লবঙ্গলতিকা
লবঙ্গলতিকা
আমাকে খুঁজিতে এলো ঘুমঘোর চোখে লবঙ্গলতিকা
চোখে তার বেদনার ঢেউ স্বপনের গন্ধে মেঠো ঘ্রাণ
গায়ে তার এলাচ বীজের মতো গন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে
প্রাণ ,এই এলোমেলো শূন্যতার আগমনী চারপাশে
যখন, হয়েছে বোবা ব্যাকুল ভাষাহীন ,তখন চুলের
মধ্যে ,ভেসে থাকে চম্পকফুলের ঘ্রাণ সে এক রাতের
রাত, গাঢ় তার জীবনের ঘুটঘুটে পিপাসার স্বর টানিল
মোরে , সেই সব ছেড়ে আসা শোকের অশ্রুর দিনে
যেখানে, বসিয়া মোরা খেলেছি গুজবে প্রমিত ব্যর্থত
নিয়ে, তোমারে হারায়ে ফেলে রেখে প্রভঞ্জন সমুদ্
সাঁতারের , ব্যর্থতার রক্তস্রোতে ভেসে ডুবেগেছি আমি
আমি ,তখন চলেছি সেই ঘুমঘোর অন্ধকারের নদী পার
করে,বৈতরণী তীরে ফেলেছি আমার শেষের শুভাশুভ
ফল, তুমি এসে দাঁড়ালে দুহাত মেলি গনৎকার জ্যামিতি রেখে
জল্প, ছড়ায়ে দিলেযে তুমি লবঙ্গলতিকা
রাশি, বাহুতে তোমার ছিল শিয়াল হায়না
ঘেরা, এই সব সমাজের নারী-পুরুষের ক্রান্তি , ঘিরে
দিলে,জ্যোৎস্নায় স্নাত করে,দূরে ঠেলে যত কঠিনকোটাল
তবু, ফিরে এলে নাকো আর আমার বাসায়
তাই মৃত্যুর ঘ্রাণেও ব্যথারা নিবিড় ভাবে অশ্রু ফেলে
অর্চে, অরুন্তুদ অযোধ্যর কথা,অরিষ্ট হৃদয়ে তুমি
চল,আজ সেই সব দিন আর নেই,ধুলায় মলিন মুখ
তবু, তোমারে চেয়েছি আমি ঘুমের ওষুধ যেন সুরাসার/
রাতে,আসো নাই ফিরে আর, দিনে দিনে ফুরায়েছ তুমি/
আমি, ফুরায়েছি মৃতসব নদীর জলের মতো
আজ,ওড়পুষ্প সম ফুটেছি ওদনে,ওঁচাদের মতো শুধু
থাকি, তুমি ছাড়া আলোহীন এই গোবশা জীবনে গোট
সেতো,তোমাকে জানায়ে পাইনিতো কোন ডাঙ্গর ডহর
ডাঙা, জীবনেরে ডেকে আর একবার আমন ধানের
গন্ধে,কিন্তু পাকা আম দাঁড়কাকে খেয়েগেছে
কবে,আমগন্ধি সমাজে আমক-শ্মশান মানুষের নামে
কারা, যারা খুবলে নিয়েছে রূপসী-রূপবানেরচোখ-মুখ
তারা, কুবাসনাকে কুবাস করে, কুবাক্যে আইন কুমকুম
করে, পায়েতে খেলায় নটী কুবের পুরুষ নাচে/
খেলে, এমত সময়ে জীবন-আকাশগাঙে নেমেছে বয়স
ঝুড়ি, বট ঠিক খুঁজে নেয় সৌধ-শীলা ভেদ করে /
জল, নেমেছে মরেছে সব হৃদয়ের বারান্দায় থুরথুরে
বুড়ো, ঘুরে ঘুরে ডাকে সেই সব গত আত্মীয়র নাম
ধরে, বনমালী বলাই কানাই দুর্গা কালী নিতাই গৌরাঙ্গ
যত,হায়,চারপাশে জামরুল,জাম,কাঠাল,লিচুর ফল
কত, তারাও একদিন এই উঠানের পরতে পরতে দঙ্গলদঙ্গলীদের
কুতূহলে, দিয়েছে ছায়ার ঘ্রাণ আর জীবনের সাধ/
তারা, আজ মরেগেছে আকাশে আকাশে তারা
আজ, বুড়ো একা পড়ে আছে সহস্র বছরে জমা
এই ,আঁশটে গুমোট জীবন কি পেয়েছে শেষে
নীতি, হৃদয়ের কথা বলা ঘর করা সমাজে বারন
তাই, লবঙ্গ লতিকা আসে নাকো কথাশুনি বাতাসের গায়
তবু, ডাকি আমি বন্ধু বলে,রাগে মানে অভিমানে
জলে,অশ্রুমুছি,ফিরি খাদ্য খুঁটে বাঁচি,মরণেও মরণ নাই
তাই, যদি ভাবি খুরলী বাঁশির সুরে,যদি জাগে প্রৌঢ়া
এক বার,প্রোষ্ঠ পদ চরণ ধরেযে তার রাখি মাথার ওপরে
প্রৈতি,এমত ব্যথিত হৃদে পঙ্গু শক্তি নিয়ে
তাকে,লবঙ্গলতিকা এসে দাঁড়ায় আমার ঘরে,সেও ঘুম
চোখে,আমিও তন্দ্রা মাখা আবেশে জড়ায়ে ধরে আজ
তুমি, নেউটিয়া নেওটা নীলাম্বরী ললিত লবঙ্গলতিকা
মোর, মুছেগেছে এই সব সেই সব অন্ধকার সব ক্ষত
মেনে,আমরা দুজনে উঠছি ফুটে নতুন ফুলের নেত্র
নিয়ে, ঘুমায়ে রয়েছি দোহে শুধু উৎপ্রাসে অর্ধনারীশ্বর।
