মেয়ে
মেয়ে
ইতিহাসে বোধহয় ছিলি - হাজার বছর পার;
নিজে তুই আর নিজের নো'স... ও মেয়ে তুই কার?
শাসন তোকে শোষণ করে ভুলিয়ে পরিচয়।
পিতা, স্বামী, ছেলের নামেই তোর নামটি হয়।
যার নামে আজ লিখে দিলি নিজের পদবী,
তোর জীবনের বদলে সে প্রাণ দিয়েছে কি?
দশ মাস ধরে আগলে ছিলি, কষ্ট পেয়েছিলি।
কেড়ে নিল তোর জঠর থেকে; তুই-ও ছেড়ে দিলি!
শর্ত ছাড়াই এমন করে দিয়েই দিলি সব!
স্তন কি সে দান করেছে? করেছে প্রসব?
সতী সীতা ত্যাগযুদ্ধে 'মধুর মিলন' পেত।
তাকে না ত্যাজিলে কি আর রাম পুরুষ হত?
প্রতি রাতে সতী হয়ে পতির সেবা করিস!
লাঞ্ছনা আর প্রহারটাকেই প্রাপ্য বলে ধরিস?
কৃষ্ণ যদি পুরুষ হয়ে শত সখী পায়,
দ্রৌপদীর ওই পাঁচটি বরে সত্যি কি পোষায়?
পুরুষ কেবল স্বামী নামেই মাথায় চড়ে থাকে।
মান-অপমান রক্ষা করার দায়িত্বটা রাখে?
চোঁখ ধাঁধানো রূপ, রূপসী - অপ্সরা যে তুই।
মেঘের কন্যা, আজকে তোর রাজপুত্তুর কই?
রূপকথারা বন্দী ছিল অজ্ঞান শৈশবে।
অচেনাতে মুক্তি পেলি, হিংস্র বাস্তবে।
উঠতে গেলে নামতে হবে - কেমনতর জাল?
নিজেই নিজের দেহরক্ষী, নিজেই নিজের কাল।
ষড়যন্ত্রের জাঁতাকলে পিছলে ঠিকই পড়বি।
শক্ত হয়ে মনের জোড়ে তবুও তুই লড়বি।
স্বাধীনতা দেবে না তোকে - নৈব নৈব চঃ;
অস্ত্রদাতা দেবতা ছাড়াই দেবী দুর্গা হ।
সারাবছর শরৎ মেখে মাতৃপক্ষে সাজ।
কীসের অত ভয় করিস? কীসের অত লাজ?
হাজার ঊমা রোজই আসে ভোরের আলো নিয়ে।
অসুর ব'ধে যাবেই তারা, আঁধার নিভিয়ে।