আব্রু
আব্রু
ছিলো গায়ে সালোয়ার আর ওড়না ঢাকা বুক।
সবটা ঢেকেও বলতো হলো কোনখানে ভুলচুক?
অন্ধকারে গলির মাঝে ঝাঁপসা আলোর রাতে
দৌড়েছিলাম, হোঁচট খেয়ে পারিনি সামলাতে।
এগিয়ে এলো ঘিরে আমায় জনপাঁচেক ওই ছায়া।
হাঃ ঈশ্বর! কি মায়া তোমার, ধন্য নারী কায়া।
শক্তি যদি না-ই দিলে, অস্ত্র দিতে পারতে;
বাঁচাই নিজেকে নিজেই - ওদের নাই বা পারি মারতে।
কালো কালো ওই হাতের মাঝে, করতাম যাকে পুজো
নষ্ট হল। সতীত্ব? আজ অন্য কোথাও খুঁজো।
মানছি নষ্ট ঘর আজ প্রাণের, নষ্ট আমি নই!
বলছি আমি, জানেও সবাই, শুনছে সমাজ কই?
আপন যদি না-ই নিল রত্নাকরের পাপ?
ওদের দোষের ভাগী আমি - কীসের অভিশাপ!
কলঙ্ক তো দোষের নয়, কলঙ্ক হয় যাতে
তারাই আবার ভদ্র সেজে ছদ্ম ওত পাতে।
শ্লীল যারা, পরন ঢাকা, গড়ন মায়ের মতো -
বলতে পারো তাদের সাথেও এমন কি না-হতো?
নোংরা কি ওই উলঙ্গকায় সদ্যজাত শিশু?
পশুর মতো খাবলে খেয়েও হয় না মাথা নিচু!
যৌবন আর বার্ধক্যের ফারাকটাকেও মুছে
বিকারগ্রস্ত আমোদক্রীড়া কিকরে যায় রুচে?
শাড়ির নিচে শরীর - সমাজ নিচ্ছে দৃষ্টিসুখ;
দেখ না ভেবে ওটাই দেবী মহামায়ার রূপ।
ভেবেই দেখো, নারী, তুমি শক্তি আদিমকালের -
দরকার নেই ত্রিশূল, ধনুক; দরকার নেই ঢালের।
ওঠ না জেগে আরেকটি বার তেজস্বিনীর রূপে।
প্রতিবাদের ভাষা শিখে থাকিস না নিশ্চুপে।
অস্ত্র হাতে এগিয়ে আয় রক্ত গায়ে মেখে।
উলঙ্গকায় নারীকেও বীরাঙ্গনায় দেখে
পুজো তাকে করে মানুষ "সভ্য" না-ও হ'লে -
বেআব্রু মা কালী-ও রাখে পুরুষ পায়ের তলে।।
