Partha Sarathi Paramanik

Comedy Tragedy Classics

4  

Partha Sarathi Paramanik

Comedy Tragedy Classics

শ্যামাচরণদার ভাগ্যপরিবর্তন

শ্যামাচরণদার ভাগ্যপরিবর্তন

8 mins
315




এই সমাজে এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁদের ভাগ্যে সবসময় খারাপটাই ঘটতে থাকে । অন্তত তাঁরা তো সেরকমটাই মনে করেন । ক্রমে তাঁরা নিজেকে অপয়া, দুর্ভাগা … এ সব ভাবতে থাকেন । আশেপাশের লোকজনও যখন তাঁদের নিয়ে নানা ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে থাকেন, তখন তাঁদের ধারনা আরও বদ্ধমূল হয় ।

তেমনই একজন আমাদের অফিসের শ্যামাচরণদা । অল্প–বিস্তর মন্দ ভাগ্য যে আমাদের অনেকেরই তাতে কোনও সন্দেহ নেই কিন্তু শ্যামাচরণদার তুলনায় তা অতি নগণ্য । এই ধর, রাস্তার মাঝে একটা পাথর রেখে দিলে – দেখলে একশ জনের মধ্যে নিরানব্বই জন পাশ কাটিয়ে চলে গেল একজন ঠিক ঠোকর খেল … তিনিই আমাদের শ্যামাচরণদা । সারা রাস্তার মধ্যে ঠিক যেখানটায় একটু খারাপ থাকবে অবধারিতভাবে তাঁর পা সেখানে পড়বেই । অথবা এমনও হতে পারে তাঁর পা অসাবধানে যেখানে পড়ে সেখানেই গর্ত তৈরি হয় ! শ্যামাচরণদা যদি বাসে চাপেন তো সে বাস ঠিক জ্যামে আটকা পড়বে । ট্রেনে এলে, ট্রেন লেট করবে । আর যদি সব ঠিক-ঠাক হয় তো দেখা গেল তিনি লিফটে আটকা পড়লেন । তাই তিনি অনেক আগেই বাড়ি থেকে বার হয়ে যান । এবং বেশিরভাগ দিনই অফিসে টাইমের অনেক আগেই পৌঁছে যান তবু ঠিক যেদিন একটু লেট হবে অবধারিত ভাবে সেদিনই শুরু হবে সকাল থেকে বসের হাঁক-ডাক । এরকম অদ্ভুত ভাগ্য আমি আর কারও দেখিনি । এই তো সেদিন, আমরা অফিস থেকে ফেরার পথে ছ’জন একসাথে একটা বাসে উঠে পড়লাম । বাসে সাংঘাতিক ভিড় আমরা এদিক ওদিক করে দাঁড়িয়ে পড়লাম । একে একে মিনিট ১৫-২০-র মধ্যে আমরা সকলেই সিট পেয়ে গেলাম, এমনকি কয়েকজন আমাদের পরে উঠেও সিট পেয়ে গেল । কিন্তু শ্যামাচরণদা যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানের কেউ নামলেন না । অগত্যা তাঁকে সারাটা রাস্তা দাঁড়িয়েই যেতে হল । আর ট্রেনে … ! আমাদের এই লাইনে ৫-১০ মিনিট লেটটা কোনও ব্যাপার নয় । অফিস টাইমের সব ট্রেনগুলিই প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে মিনিট দশেক লেটে চলে । শ্যামাচরণদাও সাধারণত ‘রাইট টাইমের’ আগেই স্টেশনে পৌঁছে যান । অথচ ঠিক যেদিনই তাঁর একটু লেট হবে হতচ্ছাড়া ট্রেন তাঁকে ফেলে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ‘রাইট টাইমে’ পালিয়ে যাবে । আরও মজার বিষয় এই যে পরের ট্রেনটি অবধারিত ভাবে আরও লেটে আসবে ।


