আলো
আলো
অখিল আর নিখিল নামে শিবরামপুরে ছিল দুই ভাই,
পৃথিবী আর আকাশ, নামের মানে দুটো তো তাই।
কিছু কিছু মিল থাকলেও অমিল দিয়েও ভরা,
যদিও রক্তে তাদের বয় এক ই রকম ধারা।
দুজনেই ছোটোবেলায় তাদের পিতাকে হারালো।
জীবনের মাঝে তাদের তবু রইলো সূর্যের আলো!
মাতারানী যে তখন সংসারের হাল ধরলো।
নিখিল বড়ই ছটফটে আর কথা কয় ঝুরি ঝুরি,
অখিল দাদার সাথেই ঘোরে, কিন্তু থাকে চুপটি করি।
দুই জনেই একই রকম পড়তে ভালোবাসে,
কবে ওরা বড় হবে মা থাকেন আশে।
নিখিলকে তার মা রাজশাহীতে পড়তে পাঠালো,
এই ঘটনাই তো নিখিলের জীবনটাকে বদলে দিল।
বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা উথলে উঠলো,
বাবা তার কেন দেশছাড়া হয়েছিলো তা মনে পড়লো।
ধীরে ধীরে দুই জনেই এম. এ পাশ করলো,
নিখিল চাকরি নিয়ে তার বাবার জন্মভূমিতে চললো।
অখিলের তাতে কিন্তু বড়ই অভিমান হলো।
জীবনেও আর চাকরী করবেনা এটাই ঠিক করলো,
মাকে ছেড়ে কখনও কোথাও যাবেনা, তাই ভাবলো !
কেমন করে যেন দুই দেশেরই পরিস্থিতি পাল্টালো,
হঠাৎ করেই ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলো।
যুদ্ধ শেষে সে সময় স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরী হলো।
ভালো ছিলো নিখিল যতদিন স্কুলে ছাত্রদের পড়ালো,
রিটায়ার করার পরেই যত মুশকিল দেখা দিলো।
অবসর সময়টা যে তাঁর হঠাৎ বেড়ে গেল,
বাধ্য হয়েই আবার পড়াশোনার জগতে ঢুকতে হলো।
ওদিকে অখিল ব্যস্ত, নিয়ে তার শংকরী ভান্ডার,
মনের মতো পড়ার সময়, পায় না যে আর।
তবে মায়ের হাতের রান্না সে যে রোজ ই খেতে পায়,
দাদা তার যেন বইয়ের মাঝেই শান্তি খুঁজতে চায়।
