Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Manab Mondal

Abstract Romance Inspirational

3  

Manab Mondal

Abstract Romance Inspirational

মধ্যবিত্তের দূগ্গা পূজা

মধ্যবিত্তের দূগ্গা পূজা

4 mins
239


আমাদের পত্রিকাটা নতুন। লোকবল কম। শারদীয়া সংখ্যাটা বের করতে দেরি হয় গেলো। পূজার আগে মার্কেটিং জন্য মাত্র কুড়িদিন পেলাম। নতুন চাকরি তাই প্রচন্ড চাপ। আজকাল চাকুরীর বাজার খারাপ। নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয় সব সময়। আগের সম্পাদক যদিও মহালয়ার দিন শারদীয়া সংখ্যাটা বার করছিলো। তবু কোন অভিযোগ করতে পারেনি মালিক কারণ কোন মন্ত্রীর শালা ছিলেন উনি। এখনো উনিই সম্পাদক আছেন এখনো নামে। কাজটা করতে হয় আমাকে। মালিক পত্রিকা দেখে খুশি হলেও আমার সামনে তা প্রকাশ না করে বলেন। দিপাবলী সংখ্যা লক্ষী পূজার মধ্যে প্রেস যাওয়া চাই বলে ফরমান জারি করলেন। তাই ঝুঁকি নিতে পারিনি। কাজ করেছি দিন রাত।

ফলে পূজা মার্কেটিং সব কিছু নীলাঞ্জনা একাই করেছে। তাই ও মেজাজটা ভালো নেই আগে থেকেই। আসলে এই সপ্তাহ দুয়েক নীলাঞ্জনার সাথে কথা বলতেও সুযোগ পাই নি। আজ রাতে যখন একটু কথা বলতে চেষ্টা করলাম । তখন দেখলাম ও আমাকে ছাড়া মোটামুটি ভাবে একটা পূজা ঘোরাঘুরি প্লান করে নিয়েছে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে। বেশ মুখ ঝামটা দিয়ে বললো" বিয়ের প্রথম বছর যে মানুষটা পার্টির বই স্টলে বসে থাকে তার জন্য নিশ্চয়ই আমি তার আশায় বসে থেকে পূজার ঘোরাঘুরি ভেস্তে দেবো না।"

বিয়ে আমাদের বছর দুয়েক হলো হয়েছে। প্রেম করেই বিয়ে হয়েছিল আমাদের। ভালো বাসা পরিমাণ চিরদিন এক থাকে না সেটা সবাই জানে। কিন্তু আজ সম্পর্কটা একটু তিক্ত হয়ে যাচ্ছে। সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যাচ্ছে সামাজিক অর্থনৈতিক কারণে। ও একটা চাকরি জোগাড় করছে। ভোরে উঠে যেতে হয়। আর আমি হেলেদুলে আফিস পৌছাই দুপুরের পর। কিন্তু সংসারের কুটিটাও নাড়ি না। মা দূর্গার মতো অফিস ঘর ও সামলায়। তাই মেজাজটা ওর দূর্গার মতোই একটু কড়া হয়ে গেছে। বেশ খিট খিটে হয়ে গেছে। তবে বাবা মা সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।

আজকাল দাম্পত্য জীবনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে সেটা আমি খুব স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। তবে আমি ওকে কখনো দোষ দিতে পারি না। তাই বলে আমি ও অপরাধী না।ও অনেক সকালে অফিসে যায় রান্নাবান্না করতে হয়। তাই তারাতারি শুয়ে পরে ও। সংবাদ পত্রের অফিসে কাজ আমার।আমার কাজ শেষ হয় মাঝে রাতে। বাড়ি ফিরে শুতে শুতে ভোর রাত্রি। তারপর তৃতীয় ব্যাক্তিদের গুঞ্জন তো রয়েছেই। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দুই জনেই এখন দুজনকে সন্দেহ দৃষ্টিতে দেখি। এ কথায় সম্পর্কটা একটা কাঁচা সুতো বন্ধনে বেঁধে আছে।

এক সাথে অনেক দিন পর শুয়েলাম। অথচ মাঝখানে পাশবালিশ হিমালয়ের পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে আছে। সাহস করে ওটা সরিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরবো ভাবলাম একবার কিন্তু কি মনে হলো নিজেকে আটকে রাখলাম। একটু মোবাইল ঘাটে মনটা শান্ত করতে চাইলাম। তারপর মোবাইল অফ করে শুয়ে পড়লাম। ভীষন ক্লান্ত তাই ঘুমোতে চাইছিলাম আসলে। কাল থেকে পূজা এ কয়েকটি দিন ছুটি আমার। ভাবলাম অনেক বেলা অবধি ঘুমাবো। কিন্তু কি জ্বালা চোখটা বুঝতে যাবো তখন চিকিৎসা করলো ল্যান্ড ফোন।

