মায়া
মায়া
শরতের ভোরে দুহাত উপচে পড়া শিউলি কুড়ানো, মেয়েটার অভ্যাস।
তারপর এক ছুটে চাটুজ্যেদের দূর্গা দালান।
লোক চক্ষুর অন্তরালে ফুলগুলো এক কোণে সাজিয়ে রেখে, আবার ছুটতে ছুটতে বাড়ি।
পূজোর কদিন এই একই নিয়মে বাঁধা, মেয়েটার জীবন।
মেয়েটা বলতে মায়া, মায়া টুডু, আদিবাসী পাড়ায় বাড়ি।
পূজোর সারাদিনের কর্মকাণ্ডে তারা ব্রাত্য,
চাটুজ্যেদের পূজোয় অংশগ্রহণ করার মতো না আছে তাদের সামাজিক মর্যাদা, না পোশাক-আশাক।
ভদ্র লোকদের গা বাঁচিয়ে, দূর থেকে করজোড়ে মায়ের নিকট প্রনাম নিবেদনই, তাদের কাছে ঢের বড় পাওনা।
অষ্টমীর ভোরে শিউলি তলায় দাঁড়িয়েছিল মায়া, ফুল কুড়াবে বলে, চারপাশে বেশ অন্ধকার।
চাটুজ্যেদের মাতাল ছোট ছেলেটা, সারারাত এ ঠেক ও ঠেক ঘুরে, ফিরছিল বাড়িতে।
চোখ পড়ল মায়ার দিকে, জেগে উঠল আদিম পৈশাচিক সত্ত্বা।
শিউলি তলার ঝোপ গুলো কেঁপে উঠল, সাথে সাথে মায়ার সর্বশরীর।
তথাকথিত ভদ্রলোক, কেড়ে নিল এক তথাকথিত ছোটজাত, নাবালিকার সম্ভ্রম।
অচৈতন্য হয়ে পড়ে রইল মায়া, সর্বাঙ্গ ক্ষত বিক্ষত।
একমাত্র নির্বাক সাক্ষী, ঝরে পড়া ঐ শিউলিরা রক্তাক্ত।
