প্রযুক্তির গ্রাস
প্রযুক্তির গ্রাস
"Ignorance is the curse of God; knowledge is the wing wherewith we fly heaven"
Willam Shakespeare
একবিংশ শতকের প্রথমভাগে দাঁড়িয়ে আমরা সমস্ত বিশ্বকেই যেন বিজ্ঞানের দ্বারা করতলে এনে ফেলেছি। আইনস্টাইনের ই এম সি কিংবা নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র সবই যেমন আমাদের কাছে অজানাকে জানার অস্ত্রস্বরূপ, | তেমনই উন্নতির সােপান এর ধাপ মাত্র। পারমাণবিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অত্যাধুনিক যন্ত্রদির ব্যাপক প্রসার ডেকে আনছে মানবযুগের অন্তিম লগ্নকে। পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে আরম্ভ করে মহাকাশযানের | ওজন স্তর ভেদ করে চাদে পাড়ি দেওয়া সবই যেন প্রকৃতির বুক থেকে কেড়ে নিচ্ছে তাঁর কন্যান্বরূপা সৌন্দর্যকে। সবই যেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গ্রাসে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সেখানেই চিকিৎসার উন্নতি মানুষকে ফিরিয়ে দিচ্ছে মূল্যবান জীবন যা মানুষের মনে জাগিয়েছে সাহস। অ্যানড্রয়েড ফোন থেকে আরন্ত করে কম্পিউটারের ডেক্সটপ সমস্ত কিছুকেই মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে এনেছে ঘরের কোণে। বিশ্বচরাচরে সােশ্যাল নেটওয়ার্কের রাজত্বে মানুষের মধ্যে যােগবন্ধন হয়েছে আরও শক্ত। তবে বিজ্ঞানীদের অসীম আগ্রহ ও ধৈর্য্যে আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবজাতির বহুগুণসম্পন্ন। সমাজের প্রগতির পথ সৃষ্টিকারী হাজার হাজার পৃষ্ঠার ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, অন্কের বহুমূল্য পুস্তক যেমন ছাত্রদের প্রগতির মেরুদণ্ড করে তুলেছে তেমনই প্রকৃতিকে আরও উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কি এই উন্নতির গৃড় অন্তরালেই রয়েছে ফবংসের বাণী। মানুষের অসীম আগ্রহই ডেকে আনছে মানুষের বিপদ। তাই প্রকৃতির প্রতি যত্নবান হওয়ার পাশাপাশি আমাদের উন্নয়নকে এমন একপথে চালনা করতে হবে যাতে পৃথিবী দীর্ঘায়ু হয়। আজকের এই উন্নয়নকে অনেকেই চিন্ার কারন মনে করেছে। তাই হুমায়ুন আহমেদ মানুষ-এর অপ্রয়ােজনীর তাগিদেই ক্ষণিক প্রশমিত করবেই বলেছেন “এ জগতে সবচেয়ে সুখী সে, যে কিছুই জানে না। জগতের তথা প্রকৃতির প্যাচ বুলেই জাটিল হয়ে যায়।
তাই প্রযুক্তিনির্ভর সমাজের শস্য শ্যামল অস্তিত্বকে অক্ষুন্ন রাখতে বিদ্যার্থীদেরই অগ্রগামী হয়ে উঠতে হবে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মানবজাতি তথা মানবাত্মার ধ্বংসসাধন হয়ে উঠেছে আধুনিক সমাজের এক অতিপ্রয়ােজনীয় অংশ স্বরূপ, প্রযুক্তি আমাদের কাছে থেকে কেড়ে নিচ্ছে আমাদের চিদ্ধপ্রবণ মনকে অলসতাকে করে তুলছে নিত্যসঙ্গী যা মােটেও আমাদের কাছে কাম্য নয়। মানবজাতির মধ্যে আজ ভাতৃত্ববােধ, সহজতা, স্নেহশীল মন, সর্বোপরি একে অপরের প্রতি ভালােবাসা ক্ষুয়েছি। সমাজে উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যার বীজকে। রােপণ করেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে নৈরাজ্য। রক্তের স্রোতে বয়ে চলেছে প্রযুক্তিরই অত্যাধুনিক অস্ত্রের। | নিষ্ঠুরতারই চিহ্ন। তবে প্রযুক্তির উন্নয়নের এই যুগে খুব শীগ্রই আমরা খুঁজে পাব মানবিকতাহীন, নীরস, রােবট। ও মানুষের সংমিশ্রণ মানবােট'-কে। যার মধ্যে সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গই থাকবে ক্ত থাকবে না হৃদয় এবং যারা কেবল প্রযুক্তির কালােরসকে পান করে জীবন নির্ধারণ করবে। ফলস্বরূপ আমরা বলতে পারি যে মানুষ আর। মানুষ থাকবে না। কেবল মানুষেরই কলেবরস্বরূপ রােবট। তাই প্রযুক্তির অত্যাধুনিকভা এবং ় মাঝেই আজ প্রকৃতি চিৎকার করে নিজের অস্তিত্ব অটুট রাখতে বারবার বলছে – আমি কি বাঁচব, আমার নিঃস্বার্থ ভালােবাসা কি পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ?” এই আজ আমাদের ভাববারই বিষয়।
