প্ৰেম ও শরীর
প্ৰেম ও শরীর
মন দিয়ে ভালোবেসে প্রেমের ফাঁকিবাজি হল দেহহীন প্ৰেম। প্রেমের ক্ষেত্রে নারীরা আগে পুরুষের কাছে তার নিরাপত্তা খোঁজে । কিন্তু প্রেমের বিষয়ে পুরুষরা সবসময় দেখে থাকেন নারীর সৌন্দয্য, রূপ, রস ও শরীরের বাধুনি। পরে অন্য সব বিষয়টি দেখে থাকেন।
বিষয়টি বিশ্লেষন করলে এরকম দাঁড়ায় যে, পুরুষ খুঁজে সৌন্দয্য আর নারী খুঁজে নিরাপত্তা ।
মজার বিষয় হলো প্রেমের ক্ষেত্রে বহু পুরুষ মনে করেন যে নারীদের কাছে দৈহিক মিলন যেন সবসময় অসুন্দর, অপবিত্র। কেননা নারীদের সাথে প্রেম হলে তারা খুব আবেগ ও উদ্দীপনা নিয়ে বলে আমি তোমাকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি। জীবনের চেয়ে বেশী ভালোবাসি, তুমি আমার সৌরজগত, সূর্য, পাহাড় !এরপর যেই পুরুষ বললো শুনে খুব খুশী হলাম, প্রাণের চেয়ে বেশী ভালোবাসো, জীবনের চেয়েও বেশী ? তাহলে এখানে শরীরকেই প্রাধান্য দিতে হবে। শরীর ছাড়া মন ও প্রাণের কি কোন অস্তিত্ব আছে ? চলো একটু বিছানায় যাই ?
ওমা এবার নারী ক্ষেপে উঠবে, কি বললে, তুমি ? আমার শরীর চাও ! তুমি তো একটা বদমাস, লুচ্চা ! আমি তোমাকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসি আর তুমি শরীরের কথা বলো, তোমার সাথে আজই আমার সম্পর্ক শেষ, বিদায়….!
এর প্রধান কারণ নারীর শারীরিক গঠন। কারণ, মিলনের ফলের ধারক তো নারী। পুরুষের সেই দায়বদ্ধতা নেই সমাজের কাছে। তাই নিরাপদ বলে তার চোখে শারীরিক মিলন অপবিত্র বা অসুন্দর কাজ নয়।
আসলে প্রেম কি ?
প্রেম হলো- কোন একজনকে মনে প্রানে ভালোলাগা এবং ভালোবাসা । বিজ্ঞানের ভাষায়, প্রেম বা ভালবাসা হলো আমাদের মস্তিষ্কের থ্যালামাসের একধরনের রাসায়নিক অবস্থা | যার জন্য একাধারে দায়ী আমাদের জিন। প্রেমের প্রথমদিকে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, গাল – কান লাল হয়ে যাওয়া, হাতের তালু ঘেমে যাওয়ার উপসর্গ গুলো দেখা যায়; বিজ্ঞানীদের মতে সেসবের পেছনে দায়ী হলো ডোপামিন, নরেপিনেফ্রিন হরমোন।
পৃথিবী ভালোবাসাময়, অন্তত প্রেমিক- প্রেমিকারা হয়তো এটাই বিশ্বাস করে। প্রেম মানুষকে গড়ে, আবার ভাঙেও। প্রেমের উন্মাদনায় সাত সমুদ্র পাড়ি দেয় প্রেমিক, মৃত্যুর মতো কঠিন বিষয়টিকেও মেনে নেয় অনেকে।
একটু কথা বলা, একটু দেখা করা কিংবা সময় কাটানোর আকুতি যেন তোলপাড় করে দেয় বুকের ভেতর। আর যারা নতুন নতুন প্রেমে পড়ে তাদের বেলায় তো কথাই নেই। তারা যেন হয়ে যায় ভিন গ্রহের প্রাণী। মনে হয়, মহাকাশযান থেকে এই মাত্রই নামল পৃথিবী নামের গ্রহতে।
তবে প্রেমের জন্য এত উন্মাদনা কেন? কেন এত আকুতি? কেন একজন মানুষ প্রেমে পড়ে? তারও উত্তর দিয়েছে বিজ্ঞান।
প্রেম হল একটি আসক্তির মত, যুক্তরাষ্ট্রের নৃতত্ববিদ হেলেন ফিশার ও তাঁর দল ভালোবাসায় সুখী মানুষদের মধ্যে একটি গবেষণা করেন। হেলেন ফিশারের মতে, ভালোবাসার কারণের পেছনে গবেষকরা মস্তিষ্কের ভেনট্রাল টেগমেন্টাল এরিয়া (ভিটিএ)-এর এ১০ নামের কোষকে খুঁজে পেয়েছেন। এ১০ কোষ ডোপামিন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