মোদ্দা কথা, বাসে-ট্রেনে তিনি যেখান দিয়েই যান কিছু না কিছু একটা তাঁর সাথে ঘটবেই । এবং বলাই বাহুল্য, সেটা খারাপ কিছু । শ্যামাচরণদাও এরকম মন্দ ভাগ্য নিয়ে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন । সাধু-সন্ন্যাসী থেকে মনোবিদ বাদ দেন নি কিছুই কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না । অথচ ঠিক কখন থেকে তিনি এই মন্দ-ভাগ্যের গেরোই পড়লেন তা তিনি নিজেও ঠিক করে বলতে পারেন না । কৈশোর বয়স থেকেই তিনি ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছিলেন কিন্তু অতোটা কেয়ার করেন নি । ভাগ্যের সাথে লড়াই করা অতি দুরূহ কাজ । তবু এতদিন যথাসাধ্যি লড়েছেন । তবে ইদানীং একটু বেশিই অস্থির হয়ে পড়েছিলেন ।

শ্যামাচরণদা অকৃতদার । একটা ভাড়া বাড়ি নিয়ে একাই থাকেন । বয়স চল্লিশের কোঠায় । শ্যামাচরণদার এই অবস্থা দেখে শেষে আমরা বললাম “শ্যামাচরণদা, আপনি কিছু দিন শিমলা থেকে ঘুরে আসুন । যদি আবহাওয়ার পরিবর্তনে আপনার ভাগ্যেরও পরিবর্তন ঘটে” । কথাটা শ্যামাচরণদার মনে ধরেছিল । তাই মে মাসে আমাদের অফিসের কয়েকজনের সাথে শ্যামাচরণদাও শিমলা পাড়ি দিলেন ।

আমরা তো রীতিমতো ভয়ে ভয়ে দিন কাটাতে লাগলাম, না জানি শ্যামাচরণদা ওখানে কি কাণ্ড বাঁধাচ্ছেন ! তাঁকে ছাড়া অফিসটাও কেমন মরা মরা লাগছিল । দিন দুয়েক পরে, শ্যামাচরণদার ফোন পেয়ে আমরা আসস্থ হলাম । যাক, শিমলায় শ্যামাচরণদার দিন নির্বিঘ্নেই কাটছে । গত কালই তাঁরা নাকি স্থানীয় একটা কালি মন্দির থেকে ঘুরে এসেছেন এবং জেনেছেন শ্যামা-মা মানে ‘শ্যামলা–দেবী’ তা থেকেই নাকি শিমলা নামকরণ । আর এ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নিবাস, টাউন হল, ক্রাইস্ট চার্চ তাঁদের ঘোরা হয়ে গেছে । চার্চের অদ্ভুত ঘড়িটা সম্বন্ধেও নানা কথা বললেন । আর প্রকৃতির ব্যাপারে শুধু একটা কথাই বললেন ‘অনির্বচনীয়’ , না দেখলে বিশ্বাস হয় না । এরকম একটা জায়গায় আমরা তাঁকে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি বলে আমাদের ধন্যবাদ দিলেন । কিন্তু আসল ঘটনা ঘটল এর ঠিক দিন চারেক পর ।

আমরা অবশ্য জেনেছিলাম তারও একদিন পরে । একটা বাংলা সংবাদ পত্রে ছোট্ট করে বেরিয়েছিল । শ্যামাচরণদা নাকি সেখানে গিয়ে বেশ হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধিয়ে ফেলেছেন । এক ঢিলে একটা আস্ত আসামীকে কুপোকাৎ করে ফেলেছেন এবং আজ শিমলা পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে । আমরা তো বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেলাম । এও কি সম্ভব ! আমাদের অফিস একেবারে সরগরম হয়ে উঠল । শ্যামাচরণদার সাথে যোগাযোগ করেও বিশেষ কথা হল না, শুধু এটা জানতে পারলাম যে তিনি শুক্রবার ফিরছেন । আজ মঙ্গলবার, অর্থাৎ মাঝে আরও দুটো দিন ।

