ওগো পরবাসী পথিক!
মন ভরানো একটা পথের গান শোনাবে কি?
আঁধারের বক্ষ চিরে ঝলসে ওঠে যেই বিজুলি,
সর্পিল অগ্নিশিখা সম নেচে ওঠে যেই সুর;
সেই প্রণয়সুরা আমাকেও পান করাবে কি?
উন্মুক্ত দুয়ার হতে নয়ন মেলি যখন,
হেরি দিগন্তবিস্তৃত এই আঁকাবাঁকা পথ।
চঞ্চলা চপলা এক হরিণীর মতো,
ছুটে চলেছে দূরে-দূরে....বহু দূরে;
নাম না জানা গোপন সেই স্বপ্নপুরে।
এই নীরব মরুদেশে, হে পরদেশী পান্থ!
গানের অনলে প্রাণের বহ্নি জ্বালাও না।
স্পন্দনহীন প্রান্তরে দাও আনি বাণীর আভাস,
শুষ্ক কঠিন ধরণীতে ঢালো অমৃতধারা;
সেই রসতরঙ্গে বুঝি তুমিও পথ ভুলবে কি?
আমিও তোমার গানের নেশায় হব মত্ত,
ভাসিয়ে দেব প্রাণমন তারই উত্তাল প্রবাহে;
যেথা নাই বিচ্ছেদ, নাই যেথা অভিমান,
নিয়ে যাবে অচিন সেই রূপকথার রাজ্যে?
আমাকেও তোমার চলার সাথী করে নেবে কি?
ছড়িয়ে দাও নবজীবনের কণিকা চতুর্দিকে,
চিরতরে ঘটাও অবসান এই নিষ্প্রাণ তমসার।
ওগো পরবাসী! জানি, তুমি ক্ষণিকের অতিথি,
আমিও যাব তোমার সনে, সুদূর সেই তপোবনে;
তোমার গীতি আমার হিয়ার তারেও বাজাবে কি?
**** সমাপ্ত ****