Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Manab Mondal

Abstract Fantasy Inspirational

4  

Manab Mondal

Abstract Fantasy Inspirational

বাংলার মিষ্টি কেন সেরা??

বাংলার মিষ্টি কেন সেরা??

3 mins
384


মতিচূরের লাড্ডু‌ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন মিষ্টি যার বয়স প্রায় দুই হাজার বছরেরও বেশি।সন্দেশ-রসগোল্লার বয়স মাত্র দুই-আড়াই'শ বছরের মতো হবে। তবে মজার বিষয় বাঙালিরা ছানা তৈরি করতে শুরু করে প্রথম ভারতে। বাংলার পর্তুগিজদের কাছ থেকে বাঙালি ময়রারা ছানা ও পনির তৈরির কৌশল শেখে। ভাস্কো দা গামা কালিকট বন্দরে এসেছিলেন ১৪৯৮ সালে।এর কিছু দিন পর তার বাংলায় এসে উপনিবেশ স্থাপন করে।

প্রথম দিকে ছানা ও ছানার মিষ্টির তৈরি চলছিলো না  ধর্মীয় কারনে । বৈদিক যুগে দুধ ও দুধ থেকে তৈরি ঘি, দধি, মাখন ইত্যাদি ছিল দেবতাদের খাদ্য। বিশেষ করে ননি ও মাখন অত্যন্ত প্রিয় ছিল শ্রীকৃষ্ণের। এ জন্য দুধ থেকে রূপান্তরিত ওই সব খাদ্য শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হলেও ছানা তৈরি হয় দুধ বিকৃত করে, এ জন্য মনুর বিধানমতে, ছানা ছিল অখাদ্য। তাই ছানা মিষ্টির তৈরির কৌশল ভারতীয়রা শেখে অনেক পরে।

সুকুমার সেনের কলিকাতার কাহিনী বইয়ে লিখেছেন, "ক্ষীর-মাখন-ঘি-দই—এগুলো কাচা দুধের স্বাভাবিক পরিণাম, কৃত্রিম অথবা স্বাভাবিক। কিন্তু কোনোটিই দুধের বিকৃতি নয়। ‘ছানা’ কিন্তু ফোটানো দুধের কৃত্রিম বিকৃতি। বাঙালি অন্য দ্রব্য সংযোগ করে দুধ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে, যাতে সারবস্তু ও জলীয় অংশ পৃথক হয়ে যায়। এভাবে দুধ ছিন্নভিন্ন করা হয় বলেই এর নাম হয়েছিল বাংলায় ‘ছেনা’, এখন বলা হয় ‘ছানা’। সংস্কৃত ভাষায় ছানার কোনো রকম উল্লেখ নেই। অন্য ভাষাতেও ছিল না। আগে অজ্ঞাত ছিল বলেই শাস্ত্রসম্মত দেবপূজায় ছানা দেওয়ার বিধান নেই।"

তবে আগেও সন্দেশ তৈরি করা হতো চিনির বা মিষ্টি সাথে বেসন, নারকেল ও মুগের ডালের মিশিয়ে। শুধু চিনি দিয়ে তৈরি এক ধরনের চাকতিকেও অনেক সময় সন্দেশ বলা হতো এখন পূজা তে এগুলো ব্যবহার করা হয়। নীহাররঞ্জন রায়ের" বাঙালির ইতিহাস "বইয়ে বাঙালির মিষ্টিজাতীয় যে খাদ্যের বিবরণ দিয়েছেন, তাতে তাই ছানার কোনো মিষ্টির উল্লেখ নেই। দুধ থেকে তৈরি মিষ্টির বলতে দই, পায়েস ও ক্ষীরের কথা। সন্দেশের উল্লেখ আছে, তবে সেই সন্দেশ ছানার নয়। তিনি বলেছেন, ‘কোজাগর পূর্ণিমা রাত্রে আত্মীয়-বান্ধবদের চিপিটক বা চিঁড়া এবং নারিকেলের প্রস্তুত নানা প্রকারের সন্দেশ পরিতৃপ্ত করিতে হইত এবং সমস্ত রাত বিনিদ্র কাটিত পাশা খেলায়।’

