#আমাদের চেনা ছবিগুলো#
#আমাদের চেনা ছবিগুলো#


চেনা ছবিগুলো বড়ো অচেনা লাগে আজ
পলস্তরা খসে পড়া রুগ্ন দেওয়ালে,
ধুলোমাখা ফ্রেমের অস্পষ্ট অস্তিত্ব
জানান দিচ্ছে, "যেতে পারি, তবু কেন যাবো?"
জানাশোনা কঙ্কালসার মানুষগুলোর মাঝে
নাহয় অপরিচিত হয়েই বেঁচে থাকবো!
মাছওয়ালাটা আজও মাছ নিয়ে বসে
তবে তার মুখচ্ছবিটা পিত্তি ফেটে যাওয়া
পেটির মতোই তেতো;
পেপারওয়ালার কাজ কমেছে
পেপার কাটিং আর রাখেনা লোকে
খবরের চাপ বিভ্রান্তি ছড়ায়
তাই স্মৃতির বাক্স খালি করা ছাড়া উপায় নেই।
শাকবুড়ি আজও শাক নিয়ে আসে বাজারে
তবে হাজার জলের ফোঁটাতেও তাজাভাব ফিরে আসে না।
আগাছাগুলোকে উপড়ে ফেলা হয় নি যে!
আঁখ আজও পিষছে হ্যাণ্ডেল মারা যন্ত্রে
কিন্তু পাতিলেবুর রস পানসেভাবকে ঢেকে দিতে পারে না।
বাসের কণ্ডাক্টার আর স্টপেজ এলে হাঁক পাড়ে না;
আস্তে লেডিস কোলে বাচ্চা বলতে মনে থাকে না তার!
রক্তাল্পতায় ভুগতে থাকা প্যাসেঞ্জার
তাই টাইট ফিট ফাটা জিন্সে অভ্যস্ত।
ঝিমুনির বদলে মোবাইলে চোখ এঁটেছেন অফিসের বড়বাবু
বেড়াতে যাবার ফিকির খোঁজেন শুধু
টুরিস্ট স্পটগুলো আর অদেখা নয় যদিও
ঝকঝকে ছবিগুলো কিন্তু নতুন মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।
দামী ওষুধের প্রেসক্রিপশন হাতে হাতে ঘোরে,
বেহাত হবার জো নেই।
কম্পাউণ্ডার মিক্সচার বানিয়ে দেবে না আর কম পয়সায়...
ভুগোলের বানিজ্য বৃদ্ধিতে সেসব এখন লুপ্তপ্রায় ইতিহাস।
ফ্লাইওভার আর তারের মায়াজালে বন্দী শহরটা সারাক্ষণ হাই তোলে
জোরালো বাতিস্তম্ভের আলো রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে যখন!
তবুও আমরা ছুটছি।
হাঁফ ধরে গেলে উল্লাসের ফোয়ারা তুলছি
দিগ্বিদিকশূন্য। এলোপাথাড়ি ছুটছি আর ছুটছি।
রেসের ঘোড়া; তাই থামতে মানা...
মাঝে যদিও বাম তর্জনীতে কালো কালি লাগাতে একবার বেজার মুখ করে দাঁড়াতে হয় লাইনে।
অ্যালবামের অনেক অচেনা ছবির মধ্যে চেনা ছবি ঐ একটাই;
রাষ্ট্রের হাতে শাসন যন্ত্র আর
রিমোটে হাত দিয়ে বসে থাকে উদ্যোগপত্নী
আমরা দলপ্রেমী রোবোট সুইচ টেপার অপেক্ষায় প্রতীক্ষমাণ ।
মুখ থুবড়ে পড়ার আগে পর্যন্ত্য
অতি পরিচিত তাবেদারিতে ব্যস্ত রাখবো নিজেদের
চেনা গলি, চেনা পাঁচমাথা, চেনা ভাগিরথী, চেনা ইডেনকে
অচেনা করে নতুন অ্যালবাম বানাবো স্বদক্ষতায়।
তবুও জলছবি কিংবা রামধনু হয়ে ধরা পড়বো না।
ফসিল হওয়ার প্রতিযোগিতায় নাম লেখাবো,
আর...একে অন্যের কাছে একপ্রকার জোর করেই
অচেনা হয়েই বেঁচে থাকবো।