কান্তিময়
কান্তিময়
1 min
641
আহা! এ কী নির্মল সুন্দর আভা,
এ কী হৃদয়হরা কান্তি মোর কুসুমবনে?
কত বর্ণের ফুল ফুটিয়ে গেল বিধুর বসন্ত,
আমার ফুলের সাজি দিয়েছে ভরি;
নানা রঙের প্রজাপতির আনাগোনা হেথায়,
যেন রয়েছে তারা উন্মত্ত, ফুলের স্নিগ্ধ নেশায়।
গোপনে কয়ে চলেছে বার-বার....
মনের কোণে লুকানো না-বলা বারতা।
তাই তো আমি রয়েছি কান পাতি,
রুদ্ধ দ্বারে হানা দেয় তাদের গূঢ় সঙ্কেত।
সেই হাতছানিতে হয়তো নাই বা দিলেম সাড়া,
পূবালী বায় হৃদয়বীণায় ক্ষণে-ক্ষণে দেয় নাড়া;
পরাণ আমার দুর্নিবার, সকল বাঁধনছাড়া।
শান্তির এই নীড়ে বুঝি এমন সকাল,
আসেনি কখনও তো কভু আগে;
কোথা হতে ছুটিল এই সুগন্ধধারা?
এই সৌন্দর্য্য অভিনব হৃদিহারা?
তাই যৌবনময় এই মাধুরী হেরি,
বড় চমক লাগে অবাক দু'আঁখিতে।
যখন নবপ্রভাতের অলস নবারুণ....
রাঙিয়ে দেয় পূর্ব দিগন্ত রক্তিম রাগে,
তখন ভোরের বাতাস দোলে নৃত্যের তালে।
শুষ্ক পাতায় মর্মর ধ্বনি জাগিয়ে যায়,
বকুল গাছের ডালে-ডালে।
কত কিছু শিখিয়ে যায় প্রকৃতি অগোচরে,
ধরণীর এই শ্যামল আঁচল কত যে গান....
মধুর ছন্দে শুনিয়ে চলে অনুখন।
এতদিন এই লাবণ্য কেন পড়েনি চোখে ধরা,
কেই বা জানে সেই গোপন কথা?
বসুন্ধরা যেন নববধূ সম উৎসুক নয়ানে,
চকিতে চাহিয়া রয় আকাশের মুখপানে;
ভ্রমরের গুঞ্জনে শুধুই বাজে কানে,
জীবনের অক্লান্ত জয়গানের ছন্দ।
মনোহর এই শোভা যেন সদা বিরাজে,
জগতের বসন্ত-প্রাঙ্গণে নিশিদিন।
এমনই মধুর রূপে এই অখিল ভুবন,
আলোকিত রয় চিরকাল উজ্জ্বল প্লাবনে....
এই ভাবেই স্বর্গের প্রাণদায়িনী প্রকাশ,
ঘরেতে বন্দী মোর শ্রান্ত হিয়ারে বাহিরে আনে;
নিত্য আমায় পাগল করে, ঘর ছাড়ানো উন্মাদ তানে।
**** সমাপ্ত ****