ভিটিএ মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেমের অংশ। এটি চাওয়া, প্রেরণা, ক্ষুধা, উত্তেজনা, ভালোবাসার আবেগ ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত। আসলে এটি মস্তিষ্কের সেই অঞ্চল যেখানে নেশা জাতীয় দ্রব্য নিলে আসক্তি অনুভূত হয়। ভালোবাসার প্রাথমিক পর্যায়েও এক ধরনের নেশা তৈরি হয়। হয়তো এই কারণে রোমান্টিকতা মাদকের মতো আসক্তি তৈরি করে।
তবে কারো প্রতি আসক্ত হওয়ার আগে মস্তিষ্ক ব্যক্তিটিকে বিচার- বিশ্লেষণ করে নেয়। কিং কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ড. ডেনিশ ভুগরা বলেন, ‘ভালোবাসা অনেক বিষয় দিয়ে প্রভাবিত হয়। সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের পাশাপাশি এখানে শারীরিক ও আবেগীয় আকর্ষণ প্রভাব ফেলে।’
যুক্তরাষ্ট্রের রুটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিশার ও তাঁর গবেষক দল ভালোবাসাকে মোটাদাগে তিনটি ভাগে ভাগ করেন। ভাগগুলো হলো : কাম, আকর্ষণ ও আসক্তি। এগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় হরমোনের মাধ্যমে। এই তিনটি আবেগ একসঙ্গেও তৈরি হতে পারে, আবার আলাদা আলাদাও হতে পারে। তাই হয়তো মানুষ ভিন্ন ভিন্ন মানুষের প্রতি আসক্তি, আকর্ষণ ও কামবোধ করে।
আকর্ষণ, প্রেমের ক্ষেত্রে আকর্ষণ আরেকটি পর্যায়। এখানে মস্তিষ্কের ডোপামিন ও নোরিপাইন নামের রাসায়নিক উচ্চ মাত্রায় যুক্ত থাকে। এই প্রেমে প্রেমিক বা প্রেমিকার অনেকক্ষণ একসঙ্গে সময় কাটানোর বাসনা তৈরি হয়।
এই প্রেমে ‘হ্যাপি কেমিক্যাল’ বা সুখী রাসায়নিক সেরেটোনিন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন ক্ষুধা ও মেজাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। গবেষকদের ধারণা, সেরেটোনিন হলো প্রেমের প্রাথমিক পর্যায়ের মোহ তৈরির কারণ। এটি মূলত রোমান্টিক কমেডি ধরনের প্রেম। আকর্ষণের এই প্রেম সাধারণত স্থায়ী হয় ১৮ মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত।
মনোবিদ ও সম্পর্ক বিষয়ক কাউন্সেলর ভিরি শর্মা বলেন, ‘সম্পর্ক আসলে স্থায়ী হয় একজন আরেকজনকে বোঝার ধৈর্য এবং আবেগীয় যোগাযোগের মাধ্যমে।’ কাম ও আকর্ষণ উভয়ই প্রেমের ক্ষেত্রে বাধাদায়ক। আসলে যার সঙ্গে আপনি শারীরিকভাবে যুক্ত তার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে।
এই প্রেমের লক্ষণ হলো : প্রেমিক- প্রেমিকার পৃথিবীকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম হয়, সঙ্গীর সঙ্গে থাকলে নিজেকে সম্পূর্ণ মনে হয়, এমনকি সঙ্গী পৃথিবীর অন্য প্রান্তে থাকলেও।
কাম, মানুষের সেক্স হরমোন টেসটোসটেরন ও ইসট্রোজেনের রাজত্ব এখানে। এটি নারী ও পুরুষ উভয়ের মধ্যেই কাজ করে। গবেষকদের মতে, এই পর্যায়ের ব্যাপ্তি থাকে প্রায় দুই বছর। এর লক্ষণ হলো : কোনো ব্যক্তির প্রতি তীব্র শারীরিক চাহিদা অনুভব করা; এটি হবে সম্পূর্ণভাবে তার শারীরিক গঠনের ওপর ভিত্তি করে। এখানে বাহ্যিক সৌন্দর্যটাই মূল বিষয়। আপনি কেবল প্রেমিক বা প্রেমিকা হবেন, বন্ধু হওয়ার প্রয়োজনবোধ করবেন না।
আসক্তি, প্রেমের তিন নম্বর ভাগ হলো অ্যাটাচমেন্ট বা আসক্তি। সাধারণত আকর্ষণ ও কাম দুটো পর্যায় পার করে আসক্তি তৈরি হয়। আসক্তি হলো দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের প্রাথমিক স্তর। এই আবেগ মূলত ঘটে অক্সিটোসিন ও ভ্যাসোপ্রেসিন নামের ক্যামিক্যালের কারণে।