আমরা অধীর আগ্রহে শ্যামাচরণদার আগমনের অপেক্ষা করতে লাগলাম । যথারীতি শুক্রবার এল । হঠাৎ দুপুরে একপশলা বৃষ্টি হয়ে গেল । তবু আমরা সময়মতোই বেরিয়ে পড়লাম । আমরা পাঁচজন একটা বড় মালা নিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম । টুরিষ্ট বাস শ্যামাচরণদাকে এখানেই নামিয়ে দেবে তারপর একটা ট্যাক্সি করে বাড়ি যাওয়া হবে । শিমলাতে যাই সংবর্ধনা দেওয়া হোক আমাদেরও তো একটা কর্তব্য আছে ।

প্রায় পাঁচটার সময় শ্যামাচরণদার বাস আমাদের সম্মুখে এসে দাঁড়াল । বীরের মত শ্যামাচরণদা একটা ধবধবে পাঞ্জাবী-পাজামা পরে নেমে এলেন । দু’জন ভদ্রলোক তাঁর সব লাগেজ নামিয়ে এনে দিয়ে, বললেন “এবারে শ্যামাচরণদাই আমাদের হিরো !” আমরাও তড়িঘড়ি মালাটা নিয়ে শ্যামাচরণদাকে পরিয়ে দিলাম । সবাই মিলে শ্যামাচরণদার জয়ধ্বনি দিতে লাগলাম । বাসের অন্যান্য যাত্রীরাও আমাদের সাথে গলা মেলাতে লাগলেন । তারপর একসময় বাস স্টার্ট নিয়ে বেরিয়ে গেল । আমি শ্যামাচরণদাকে একটু ‘সাইডে’ নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “ব্যাপার কি ? আমার তো মাথায় কিছু ঢুকছে না । আপনি আবার কি কাণ্ড বাঁধালেন !“

শ্যামাচরণদা নিচু স্বরে আমাকে সব জানালেন । হয়তো তিনি নিজেও এতদিন ব্যাপারটা চেপে রেখে হাঁস-ফাঁস করছিলেন । তিনি যা বললেন তা হল এইঃ শ্যামাচরণদা গত সোমবার সকাল প্রায় ৯-টার সময় একা রাস্তা দিয়ে পায়চারি করছিলেন । চারিদেকের ছবির মতো মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে হাঁটছিলেন । নিচু ঢালের উপর আপেল বাগানটা উপর থেকে বেশ লাগছে, প্রচুর কাঁচা-পাকা আপেল ধরেছে । একটা নাম না জানা পাখি একমনে সরালাপ করে চলেছে । রাস্তার ধারে ধারে ঝোপের মধ্যে লাল লাল স্ট্রবেরি উঁকি মারছে । দূরে ওক, পাইন, দেবদারু গাছের ফাঁকে অস্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের কোলে গুচ্ছ গুচ্ছ রঙ–বেরঙের ঘরের সারি । এর উপর হালকা কুয়াশা যেন সমস্ত কিছুকে কেমন স্বর্গীয় করে রেখছে । শ্যামাচরণদা সে সব দেখতে দেখতে আপন মনে গুনগুন করতে করতে চলছিলেন । হঠাৎ দেখতে পেলেন একটা মাঝারি সাইজের পাথর রাস্তার মাঝখানে পড়ে আছে । ভাগ্যিস শ্যামাচরণদার নজর আগে ভাগেই তার উপর পড়েছে ! ব্যাটা নির্ঘাত তাঁকে চোট দেওয়ার তালে ছিল । শ্যামাচরণদার মনে হল পাথরখানা তাঁকে দেখে দাঁত বার করে হাসছে । তিনি ভাবলেন এ যাত্রা নয় বাঁচলেন কিন্তু ফেরার পথে যদি খেয়াল না থাকে তবে তো নির্ঘাত হোঁচট খেয়ে পড়তে হবে । তাই তিনি ঠিক করলেন পাথরটা ওখান থেকে সরিয়ে দেবেন । সেই মতো তিনি পাথরটা নিয়ে রাস্তার পাশের আপেল বাগানের দিকে ছুঁড়ে দিলেন । আর তখনই অঘটনটা ঘটল । “আঃ” – করে চিৎকার ভেসে এলো আপেল বাগানটা থেকে । শ্যামাচরণদা ভাবলেন তিনি নিশ্চয়ই বাগানের মালিকে আঘাত করে বসেছেন । তড়িঘড়ি ঢালু রাস্তা বেয়ে একটু নীচে নেমে দেখলেন একটা আপেল গাছের তলায় একটা লোক দু’হাতে তার মাথা চেপে ধরে বসে আছে । আর তার হাত থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে । শ্যামাচরণদা ভয় পেয়ে গেলেন । তিনি কি করবেন ঠিক করতে পারছিলেন না । হঠাৎ কয়েক জন পুলিশকে সেইদিকেই আসতে দেখে তিনি সম্পূর্ণ নিথর হয়ে গেলেন । আর বুঝি কোলকাতায় ফেরা হল না । এবার বোধহয় বাকি জীবনটা শিমলার কোনও ‘সেলে’ই কাটাতে হবে । চারজন পুলিশ আহত লোকটাকে ঘিরে দাঁড়ালেন আর একজন – খুব সম্ভবত বড়বাবু, এগিয়ে এলেন শ্যামাচরণদার কাছে । শ্যামাচরণদা কি বলবেন, কি করবেন কিছুই ভেবে পাচ্ছিলেন না এমন সময় বড়বাবুই তাঁর কাঁধে হাত রেখে হিন্দিতে বললেন – “বাঃ । কি অসম্ভব টিপ আপনার ! আপনার তো মশাই ফোর্সে থাকার কথা ! আমরা এতক্ষণ ধরে ওর পিছু ধাওয়া করছিলাম কিন্তু কিছুতেই বাগে আনতে পারছিলাম না । আর আপনি মশাই এক ঢিলেই একেবারে ধরাশায়ী করে ফেললেন !“ শ্যামাচরণদা সম্বিত ফিরে পেলেন । আড় চোখে দেখলেন আসামীটির একটা হাতে হাতকড়া পরানো যা এতক্ষণ তাঁর নজর এড়িয়ে গিয়েছিল । তিনি একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন – যাক এ যাত্রায় তাঁর হাজত বাস হচ্ছে না ।

তারপর বড়বাবু শ্যামাচরণদার বর্তমান ঠিকানা, ফোন নং সব নোট করে নিয়ে আবার হিন্দিতে বললেন – “এখন তাড়া আছে । শ্রীমানকে ঠিক সময়ে কোর্টে নিয়ে যেতে হবে । তার আগে অবশ্য ওর ফার্স্ট এডের ব্যবস্থা করতে হবে । না, না, চিন্তার কিছু নেই আমি আসার সময় দেখে এসেছি চোট গুরুতর নয় । আপনি আমাকে একটা বিরাট অপদস্তের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন । আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেব ! যদি কিছু মনে না করেন তো বিকেলে আমার জীপ পাঠিয়ে দেব চলে আসুন, সব কথা হবে ।“

