
আজও ধর্ষিতারা সমাজের ব্যাধি, বহিস্কৃত,
বলুন তো, কজন জীবিত ধর্ষিতার খোঁজ রাখি আমি আপনি?
মনের গভীরে কিছু দিন ক্লান্ত স্মৃতির তলানিতে পড়ে থাকতে থাকতে হারিয়ে যায় মৃত ধর্ষিতার গল্প,
কিন্তু যে ধর্ষিতা জীবিত, জীবন তার কন্টকময় দূর্বিসহ।
মোমবাতি গুলো সযত্নে তুলে রাখুন,
আশেপাশের মানুষরূপী ধর্ষকদের খুঁজে বার করুন,
শাস্তি দিন নিজ হাতে,
লাখো লাখো মোমবাতির শিখায় তৈরি করুন ওদের চিতা।
ঝলসে যাক প্রত্যেকটি জীবন্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ,
দগ্ধ হোক, বিকৃত কাম ধর্ষকের উত্থিত যৌনাঙ্গ।
