Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer
Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer

AYAN DEY

Classics Crime Fantasy

4.2  

AYAN DEY

Classics Crime Fantasy

করোনায় কেলেঙ্কারি

করোনায় কেলেঙ্কারি

4 mins
342


" মহাই , আমাদের প্লাজমা ইনজেক্টের একটা ফর্ম ভরে এলুম । "

" দাঁড়ান , দাঁড়ান । একটু খুলে বলুন । "

" ফেলুবাবু আজকাল করোনার জন্যে সুস্থ মানুষের প্লাজমা দিচ্ছে যাতে করোনা না ধরে । আমার এক বন্ধু হাসপাতালে যুক্ত ,বললে এই সময়ে আমারটা করিয়ে নিতে । তাই রিকোয়েস্ট করলুম আরও দুজনের । "

" মিস্টার জটায়ু মুখের মাস্ক সরাতে এত্ত শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেবেন না । প্লাজমা ইনজেক্ট এখনও বৈধ করোনা চিকিৎসা পদ্ধতি নয় । দিল্লীতে পরীক্ষামূলক ভাবে বিষয়টা দেখা হয়েছিলো কিন্তু সেটা মান্যতা পায়নি । অতএব , কোলকাতায় যে হাসপাতালে এই কাজ হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে । প্লাজমা ইনজেক্টের সাইড এফেক্টও দেখা গেছে । অতএব এ ঘোর অপরাধ । দিন ফোন নম্বরটা দিন , হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করতেই হচ্ছে । "

" এ এই যো ওই বন্ধুটার ভিজিটিং কার্ড । ওতে নামটা পাবেন হাসপাতালের । "

" তোপসে এখনই তুই এই হাসপাতালের নম্বর বের করে ফোন কর । আমি সটান আধিকারিকের সাথে কথা বলতে চাই । "

" হ্যাঁ ফেলুদা । "

" নমস্কার আমি প্রদোষ মিত্র , এটা কি নাইটকেয়ার ? "

" হ্যাঁ হ্যাঁ নমস্কার স্যার । আমি প্রধান আধিকারিক অমিয় দেবনাথ । "

" আমি একেবারে পয়েন্টে আসি । আপনাদের করোনা প্রোটেক্ট ক্যাম্পেইনে প্লাজমা ইনজেক্ট শুরু করেছেন শুনলাম , এটা কি গভর্নমেন্ট অনুমোদিত ? "

" ইয়ে মানে না আরকি ... "

" দেখুন আপনি যদি ভেবে থাকুন লুকিয়ে প্লাজমা প্রয়োগ করে জনতার লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রাণের জুয়া খেলবেন তবে হাজতবাসের জন্য তৈরী থাকুন । "

" না মানে এটা খানিক আমাদের আপত্তি সত্ত্বেও করতে বাধ্য করেছেন মগনলাল বাবু । "

" মগনলাল মানে মগনলাল মেঘরাজ ? "

" হ্যাঁ । উনি শুরু করেছেন সম্প্রতি এই প্লাজমা বিজনেস । "

" এই মুহূর্তে বন্ধ করুন এই প্রয়োগ । কোনোভাবে প্লাজমা এক্সট্র্যাকশন করতে সম্মত হবেন না । আর এইমুহূর্তে আমায় বাকি হাসপাতালের লিস্ট দেবেন যেখানে এই কাজ হচ্ছে । "

" আজ্ঞে । "

খট শব্দে ফোন কেটে গেলো । খাওয়া শেষে ওই হাসপাতালের দেওয়া অন্যান্য হাসপাতালের লিস্টে চোখ বুলিয়ে ফোন করার কথা ভাবছে এমন সময় ফোন ।

" মিস্টার মিত্তর , হাউ ডু ইউ ডু ? "

" আমি তো আপাতত গৃহবন্দী , কেস নেই বললেই চলে । আপনি তো রোজগারের নতুন ফিকির ধরেছেন । "

" তো আমি তো কছু খারাব করিনি ইসবার । বিজনেস ইন মাই ব্লাড , তো কী করবে বলুন ? "

" কিন্তু এই ধারণা যে আপনার ভুল , এবারেও মহাভুল করছেন । বহু লোকের জীবন সংশয় হতে পারে । ইতিমধ্যে এই কাজ বন্ধ করুন । "

" হামি আপনার পারমিশন চাইনি মিস্টার মিত্তর । খবরদার , হামার পথে বাধা হবেন না । ইবারে কছু পরোয়া করবে না , নো দোস্তি , নো রিলেশন । শো বেটার , আপনি সরে যান । "

" আচ্ছা দেখা যাক , এই কঠিন সময়ে আপনার শয়তানি জেতে না আমার গোয়েন্দাগিরি । "

এরপরই ফোন রেখে দিলো ফেলুদা ।

" আমি এখন চলি , ফেলুবাবু । "

" কোথায় চললেন প্লাজমা নিতে ? "

" না না , এই জিভ কাটলুম , নাক কান মুললুম , এইসব ছুটকো কিছুতে বিশ্বাস করার আগে যাচাই করবো । আমি বাড়ি গিয়ে একটু জিরিয়ে আসি , সন্ধ্যেবেলা জানবো বাকি হাসপাতালগুলো কী বললো ? "

"আচ্ছা আসুন । "

" আসুন আঙ্কিল , আপনার জন্যে কিতক্ষণ বসে আছি । "

" আ-আ আপনি এ-এ-এ এখানে কেন ? "

" করোনা যে আপনাকে ভি কাবু করেছিলো সে হামি জানি । ইখন আপনি সুস্থ , তাই আপনার প্লাজমা চাই । "

" আপনি কিন্তু বেআইনি কাজ করছেন মশাই ফের । আবার ধরবে আপনাকে ফেলুবাবু । আপনি শান্ত হয়ে বুঝু... " কথা শেষ হলো না চেতনা হারালেন লালমোহন বাবু ।

" ফেলুদা ফেলুদা ... "

" কী হলো তোপসে ? "

" লালমোহন বাবু কিডন্যাপড । ওঁর নতুন চাকর খবর দিয়ে গেলো । সাঁকরেদ নিয়ে এসেছিলো , ওকে বাধা দিতে গেলে জোর কিল কষিয়েছে । "

ফেলুদা কিছু বলতে যাবে এমন সময় ফের ফোন । " মিস্টার মিত্তর , কী ঠিক করলেন ? "

" আপনার আস্পর্ধা ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি । "

" আরও অবাক হুবেন । আঙ্কিলের শরীর সে পুরা ব্লাড লিয়ে বেচে দিবো ... ওর থেকে বহুৎ প্লাজমা মিলবে ... বহুৎ ফায়দা । কী ভাবলেন আমায় আধঘন্টার মধ্যে ফোন করুন । " ফোন কেটে গেলো ।

" তোপসে তুই শুনেছিস মগনলাল যখন কথা বলছিলো ওর পিছনে লালমোহনবাবুর গলা ? "

" হ্যাঁ শুনেছি । "

" কী বুঝলি ? "

" ময় ময় বলে শুনছিলাম । মুখ বোধহয় বাঁধা । "

" ময় মানে ময়দান , কারণ পাশে খেলাধুলার হাঙ্গাম শুনতে পাচ্ছি । মোহনবাগান ক্লাবে মগনলালের নিজের কোনো ভাই আছে না ? "

" হ্যাঁ তা শুনেছিলাম বটে । "

" চ তোপসে । আগে বিনয় গুপ্ত , লালবাজারের ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রধানকে ফোন করে আসতে বলে দে ওই স্থানে । "

যেই কথা সেই কাজ । আর ঠিক ময়দানের মোহনবাগানের ক্লাবের অফিসে দেখা মিললো দুজনের । 

" আপনি ইধর কীকরে... ? "

" শুধু ঘুঘুই দেখেছো মগনবাবু , ফাঁদ তো দেখোনি । " বলে পিস্তল নিয়ে উঁচিয়ে এগিয়ে এলো ফেলুদা । ততক্ষণে ক্রাইম ব্রাঞ্চ ফোর্স নিয়ে উপস্থিত । আরও একবার হাজতে মগনলাল ।

একটা তক্তায় লালমোহনবাবুকে হাত পা বেঁধে রাখা । খুলতে যাবে কি ফেলুদার ঘাড়ে মগনলালের লোকের আক্রমণ । সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের গুলি দুষ্কৃতীর হাতে ।

" হামি আপনাকে দেখে লিবে মিত্তর । "

" এতবার তো দেখলেন , সখ মেটেনি ! "

ওদিকে হাঁফাতে হাঁফাতে উঠে লালমোহন বাবু বললেন , " কি কেলেঙ্কারিয়াস ব্যাপার ? বুঝলেন কী করে এখানে আছি ? "

" সে যেতে যেতে বলছি চলুন । এখন ভাবুন করোনায় কেলেঙ্কারির বাকি অংশে আজকের ঘটনাটা কীভাবে ঢোকাবেন । "


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics