আমার জীবনে রবীন্দ্রসঙ্গীত
আমার জীবনে রবীন্দ্রসঙ্গীত
আমি যখন ছোট ছিলাম,
গান শিখতে চেয়েছিলাম।
গানের দিদিমনি আসতেন,
রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাতেন,
“হে ক্ষনিকের অতিথি, এলে প্রভাতে...”
ছয় বছরের মেয়ে এ গানের মানে কি বুঝবে?
ছোট্ট ছোট্ট আঙ্গুলে হারমোনিয়ামের রীডগুলিই শুধু খুঁজবে।
ভড়কে গেল সে মেয়ে...আর গান শিখবে নাকো মোটে,
বাবা পড়লেন মহা চিন্তায়...
অল্প টাকায় ভাল দিদিমনি অত সহজে কি জোটে?!
রবিবার! বিকেল চারটে! টুং টাং...
পালঙ্কের তলায় সে মেয়ে সেঁধিয়ে গেল সটান।
একটু যখন বড় হলাম...
প্রথম ভালবাসাকে চোখে হারালাম...
মোর বীনা উঠল কোন সুরে বাজি,
গান শিখতে আবার হয়ে গেলাম রাজী।
জীবনের লড়াইয়ে যতবার হোঁচট খেয়েছি,
রবিঠাকুরের গানকেই একমাত্র সাথে পেয়েছি।
একদিন উঠল ঝড় পথের বাঁকে...
তবুও চলার শেষ নেই শেষ নেইযে...
প্রেম পর্যায় আর পুজো পর্যায়ের বিভাজন গেল মুছে
“চরণ ধরিতে দিও গো আমারে, ফেলো না সরায়ে”
হলো চিরসঙ্গী আ
মার।।
অর্ধেকটা জীবন কবে, কখন এলাম পেরিয়ে...
হার স্বীকার করিনি কখনো জীবন-যুদ্ধের পরাজয়ে।
আগুনের পরশমণি ছিল প্রাণে...
বসন্তের ছোঁয়া ছিল বর্ষার বাতাসে
আর আমার মুক্তি ছিল হাওয়ায় হাওয়ায়
ঘাসে ঘাসে, ঐ আকাশে...
তখন থেকেই লেখা’র শুরু...
রবীন্দ্রসঙ্গীত অন্যতম প্রেরণা,
নিজেকে নতুন রূপে খুঁজে পেলাম
অতীত বললো, ‘স্মৃতি হয়ে থাকলাম
ভুলনো মোরে ভুলনা...ভুলনা...।’
আজও নিশীথ রাতে, বিজন ঘরে
একলা বসে থাকি ভালবাসার অপেক্ষায়,
সে কি পদ্য, নাকি গদ্য, নাকি প্রেম
জানতে বাকী আছে, আছি তারই প্রতীক্ষায়...।।
জীবন এক নদী, আপন বেগে পাগল পারা
বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী, জানি,
প্রাণের পরে চলে যাবেই তারা।
সেদিনও রবীন্দ্রনাথের গান হৃদয়ে থাকবে...
যেদিন সবুজ ডালে নতুন মুকুল আবার আসবে...
যখন তোমার হবে শুরু আর আমার হবে সারা।
তোমায়-আমায় মিলে এমনিই বয়ে যাবে ধারা।।