টিকিট মার
টিকিট মার


বাসে গোটা একটা পরিবার সদলবলে উঠেছে । খুব সম্ভবত বাড়ির দুই জামাই আর শশুর বাড়ির বাকি লোকজন ।
হইহট্টগোল হবে সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার ।
আসল ঘটনা ঘটলো যখন বাসের কন্ডাক্টর ভাড়া চাইতে এলো ।
ভাড়া চাওয়া হয়েছে ছোট জামাইয়ের কাছে ।
পেছন থেকে বড় জামাই উঠে এসেছেন একটা কিছু গুরুতর অন্যায় হতে চলেছে সেই ভঙ্গিতে ।
বড়ো জামাই থাকতে ছোট জামাই বাসের ভাড়া কেনো দিতে যাবে।
ওদিকে ছোট জামাইও নাছোড় বান্দা .... সেও ভাড়া দিয়েই ছাড়বে । এক হুলুস্থুল কান্ড।
কন্ডাক্টর বিরক্ত হয়ে বললেন অতো ঝামেলার কি আছে , দুজনের একজন দিলেই তো হলো ।আর নয়তো হাফ হাফ করে দিয়ে দিন ।
ব্যাস তাহলেই সব মিটে যায়।
কন্ডাক্টরের কথা আর কে কানে তোলে ... ততক্ষনে দুই জামাইয়ের ঝগড়া বাসের ভাড়া ফেলে পার্সোনাল ইস্যুতে ঢুকে পড়েছে ।
ছোট জামাইয়ের টাকার গরম তাই সবকিছুতে বড়ো জামাইকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা। ছোট জামাইয়ের সব টাকা নাকি লোক ঠকানো চুরি করা টাকা পয়সা । এসব নানা কথা উঠে আসে বড়ো জামাইয়ের মুখ থেকে।
এসব শুনে ছোট জামাই শুরু করলেন বড়ো জামাইয়ের কেচ্ছা কেলেঙ্কারির কথা , মানে ওই অবিবাহিত তৃতীয় শালির সাথে তার একে একে দেড় করার গল্প। এসব আরকি ।
সব মিলিয়ে একে অপরের গামছা ধরে টানাটানি চলছে ।
কথা কাটাকাটিতেই ইতি হলো না । এবার ছোট জামাই সপাটে কষিয়ে চর বসালেন বড়ো জামাইয়ের গালে ।
বড় জামাই নিজেকে একটু সামলে ভুঁড়ি নাচিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন যুদ্ধে ।
ওদিকে বাড়ির বাকি সদস্যরা চিৎকার চেঁচামেচি করে পুরো বাসের মহল আরও সরগরম করে তুলেছে।
কিন্তু বাসের কেউ তাদের মারামারি ছাড়াতে এগিয়ে এলেন না।
শেষ মেস কন্ডাক্টর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ওনাদের পুরো ফ্যামিলিকে বাস থেকে নামিয়ে দিলেন ।
ভাড়ার কথা তুলতেও সাহস করেননি কন্ডাক্টর ।
বাস থেকে নামার পর দেখা গেলো অন্য দৃশ্য , দুই জামাই গলায় গলায় ভাই হয়ে গিয়েছে , গোটা পরিবার একেবারে হতচকিত হয়ে একে অপরকে দেখছে।
এতক্ষনে ঘটনার অবাকনেস বাসের সকল যাত্রীকে নাড়িয়ে দিলো।
ওদিকে কন্ডাক্টর চার সেন্টিমিটার ব্যাসের বৃত্তাকার হা নিয়ে বাইরে তাকিয়ে রয়েছে।