প্রথম প্রেম
প্রথম প্রেম
![](https://cdn.storymirror.com/static/1pximage.jpeg)
![](https://cdn.storymirror.com/static/1pximage.jpeg)
এখন সত্তর ছুঁয়ে
পৌঁছে গেছি নিঃসঙ্গতার শেষপর্বে।
সোজা ভাবে হাঁটতে বসতে কষ্ট হয়।
বুকের ভেতর যতটুকু জীবন বেঁচে চশমা পড়েও দেখতে পাইনা।
মাথা ভর্তি কৃষ্ণঘন চুল এখন কতটা সাদার শুভ্রতা বুঝতে যাইনা।
ঘরদোর ছুঁয়ে নিতে হাত কাঁপে।
কথা জড়ায় ঠোঁটে।
তোমার কিশোরী স্বভাব কুর্তি ছেড়ে গায়ে জড়ালে শাড়ি
অজান্তে আমার যৌবন ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে নিতো।
তোমার যৌবন লুকোতে আনচান লজ্জার কাঁচুলি বুকভারি
আমার দু’হাত অন্যমনস্কতার ভেতর সরিয়ে নিতো।
হঠাৎ তোমার বিয়ে সারা হল সাত পাক
সানাই শঙ্খ উলুধ্বনির স্তুতির উপস্থনায়।
চোখের থেকে পানপাতায় লজ্জা সরিয়ে
হোমের আগুনে কুলোভর্তি খই ছড়িয়ে,সিঁথির সিঁদুরে ঘর আলো করে।
নতুন সংসারের অভিসারের অগোচরে একান্তসুখ
আমায় বিভোর করেছিল ভালোবাসার ভিক্ষার অসুখ।
চল্লিশ বছর আঁকড়ে আছি তোমার দেওয়া উপহার উষ্ণতার সখ্যতায়।
রবীন্দ্রনাথ, জীবনান্দ, অতুল প্রসাদ, রজনী কান্ত, সুকান্ত, কামিনী রায়
আরও অনেক নামি দামি বই আজও আলমারি ঠাসা।
এখন আর ঠিকমত যত্নআত্তি করতে পারিনা।
কাজের মেয়ে ইতি প্রায় কথা শুনিয়ে যায়।
বাবু! গোছালো বইগুলো খেয়ে যাচ্ছে উইপোকায়।
ঘুণে কাগজ ঝরে পড়ছে। কি হবে এ সব ছেঁড়া বই রেখে? ফেলে দিলেই তো হয়।
এখনও ওজনে বেচলে টাকা হয়। শুধু শুধু ঘর নোংরা হয়।
ঝাড়পোঁছ করতে প্রাণ যায়।
রোজ বইগুলোর উপর আঙুল বুলিয়ে সহজে বুঝি, তুমি আমার জীবনে প্রথম নারী
মনের উতরোলে তোমার শিহরণ শরীরে বাজনার ঘোর ধরে অভিমান -ভাব-আড়ি।
অনেক দিন ধরে শ্রাবণী বিছানার উপর সংসার সাজিয়ে আধশোওয়া
এ পাশ ও পাশ করতে তার শ্বাস কুলোয় না। কথা বলতেও কষ্ট হয়।
তার চোখের দিকে তাকালে মনে হয় সে অনেককিছু বলতে চায়।
শ্রাবণীর শরীরে প্রাণ বলতে দেখি শুধু তার ঠোঁটের স্মিত হাসি।
ওইটুকু নিয়ে আমার ভোর আমার রাত্রি শুয়ে তার পাশাপাশি।
তোমাকে নিয়ে হল না আর আমার কবিতা লেখা বুঝতে পারি।
আমার একার জীবনে
শ্রাবণীর আকর্ষণে একটু একটু করে রোজ বেঁচে আছি।
তোমার স্পর্শের স্পষ্টতার গোপনে
অন্তঃপুরের অন্তর নিংড়ে মৃত্যুর মুখে অমৃত ধরে আছি।