যাইহোক চিনির সঙ্গে ছানার মিশিয়ে সন্দেশ ও রসগোল্লার তৈরি করে বাঙালি অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে। হুগলিতে যেহুতু পর্তুগিজরা প্রথম এসেছিলেন তাই এই আধুনিক সন্দেশ আবিষ্কর্তা হুগলির হালুইকররা। পরে কলকতায় তৈরি হয় , লেডি কেনি, রসগোল্লার মতো মিষ্টি। প্রথম দিকে সন্দেশের মিষ্টি কম থাকতো তাই এই ছানার সন্দেশকে বলা হতো ‘ফিকে সন্দেশ’ । শাস্ত্রসম্মত নয় বলে ছানার সন্দেশ অনেকে খেতে চাইত না। কলকাতার ময়রাদের সৃজনশীলতায় কড়াপাক, নরমপাক, কাঁচাগোল্লা, চন্দন সন্দেশসহ হাজার রকম সন্দেশের তৈরি করেছিলেন। এরা সন্দেশ বৈচিত্র্যময় করে তোলে গুড়ের ব্যবহারে। শীতকালের সন্দেশ আর গ্রীষ্মের সন্দেশে তো পার্থক্য আছেই,। পরে এরা ফলের ব্যবহার শুরু করে মিষ্টিতে‌।

গোপাল গোল্লা ছিলো রসগোল্লার আদি নাম । পরে চিনির রসে ডোবানো ছানার গোল্লাকে নাম হয় রসগোল্লা। আর রসগোল্লার সর্বশেষ নিরীক্ষাধর্মী সংস্করণ হলো স্পঞ্জ রসগোল্লা। ছানা ও চিনির রসায়নে নানা আকৃতি ও স্বাদে নানা নামে  বৈচিত্র্যময় হয়মিষ্টির সম্ভার । লেডিকেনি, চমচম, পানিতোয়া, কালোজাম, আমৃতি, রসমালাই—হরেক রকম। । লোকমুখে এর চলতি নাম লেডিকেনি আসলে। রসগোল্লার মতোই গোলাকার লাল রঙের লেডিকেনি নামে মিষ্টিটি তৈরি হয়েছিল ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল লর্ড ক্যানিংয়ের স্ত্রীর সম্মানে।  ছানার মিষ্টি বাংলায় জনপ্রিয় হলেও ভারতের অন্যত্র এখনো ছানার মিষ্টি তেমন তৈরি হয় নাবএখনো লাড্ডু মিষ্টি প্যাড়া, মেওয়ার শুকনো মিষ্টি ।

বাংলাতে আসলে তিন ধরনের মিষ্টি পাওয়া যায়।

সুকুমার সেন বাংলার মিষ্টিকে দু'ভাগে ভাগ করেছেন ।

একক উপাদানে তৈরি মিষ্টি। এ ধরণের মিষ্টিতে গুড় বা চিনির সাথে আর কিছু মিশ্রিত থাকে না। যেমনঃ গুড় বা চিনির নাড়ু ও চাকতি, পাটালি, বাতাসা, খাজা, ছাঁচ ইত্যাদি।

দ্বিতীয় ধরণের মিষ্টিকে আরো দু' রকমে ভাগ করেছেন ।

গুড় বা চিনির সাথে দুগ্ধজাত উপকরণ ( ছানা , ক্ষীর) ছাড়া অন্য দ্রব্য সহযোগে তৈরিকৃত মিষ্টান্ন। যেমনঃ নারকেল, তিল এসবের নাড়ু, চিঁড়া, মুড়ি, খৈ-এর মোয়া ইত্যাদি।

দুগ্ধজাত দ্রব্যযোগে মিষ্টি । মানে চিনির বা গুঁড়ের সাথে ছানার মিশিয়ে তৈরি হয় সন্দেশ ও মন্ডা। আবার এই ছানা রসে মাখিয়ে তৈরি হয় রসগোল্লা, দুধে ডোবালে রসমালাই। বেসনের ছোট ছোট দানা ঘিয়ে ভেজে তৈরি হয় বুন্দিয়া, যা দেখতে ছোট বিন্দুর মতো। কড়া পাকে প্রস্তুতকৃত বুন্দিয়াই মতিচুর, লাড্ডুর কাঁচামাল। দুগ্ধজাত নানান ধরণের মিষ্টি রসিক ও মিষ্টিপ্রিয় বাঙালির কাছে প্রিয় এবং জগৎ বিখ্যাত।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract