শুভ মহালয়ায় বলা হয় না কেন??
শুভ মহালয়ায় বলা হয় না কেন??
প্র: *মহালয়া কে কেন "শুভ* মহালয়া " *বলা হয় না* ??? *মহিষাসুর মর্দিনী* *আর মহালয়া----- কি এক* *???**
এর জন্য আমাদের মহাভারতের পাতা উল্টাতে হবে।মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোকে গমন করলেন । তখন সেখানে তাঁকে খাদ্য হিসেবে সোনা ও রত্ন দেওয়া হয়েছিলো। কর্ণ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারা জীবন স্বর্ণ ও রত্ন দান করেছেন অনেক, কিন্তু প্রয়াত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। তবে একথা শুনে বিমর্ষ কর্ণ বলেন, তাঁর পিতৃপুরুষ কারা সেটা তো তিনি মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই জানতে পেরেছেন। তার দোষ কোথায়! যমরাজ তখন বোঝেন, সত্যিই তো, এতে কর্ণের কোনো দোষ নেই। এই কারণে কর্ণকে পক্ষকালের জন্য ফের মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়! এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। আর সেই থেকেই হিন্দুদের মধ্যে তর্পণের প্রথা চালু হয়।
যেহেতু পিতৃপক্ষে প্রেতকর্ম (শ্রাদ্ধ), তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু-সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়, সেই হেতু এই পক্ষ শুভকার্য করা হয় না। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা সাধারণত ভাদ্রপূর্ণিমা তিথিকে এই পক্ষ সুচনা এবং সমাপ্ত অমাবস্যা কে ধরা হয়। একে মহালয়া অমাবস্যা বা মহালয়া দিবসে। উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ ধরা হয়।
এদিনই আবার দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রয় । দেবী দুর্গাই হলেন, আমাদের মহান আলয়।সেইদিক থেকে মহালয়া শুভ কারণ দুর্গাপুজো বয়ে আনে আনন্দ, আশার, শুভ বার্তা।হিন্দু ধর্মের যে কোনও শুভ কাজেই পিতৃপুরুষদের স্মরণ করে থাকে তাই মহালয়াকে শুভ বলা যেতে পারে। ‘মহালয়া’ শব্দটিকে স্ত্রীলিঙ্গবাচক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয় কারণ এই দিনেই পিতৃপক্ষের অবসান হয় এবং অমাবস্যার অন্ধকার দূর হয়ে আলোকময় দেবীপক্ষের শুভারম্ভ হয়।লােক বিশ্বাস-— কৈলাস থেকে দেবী দুর্গা মহালয়া দিন বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
আবার সমুদ্র মন্থনের গল্পটি দেখলে দেখা যাবে। মােহিনী তথা বিষ্ণুর ছলনায় দেবতারা অমৃত পান করে অমর, অসুররা অমৃত বঞ্চিত হয়ে মরণশীল হয়ে যান।এই সময় দেবী মােহিনী হন দেবতাদের আশ্রয়স্থল অর্থাৎ মহৎ আলয়। দেবী মােহিনীকে দেবতারা মহালয়া তিথিতে আরাধনা করেছিলেন। দেবী মোহিনী মহালয়া নামে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।
,,,,,,,