সহসা হৃদয়ে ছাপিয়া উঠিছে বাতাসের হাহাকার,
তব তপ্ত নিঃশ্বাসে থরথর কাঁপিছে সৃষ্টির জীর্ণ আধার।
দুষ্টের সংহারলীলায় মত্ত হও তুমি প্রভু, হে নটরাজ!
সকল মাধুরীর আড়ালে শোভিত হোক তব তাণ্ডবসাজ।
বাতাসে আজি গুনগুন করিছে চরম প্রলয়ের রুদ্রভেরী,
মহাবিনাশের গোধূলিবেলা আসিতে আর নাই যে দেরি।
গুরুগুরু ডমরুনাদে দিগন্তে ধ্বনিছে, পিতার গম্ভীর আহ্বান,
রত্নগর্ভা ধরণী নাই যে আর, আছে শুধুই ধ্বংসের মহাশ্মশান।
মুদিত ত্রিনয়ন খুলিল আজি, দহনে তাহার দহিল সকল তিমির,
কাটিল মনের ভ্রান্তি যত, ঘুচিল মরমের কলুষ নিবিড়।
প্রলয়নাচন সাঙ্গ এখন, শূলাঘাতে লাঘব ধরার পাপের ভার,
গলিত এই করুণাস্রোত তব নিত্য করিছে নবজীবনের সঞ্চার।
কুসুমে-কুসুমে ভরিলে ধরা, তারার মেলায় সাজালে নিশীথ গগন,
জ্যোৎস্নামাখা যামিনীতে চম্পার মাতাল গন্ধ, জাগায় সুপ্ত স্বপন।
সীমাহীন পথের যাত্রী মোরা, কালের কুটিল কবলে বেষ্টিত চিত্ত,
হে মহাকাল! উন্মাদ তালে করো মৃত্যুর বক্ষে, জাগরণের উত্তাল নৃত্য।
জ্যোতির্ময় তব মূরতির পদতলে দিয়ো এই অধমেরে ঠাঁই,
তব প্রেমসুধারসে হারা এই মনে আনন্দরাগিনী ধ্বনিছে সদাই।
তুমিই সমীরে দিলে জীবনের মহামন্ত্র, পাখির কণ্ঠে ভরিলে গান,
অখিল ভুবনের অধিপতি হে করুণাসিন্ধু! সব তোমারই মহাদান।