শ্যামাচরণদারা মুল শহর থেকে একটু দূরে একটা নতুন হোটেলে উঠেছিলেন । জায়গাটা বেশ নিরিবিলি এবং মনোরম । কথা মতো বিকেলে হোটেলের সামনে বড়বাবুর জীপ এসে দাঁড়ায় । শ্যামাচরণদা তাঁর একজন রুম পার্টনারকে সাথে নিয়ে গাড়িতে এসে বসেন । তাঁর জন্য বেশ একটা জম্পেশ খাওয়া দাওয়ার আয়জন করেছিলেন বড়বাবু । গোটা ঘটনাটা শ্যামাচরণদা বুঝেছিলেন শিমলা পুলিশ স্টেশনে বসেই । যাকে শ্যামাচরণদা এক ঢিলে চিৎ করেছিলেন, সে একজন নামকরা আসামী । বড়বাবু ভি. এস. সম্পৎ আর তাঁর দলবল সকাল সকাল কোর্টে নিয়ে যাচ্ছিলেন একটা ভ্যানে করে । শ্যামাচরণদার সাথে যেখানে দেখা হয় সেই রাস্তাটাই আপেল বাগানটাকে অর্ধবৃত্তাকারে ঘুরে মুল শহর বেয়ে কোর্টের দিকে গেছে । শহরে ঢোকার ঠিক আগে, বাবাজী একবার ‘বাইরে’ যাওয়ার জন্য জেদাজেদি করতে থাকে । নরম স্বভাবের সম্পৎবাবু ভ্যান থামান । আসামীর হাত বাঁধা, তাছাড়া তাঁরও একবার ‘বাইরে’ যাওয়ার দরকার পড়েছিল । দু’জন কনস্টেবলও আসামীর সাথে যান । কিন্তু একটু এগোতেই সে ব্যাটা কনস্টেবল দু’জনকে ধাক্কা মেরে দৌড় লাগায় । সাথে সাথে চারজন কনস্টেবল এবং সম্পৎবাবু পিছু ধাওয়া করেন । কিন্তু বাগানটা বেশ বড় আর ঘন থাকায় তাঁরা বিশেষ সুবিধা করতে পারছিলেন না । তারপরের ঘটনা তো শ্যামাচরণদার জানা । আজ কয়েদীকে কোর্টে না নিয়ে যেতে পারলে বড়বাবুর চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যেত । তাই সম্পৎবাবু শ্যামাচরণদার বিশেষ খাতির – আপ্যায়ন করলেন ।

একটা স্থানীয় সংবাদপত্রে শ্যামাচরণদার এই বিশেষ কীর্তির খবর ফলাও করে পরদিন বেরোয় । শিমলা পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে শ্যামাচরণদাকে একটা ছোটো-খাটো সংবর্ধনাও দেওয়া হয় । কিন্তু আসল ঘটনাটা পুরোপুরি চেপে যান শ্যামাচরণদা ।

এই পর্যন্ত গড়গড় করে বলে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন শ্যামাচরণদা । এদিকে অমল-পলাশ-সুবীর-সুকান্তরা ডাকাডাকি শুরু করেছে । যাবার আগে শ্যামাচরণদা আমার হাতটা ধরে বললেন “ব্যাপারটা যেন গোপনই থাকে” । আমি বললাম “তাই হবে । এখন চলুন । তাছাড়া আপনিই যে আসামীকে ধরাশায়ী করেছেন এবং পুলিশকে তাকে ধরতে সাহায্য করেছেন সেটা তো আর মিথ্যে নয় ।“

আমরা মেন রাস্তার সামনে এসে দাঁড়ালাম । পলাশ একটা ট্যাক্সি ডাকতে গেল । আর আমরা শ্যামাচরণদার সাথে খোশ-গল্পে মেতে উঠলাম । এমন সময় একটা লঝঝড়ে ট্রাক ফুল স্পীডে হুশ করে পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল । আর তার পেছনের চাকা পড়ল রাস্তার একটা ছোট গর্তে জমে থাকা জলের উপর আর সেই কাদা-জল ধেয়ে এল আমাদেরই দিকে । আমি অবাক হয়ে দেখলাম সে কাদা-জল আমাদের চারজনের কারও গায়ে এসে পড়ল না, পড়ল গিয়ে শ্যামাচরণদার সাদা জামা-কাপড়ে ! আর আমিও সাথে সাথে বুঝলাম শিমলায় যাই হোক শ্যামাচরণদা আছেন শ্যামাচরণেই ।




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy