প্যাস্কাল
প্যাস্কাল
জগতের তাবড় বিজ্ঞানীরা একদিন ঠিক করলেন
বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা তো অনেক হল ; এবার এমন একটা ব্যাপার নিয়ে গবেষণা করি যা ইতিপূর্বে কোন বিজ্ঞানী কোনদিন করেননি ।
তেমন কোন ব্যাপার খুঁজে না পেয়ে বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বললেন - তোমরা কি করবে নিজেরা ঠিক করে নাও । আমি আমার ব্যাপারটা বুঝে নিয়েছি ।
বয়সে অতি নবীন স্টিফেন হকিন্স প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেলেন । বললেন - স্যার আমি তো খুবই ছোট। যদি বলে দেন কি ধরণের বিষয় তো চেষ্টা করতে পারি ।
আইনস্টাইন মানুষ হিসেবে বেশ মজার ছিলেন। ছোট্ট হকিন্সের গালে আলতো চাপ দিয়ে বললেন - আজ আমি প্ল্যাঞ্চেট করব ।
স্টিফেন হকিন্স খুব মজা পেলেন । বললেন - আমি তা'হলে স্যার আপনার সেই প্ল্যাঞ্চেটের সাক্ষী থাকব ।
আইনস্টাইন বললেনৎ- বেশ তো! বস এখানে । জান তো আমি এই প্ল্যাঞ্চেটের ধারণা পেয়েছি আমার এক ইণ্ডিয়ান বন্ধুর নিকট । তিনি যোগসাধনার দ্বারা অনেক সুপারনেচারাল বস্তুকে পৃথিবীতে নামিয়ে আনতেন ।
বিস্মিত বালক হকিন্স প্রশ্ন করলেন - তিনি কি কি অদ্ভুত বস্তু এনেছিলেন ?
আইনস্টাইন বললেন - শুধু বস্তু নয়; তিনি অনেকের আত্মা ; যা তোমরা Soul বলে জানো; তেমনই অনেক আত্মাকে জ্যান্ত ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন ।
হকিন্সের আনন্দ আর ধরে না । চোখের সামনে আত্মাকে দেখতে পাবেন - কি দারুন ব্যাপার !
জিজ্ঞাসা করলেন - স্যার, আপনি কার আত্মাকে পৃথিবীতে নামিমে আনবেন ?
আইনস্টাইন মুচকি হেসে বললেন - স্যার আইজাক নিউটনকে । আমার মনে হয় বহু পূর্বেই তিনি গত হলেও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির জনক নিশ্চয়ই রিলেটিভিটির তত্ত্ব ভুলে যাননি । নাও, এবার চুপটি করে বস তো বাবু। আমাকে এখন আর কোন প্রশ্ন কর না ।
এই কথা বলে আইনস্টাইন ধ্যানে বসলেন । মিনিট, ঘন্টা ছাড়িয়ে বিকেল গড়িয়ে গেল । তিনি চোখ বুজে আছেন তো আছেনই, কিছুতেই চোখ খুলছেন না । সন্ধ্যা হল, ক্রমে রাত ।
আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ এল। ঘনঘন বাজ-বিজলীতে শিশু হকিন্সের তো প্রাণ যায় যায় দশা । এমন সময় কোথাও কড়কড় রবে একটা বাজ পড়ল । বালক হকিন্স দেখলেন বাড়ির পিছনে তালগাছটা দাউদাউ করে জ্বলছে। তারই আলোয় স্পষ্ট দেখতে পেলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন আইনস্টাইনের মাথায় হাত রেখে বলছেন - হে প্রথিতযশা বৈজ্ঞানিক অকস্মাৎ আমার খোঁজ করলে কেন ?
আইনস্টাইন ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালেন । খুশিতে তাঁর মন প্রাণ ভরে গেল । তিনি বলে উঠলেন - স্যার আইজ্যাক নিউটন !
আগন্তুক হো হো করে হেসে উঠলেন ।
- তোমার কোথাও একটা ভুল হচ্ছে , আইনস্টাইন । আর আমি অবাক হচ্ছি তুমি এত ভুলোমনা কেন ?
আইনস্টাইন চোখের সামনে নিউটনকে দেখছেন । কারণ তিনি নিউটনকেই ডেকেছেন, অন্য কাউকে নয়। তার সাক্ষী এই বালক ।
বললেন - আমার কোন ভুল হচ্ছে না স্যার । আপনি সেই জগতবিখ্যাত স্বনামধন্য বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন যিনি আপেল ফল নীচে কেন পড়ল ----
নিউটন তখনও বলছেন - সত্যিই তুমি ভুল করছ আইনস্টাইন । আমি নিউটন নই, আমি প্যাস্কাল ।
হা হা হা করে হেসে উঠলেন স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন।
- স্যার আপনি এখন প্রেতাত্মা হলেও নিউটনই। আপনিই তাহলে প্রমাণ করে দিন আপনি নিউটন নন; প্যাস্কাল ।
ধীর শান্ত গলায় স্যার আইজ্যাক নিউটন আইনস্টাইনকে বললেন - ভালো করে লক্ষ্য কর বিজ্ঞানী, আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার ক্ষেত্রফল মাত্র এক বর্গমিটার। আর আমরা জানি যে এক বর্ইমিটার ক্ষেত্রের উপর এক নিউটন বল প্রয়োগ করলে যে চাপ বা প্রেসার তৈরী হয় , তা হল এক প্যাস্কাল । অর্থাৎ এখন আমি নিউটন নই ; আমি হলাম গিয়ে প্যাস্কাল ।
আইনস্টাইন বাকরুদ্ধ। হকিন্স অজ্ঞান । নিউটন কিন্তু নিউটনই ।
*********************************************************
