Aparna Chaudhuri

Thriller

3  

Aparna Chaudhuri

Thriller

তিন্নি (পর্ব ১০)

তিন্নি (পর্ব ১০)

3 mins
234



ইন্সপেক্টর প্যাকেট গুলো খুলে পরীক্ষা করলেন,” এ তো এম ডি এম এ ড্রাগ , যাকে এক্সট্যাসিও বলা হয়। আপনারা বলতে চান যে এ ব্যাপারে আপনারা কিছুই জানেন না?”

“ না না আমি তো এই চার পাঁচ দিন হল এসেছি। আমি ওকে ভালো ভাবে চিনতামই না।“ ককিয়ে উঠলো তিন্নি।

ইন্সপেক্টর মৃগের দিকে তাকাল।

মৃগ মাথা নেড়ে সায় দিল।

“ আপনি কতদিন আছেন এই ফ্ল্যাটে?”

“ তা মাস ছয়েক হয়ে গেল। কিন্তু স্যার ও নিজের মত আসতো যেত। আমার সাথে ওর খুব একটা বন্ধুত্ব ছিল না।“ মৃগ সন্ত্রস্ত।

কন্সটেবলরা ওদের ঘর তল্লাসি করে এসে জানালো, যে কিছু পাওয়া যায় নি।

“ আমরা অন্য কোন জায়গায় গিয়ে থাকতে পারি?” মৃগ জিজ্ঞাসা করলো ইন্সপেক্টরকে।

“ হ্যাঁ পারেন। এই ফ্লাটের চাবি আমাদের কাছে থাকবে। তবে আপনারা শহরের বাইরে যেতে পারবেন না।“

এই সময় ফ্ল্যাটের দরজার সামনে শুভমের গলার আওয়াজ পাওয়া গেল, “ মে উই কাম ইন স্যার।“

শুভম এসেছে সঙ্গে এইচ আর এর আরও তিনজন।

“ আপনারা?” জিজ্ঞাসা করলেন ইন্সপেক্টর বিজয়কুমার।

“ আমরা ভিকটিমের অফিস কলিগ।“

“ আসুন। ভালোই হয়েছে আপনারা এসেছেন ।“ বলে ইন্সপেক্টর শুভমের দিকে এগিয়ে গেল। ওরা ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরের করিডোরে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলতে লাগলো।

মৃগ আর তিন্নি পাশাপাশি গুটিসুটি মেরে বসেছিল। পুলিশের কন্সটেবলরা ওদের দিকে সন্দেহপ্রবণ দৃষ্টিতে দেখছে। তিন্নির হঠাৎ কিরকম যেন লাগলো। ওর কেরিয়ারের কি হবে? ওকে যদি পুলিশে ধরে নিয়ে যায়? মা বাবা কি করবে। এইসব ভাবতে ভাবতে ওর চোখের সামনে অন্ধকার নেমে এলো।

তিন্নিকে ওর পাশে অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়তে দেখে মৃগ চিৎকার করে সবাইকে ডাকলও। ওরা সবাই তিন্নিকে নিয়ে গিয়ে ওর ঘরের বিছানায় শুইয়ে দিল। মুখের ওপর জলের ঝাপটা দিতে তিন্নির জ্ঞান ফিরে আসলো।

জ্ঞান ফিরতে তিন্নি দেখলও ওর মাথার কাছে মৃগ বসে আছে আর সামনে দাঁড়িয়ে আছে শুভম।

“ এখন কেমন লাগছে?” জিজ্ঞাসা করলো মৃগ।

তিন্নি মাথা নেড়ে জানালো ও ঠিক আছে।

“ স্ট্রেস থেকে হয়েছে মনে হয়। ওনাদের অন্যকোনো বাড়ীতে শিফট করিয়ে দিন।“ ইন্সপেক্টর বলল শুভমকে।

মৃগ ইন্সপেক্টরকে অনুরোধ করলো,” স্যার আমরা আমাদের মোবাইল গুলো ফেরত পেতে পারি কি?”

“ নিশ্চয়ই আসুন।“

ইন্সপেক্টরের সঙ্গে মৃগ বেরিয়ে গেল মোবাইল আনতে। ঘরে তিন্নি আর শুভম। তিন্নি উঠে বসার চেষ্টা করলো। কিন্তু শরীরটা খুবই দুর্বল লাগছে।

“ তুমি এক্ষুনি উঠো না, আর একটু শুয়ে থাকো।“ বাংলায় বলল শুভম। যদিও বাংলায় একটু অবাঙ্গালী টান আছে কিন্তু তিন্নির খুব ভালো লাগলো। ওর মনে পড়ে গেল মৃগ বলেছিল শুভম এর মা বাঙালি।

তিন্নি একটু হেসে বলল, “ আপনি তো বেশ ভালো বাংলা বলেন!”

“ ভালো বলি না, কিন্তু মা খুব ইনসিস্ট করতো বলে খানিকটা বলতে পারি।“ মৃদু হাসল শুভম।

“ এখন কটা বাজে?”

“ ফোর থারটি। আচ্ছা তোমাদের বোধহয় কুছু খাওয়া হয়নি লাঞ্চে। তাই তুমি বেহোশ হয়ে পড়েছিলে বোধহয়। দেখি যদি কিছু খাবার ব্যবস্থা করতে পারি।“ বলল শুভম।

“ না এখন কিছু খাবো না। একটু কফি হলে ভালো হত।“

“ ইয়ে লো গরমাগরম কফি সব কে লিয়ে।“ হাতে একটা ট্রেতে কয়েকটা কাপে কফি নিয়ে ঢুকলও মৃগ।

সবাই এক একটা কাপ তুলে নিল।

কফি খেতে খেতে শুভম কারুর সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিল। তারপর মৃগ আর তিন্নিকে বলল,” একটা অন্য বাড়ির বন্দোবস্ত হয়েছে। তোমরা নিজেদের জিনিষপত্র প্যাক করে নাও।“

ওরা ওদের জিনিষপত্র গুছিয়ে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এলো। পুলিশ ওদের ফ্ল্যাটটা সিল করে দিল।

( ক্রমশ ... )



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Thriller