বাঙালী দুর্গাপুজা
বাঙালী দুর্গাপুজা
একটা সময় ভুতের উপদ্রব কি না জানা নেই,
হয়েছিলো আম জনতার নাকি ভৌতিক গাঙ্গেয় জ্বর।
গ্রামবাংলার লোকজন হয়েছিলো একেবারে উজার।
পরে মনে করা হয় সার্স নামক রোগই উৎপত্তি তার।
ভুত মানে আসলে তো অতীত, বরং গল্প করি তার।
অখন্ড বাংলার রাজশাহী জেলায় ছিলো তাহেরপুর,
কংসনারায়ন রায় ছিলেন সেখানকার জমিদার।
তিনি ছিলেন অন্যতম একজন সেই বারো ভুঁইয়ার।
কথা শুনে চলতেন তাঁর, বাংলার সকল জমিদার!
মজার কথা হলো আসলে ছিলেন তাঁরা জনা তের,
অশুভ তের না বলে বলা হতো ভুঁইয়াদের বারো !
ভুত, প্রেত, শুভ, অশুভ লোকে মানুক বা না মানুক,
মনটা অনেকেরই করে কিন্তু একটুখানি খুঁত খুঁত।
একসময় তিনি রাজসূয় বা অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে চান,
কিন্তু কলিযুগে অশ্বমেধ করা যায়না, এমন বিধান।
পন্ডিতেরা দুর্গাপূজার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
বাংলায় দুর্গা পূজার যদিও বহু আগেই ছিল প্রচলন,
সাত থেকে নয় লক্ষ টাকা দুর্গাপূজায় খরচ করেন।
পন্ডিত রমেশ শাস্ত্রীর বিধান মতে শরৎ কালে,
মোগল যুগে ভারতের সম্রাট আকবরের আমলে,
তিনিই বাংলায় প্রচলন করেন আধুনিক দুর্গা পূজার।
প্রবর্তন করেন একচালায় সপরিবারে দুর্গা প্রতীমার !
একচালিতে অবস্হান শিব সহ দশ মহাবিদ্যার।
লক্ষ্মী - সরস্বতী ওপরে আর গনেশ-কার্তিক নিচে,
কি জানি কেন যে ! কিই বা ভেবেছিলেন তিনি নিজে !
একদম গাঢ় হলুদ ছিল দুর্গা প্রতীমার গায়ের বরণ,
সমগ্র বঙ্গদেশেই হয়েছিলো এরকম পূজার প্রচলন।
কংসনারায়ন ভুঁইয়া এভাবেই কিংবদন্তি তৈরী করেন,
বাঙালী দুর্গাপূজায় তাই আজও তাঁকে করি স্মরণ।