দিবসান্তে
দিবসান্তে
আজি ফুরালে দিবস খেলা ,
ভাঙিলে মনের মেলা,
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
কত নিশিদিন তোমার আশায়
সাগর-বক্ষে দিলাম ভাসায়
বিরাট তরঙ্গে সাহসের সাথে ভাসিল আমার ভেলা;
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
কত আশা ছিল মনে,
মধুর কুঞ্জবনে --
গুন্ গুন্ তান তুলিয়া যেমনি মৌমাছি করে খেলা,
নয়তো দীঘির জলে
মরাল মরালী চলে,
সাঁতারের ছলে যেমনি দেখায় আপন নৃত্যকলা ;
দিবারাতি মনোনীড়ে,
অসহায় ঘুরে ঘুরে ;
সেইমতো আমি চেয়েছি বন্ধু, চেয়েছি রূপের আলা ।
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
মাঠে মাঠে ধানে ধানে
খুশির আমেজ প্রাণে,
রৌদ্রুচ্ছায়ায় লুকোচুরি খেলে দেখায় যতেক কলা;
নয়তো আকাশ পাড়ে
দিবারাতি উড়ে উড়ে,
শুভ্রতারই মাঝে ভরায় অপরূপ এক নীলা;
সেইমতো চেয়ে চেয়ে
মনের আঙ্গিনা বেয়ে,
বহুদিন ধরি খুঁজে ফিরে আজ বদ্ধ দ্বারেতে তালা ।
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
মধ্যাহ্নের রবির দীপ্তি
দিবসের শেষে না পেয়ে তৃপ্তি
হারিয়ে ফেলেছে আপনার তেজ, তারা ভরা সাঁঝ বেলা ।
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
ছিঁড়িলে বীণার তার,
সুরেরই ঝনাৎকার,
হারিয়ে ফেলে যেমনই কখন মধুর ছন্দকলা ;
সেইমতো পথে পথে
ঘুরে ঘুরে দিবারাতে
শ্রান্তি এসে হরিল শক্তি, ভুলিলাম পথচলা ।
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।
বিশাল কারাগারে-
রাতের অন্ধকারে
তাড়াবার কালে ক্ষুদ্র চন্দ্রে পায় না শক্তি ঠেলা ;
নয়তো সময়কালে
বৃষ্টিধারার তালে
না পেয়ে ধরণী হতাশায় ভাবে, কেন এই অবহেলা;
সেইমতো দিবাশেষে,
পুরাতে মনের আশে,
নিয়ে এলে তুমি আপনার মতো সাজায়ে পুস্পমালা ।
সময় তোমার পেলে কি বন্ধু, আসিলে যে এই বেলা ।