অনুমানটি ঠিক।অনুপ্রিয়ার ফোন। ওর ভাই বাইক accident করেছে। হাসপাতালে ছুটে হলো আমাকে। নীলকে কিছু বললাম না। কারণ ওতো এখন নিজের একটা জগত তৈরি করে ফেলেছে। আমার জীবনের সব খোজ খবর না দিলেও চলবে।

অনেক রক্তের প্রয়োজন। আমাদের রক্ত জোগাড় করতে কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু এ মুহূর্তে সমস্যা রেয়ার গ্রুপের রক্তের। আমার চেনা মানুষটাকে ফোন করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। কিন্তু আমি ফোন করতে দ্বিধা বোধ করলাম ।

কিন্তু ঘটনায় একটা নাটকীয় মোড় এসে গেলো। দেখি নীলাঞ্জনা হাজির হয়ে গেছে সশরীরে হাসপাতালে। ও কোন কথা না বাড়িয়ে রক্ত দিতে চলে গেলো।অনুপ্রিয়ার কাছে শুনলাম এতো রাতে কোথায় বেড়িয়েছি সেটা জানতে ও ফোন করেছিলো। তারপর সব শুনে সেচ্ছায় রক্ত দিতে এসেছে।

যাইহোক ভালোয় ভালোয় সব কিছু মিটে গেলো। ভোর রাতে আমরা হাসপাতাল থেকে বেড়ালাম। শরৎ ছাতিম গন্ধ মনটা রোমান্টিক করে তুলো। ইচ্ছে করছিলো ওকে বলতে চলো কোথাও ঘুরে আসি। কিন্তু আগ বাড়িয়ে সব কিছু কিনে দিতে গিয়ে আমার পকেট ফাঁকা। তাই আমি কোন আরাষ্ঠা না রেখে বললাম " তুমি একটা online ট্যাক্সি book করে চলে যাও আমি আসছি।"

ও বললো " হেঁটে যাবে নাকি বাড়ি। তোমার কাছে এসেছি আমি আমার ভাড়ায় যাবো কেন?"

আমি একটু দৃঢ় ভাবে চাপা গলায় বললাম" দেখলে তোমার থাকে একশো টাকা ধার নিয়ে আমি ওষুধ বিল মেটালাম। তারপর কিভাবে এ কথা বলছো। নিজের পয়সায় যাও আমি সব টাকা মিটিয়ে দেবো।"

ও কাছে এসে আমাকে ছোট দুইটো ঘুসি মেরে বললো " একা যেতে চাইছো যে রাস্তায় কোন বান্ধবী অপেক্ষায় আছে নাকি। যে আমার সাথে যেতে অসুবিধা হবে? চলো একটু পথ হেঁটে যাই। পথে নানুবাবুর বাজারের আর ওয়ালেস এর ঠাকুরটাও দেখে নেবো।"

প্রতিবাদ করতে পারলাম না। জীবনটা যেনো শরৎএর আকাশ কখনো মেঘ কখনো রোদ্দুর। অনেক দিন পর একসাথে পথ হাঁটতে বেস ভালোই লাগলো। হিসাবি বৌ পয়সা বাঁচতে এতোটা পথ হাঁটতে আসছে। তাই কটা শিউলি ফুল কুড়িয়ে উপহার দিলাম ওকে। এমনি বলে "বিনে পয়সায় সোহাগ দেখাতে হবে না। "

আমি বললাম " পয়সা নেই এখন চুরি করে তাহলে ফুল দিতে হয়।"

ও বললো " তা মন্দ নয়। আমি জানি না আমার এখন গোলাপ ফুল চাই"

মজা করে বললাম "কাঠ গোলাপ হলে চলবে.. "

ও হাসলো । আমি পাঁচিলে উঠে কটা কাঠ গোলাপ পেড়ে ওর মাথায়। গুজতে যাবো তখনই একটা কাঁপা কাঁপা বৃদ্ধার গলা পেলাম। " দেখতো গোপাল কে ফুল চুরি করছে।"

গোপালের ভয়ে, আমরা প্রান পনে ছুট দিলাম। শরৎ সকাল মানে একটা উৎসবের আমেজ। কিন্তু উৎসবের দিন বলে ফুল চোরের অপবাদ মার খাবো অতো মহান প্রেমিক আমি না। পরে আবিষ্কার করলাম আমার বৌ দুষ্টুমি করে ঐ বৃদ্ধার গলার আওয়াজটা বের করেছিলো।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract