বাহিনের সেই বাড়িটা
বাহিনের সেই বাড়িটা
হয়তো হাতছানি দিয়েছিলো বাহিনের সেই বাড়িটা,
যার পাশ দিয়ে গেছে বয়ে নাগর নামের নদীটা ।
তা নাহলে সব জায়গা ছেড়ে কেন ওখানেই
ঘুরতে চেয়েছিল একদিন আমাদের এই মনটা ?
ঝিঁটকিয়া স্টেশনে নেমে দেখি ধূ ধূ প্রান্তর,
দূরে দেখা যায় গ্রাম, আছে নাকি ওখানে নদীর চর!
নাগর নদীর এপারে বাংলা আর ওপারে বিহার।
অবিভক্ত বাংলার এক জমিদার, রুদ্রপ্রতাপ চৌধুরী।
বাহিন, কুমারজল, মাকড়া, মধুপুর, লহুজগ্রাম সহ
বিস্তীর্ণ এলাকা মিলে ছিল তাঁর জমিদারী।
বজরা ভিড়তো যে ঘাটে তা আজও বর্তমান,
বাড়ির মেয়ে বউরা করতো কি ঐ ঘাটেই স্নান ?
পূজোর সময় নানা আত্মীয় কুটুম্বে, কচিকাঁচাদের
হৈ চৈ এ বাড়িটা হয়ে উঠতো নাকি সরগরম।
যা ছিলো জমিদারীর সময়, এককালে প্রাসাদোপম।
সেই অট্টালিকাটি যেন আজ শুধুমাত্র এক খন্ডহর !
ওরা তো ছেড়ে গেছে বাড়িটা কে অনেকদিন,
যারা ছিলো ঐ চৌধুরী বাড়ির আসল বংশধর।
রাতের বেলায় শুরু হতো তখন ভুতের নাচন,
গ্রামবাসীরা ধারে ঘেঁষেনা রাতে, প্রশ্ন যে মরণ-বাঁচন।
হয়তো ওরা সন্ত্রাসবাদী, সমাজবিরোধী বা ছিঁচকে !
খুশী মতো জানালা দরজা খুলে নেয়, ঘাঁটায় কে?
স্মৃতির ধুলো জমে জমে ঢেকেছে সদর,
চুপি দিইনি নিচের কোনো ঘরে, খুলিনি কোনো দোর।
কোনো এক সিঁড়ি ধরে ছাদের উপরে উঠেছিলাম,
আহা নদীর বাঁকের দৃশ্য দেখে মন প্রাণ জুড়ালাম।
কি অপরূপ দৃশ্য, সে যে সত্যিই নয়নাভিরাম !
পছন্দের তারিফ করতেই হয় জমিদার মশাইয়ের,
বাড়ির জায়গাটা যেহেতু তিনিই করেছিলেন নির্বাচন।
কিছুটা সময় যেন সেই অতীতে পৌঁছে গেলাম,
যখন ঘোরাঘুরি করতো বাড়িতে নুপুরের আওয়াজ,
উৎসবে হয়তো বাজতো এখানেও পাখোয়াজ।
