লবঙ্গলতিকা
লবঙ্গলতিকা
লবঙ্গলতিকা( 8/3/22) ৫নং
বহুদিন এই ভাবে আছি লবঙ্গ লতিকা ,এক অবৈধ জীবন
কথা, তোমার বয়স হয়েছে ,চুলে পাক ধরেছে অদ্ভুত
তাই, আমার কাছে এসেও, বলে যাও
এই, হাঁটুর ব্যথাটা বেড়েছে খুব, পেটের পাশে মেদের ভার
অতি, রজঃস্বলা বিঘ্নিত শরীর,মনের প্রস্তাব
নেই, এই শরীরে সম্ভোগ লীলা নিজের কল্পনার গঙ্গা স্রোত
যেন,তোমার আরাধনা অর্ধনারীশ্বর
হয়ে, বুকের মধ্যে ভেসে যায় মৃত পিতা লক্ষ্মীন্দরের আয়ু
নিয়ে, সে বুঝবে না গ্রামের বাড়ি গাছপালা পোকামাকড় অন্ধকার
আলো, পার্বণ ছিল সে এক পর্যায়ের অভিসার
এক, এক নীরবতা ঘিরে আছে পাতকুয়োর ঠান্ডা জলের গভীরতা
নিয়ে, এই সেই সময় যখন নাড়ুরগন্ধে ভরে উঠতো উঠান, বারান্দা
আমি, পিতার কোলের কাছে বসে পিঠে পুলি
আর, বাহারি দড়ি দেওয়া পাজাম, ইংলিশ প্যান্ট কচি হাতের
তলে ,ভবিষ্যৎ কেঁদে ওঠে বারবার ,থাবা নিয়ে চলে যায়
সব, তখন তোমার নাভিমূলে আরেক জন্ম খুঁজি
কিন্তু, বারবার ধোঁকা দিয়ে যায় ডাকিনীর লোল জিহ্বা
চেটে, অন্ধকার দূরদেশে যেখানে সেখানে কাশবনের কবর খোলায়
বাস,তবুও তারা আসে সকালের রোদ্দুর মেখে, শুষে নেয়
আলো, মৃত চাঁদ সুধারস কোথায় পাবেযে
আজ, একবুক উজবুক এখানে ঘোরাঘুরি করে
আসে, কেড়ে নেয় সরল প্রদীপের আলো তুলসীমঞ্জরীর বাস,
তাই ,বারবার মৃতদেহ কোলে রক্ত মেখে প্রতিহিংসা ভুলে তোমার বুকের কাছে
এসে,থেমে গলে পড়ে কামনা আমার।আমার আমিকে
এই পথে এগিয়ে আসতে হবে ভেবে থামি পুনরায়
এই , সময়ের পথে ডাকিনী-যক বধ্য নয় আইনত,প্রমাণ দেওয়া কঠিন কেননা সমাজের প্রতিনিধি
এরা, কতটুকু লোপাট করা যাবে সঙ্ঘশক্তি বলে সবকিছু ঠিক
ওরা, তখন এই দেহ ,এই জীবন একক রক্ত সঞ্চালন বন্ধ
করে, হাজার রক্তবীজের কাঁশবন বুনোঘাসের কিছুই হবার নয়
তাই আত্মরতি পিতার হত্যাকে মেনে নিতে হয়
এবং, মায়ের হত্যাকে মেনে নিতে হয় এই দেশে এই জন্মে
এবং, দিদি ও বোনের ও ভাইয়ের হত্যাকে মেনে নিতে হয়
এই ,এই জন্ম উপভোগ করা শুধু ,উপভোগ করো ,ভুলে যাও ,ভুলে যেতে হবে
এই হঠযোগে তোমার উলঙ্গ শরীরে এসে প্রার্থনা মরে
শুধু, এই চক্রাবর্তন চলে মাকড়সার জালের মতো অন্তহীন
ছেঁড়া যত দূর যায় ততদূর তোমার আকাশ আরো অসম্ভব দূর
রক্ত পায়ে ফসলহীন মাঠে গড়িয়ে যায়, ফাঁকা ফাঁটল ও নাড়াময় মাঠে গভীর কূপের যন্ত্র বিকল হয়ে
আজ , পিপাসায় জল নেই কোথাও ,পিতাকে দেখার আনন্দ নেই
আজ পড়ন্ত বেলায় ফসলের ক্ষেত থেকে পাকা ধানের ঘ্রাণ নিয়ে
ছুটে, ছুটে ছুটে আর খেলার সাথির খোঁজ করি না আর
একা, এই একা বসে বসে ভাবি আর ভাবি ,জাগি ঘুরে দাঁড়ায় আরেকবার
এসে, তোমার পায়ের কাছে নতজানু হয়ে প্রেমময় প্রার্থনা বিকল
হয়ে ,ফিরে আসে এক সমাধিতে ,বয়স হয়েছে ঢের ,আজ মৃত্যুর খবর দেওয়া ও বহন করে নিয়ে যাওয়া যিশুর মতো
সুনীল কুমার রায়@8/3/22