কাম, আকর্ষণ অথবা আসক্তি হরমোনের বিক্রিয়ার কারণে তৈরি হয়। তবে আসক্তির সম্পর্ক অনেকদিন স্থায়ী হয়। এই প্রেমের লক্ষণ হলো, সঙ্গী সঙ্গে থাকলে উষ্ণ বোধ করা, নিজের সবকিছুই সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করা, সঙ্গীর কাছে নিরাপদ বোধ করা
এবং তার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া এবং তার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে চাওয়া।
অনেক সময় সঙ্গী কম সাড়া দেওয়া, অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপ, যৌনতায় একঘেয়েমি ইত্যাদির কারণে এই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হতে পারে। এসব সমস্যার সমাধানে পেতে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন-
পরিকল্পনা ছাড়াই দুজন মাঝে মাঝে ছুটি কাটান।
সঙ্গীকে সম্পত্তি ভেবে বসবেন না। সে আপনার সম্পদ, যাকে অর্জন করতে হয়।
নিজেদের মধ্যে অনেক সময় কাটান। একজন আরেকজনের ভালো লাগা সম্পর্কে জানুন।
ভালোবাসা কষ্ট দেয় – হরমোনের বিক্রিয়া ভালোবাসা ঘটায়। তবে ভালোবাসার একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে। বিচ্ছেদের পরে মস্তিষ্ক থেকে করটিসল নামের হরমোন নিঃসৃত হয়। এটি মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোন। শারীরিক কোনো ফ্র্যাকচার বা ভাঙনে শরীর যেমন কষ্ট অনুভূত করে, মনেও ঠিক একই ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। তাই ভালোবাসুন, তবে বুঝে শুনে।
ভালোবাসা আর প্রেম কি ?
ভালোবাসা আর প্রেম। সারাজীবন শব্দদুটো শুনে যাচ্ছি, কিন্তু কখনো গভীর থেকে ভেবে দেখলাম, শব্দদুটোর মধ্যে আসলে পার্থক্য কোথায়?
প্রেম আর ভালোবাসায় তেমন একটা তফাৎ নেই। শব্দদুটো ভীষণ নিকটবর্তী, কিন্তু তবুও একটা পার্থক্যতো আছেই।
পৃথিবীতে ভালোবাসার কোন সংজ্ঞা নাই। ভা লো বা সা এই চারটি অক্ষরের শব্দটি ইট পাথরের তৈরী কোন ভাল বাসা/বাড়ি নয়। এটি দেখা বা ছোঁয়া যায় না অনুভব করে নিতে হয়। ভালোবাসা টিকে থাকে আস্থা ও বিশ্বাসের উপর। ভালোবাসাটা হচ্ছে মানুষের মনের আবেগ অনুভূতির একটা স্বাভাবিক রূপ। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোলাগা, শ্রদ্ধাবোধ, মমতা ও টান থেকেই মূলত ভালোবাসার উৎপত্তি।
প্রেম ভালোবাসার একটা রূপ। কিন্তু ভালোবাসা স্বতন্ত্র।
প্রেমের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রিত ও সংকীর্ণ, আর ভালোবাসার ক্ষেত্র ব্যাপক ও সর্বজনীন।
ভালোবাসা হয় এক পক্ষ থেকে, আর প্রেম হয় উভয় পক্ষ থেকে, ভালবাসা্র জন্য প্রেম আবশ্যক নয় কিন্তু প্রেমের জন্য ভালবাসা অপরিহার্য। দুপক্ষের সম্মতিতে প্রেম হয়, আর ভালোবাসায় অপরপক্ষের সম্মতি মুখ্য নয়। প্রেম ব্যক্তিকেন্দ্রিক, ভালোবাসা এমন কোন সিলেবাস মানেনা, ব্যক্তি-বস্তু, সবকিছুই ভালোবাসার আওতায় পড়ে।
ভালোবাসাটা মানুষের আবেগ অনুভূতির একটা স্বাভাবিক রূপ। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোলাগা, শ্রদ্ধাবোধ থেকেই মূলত ভালোবাসার উৎপত্তি।
অবশ্য ভালোবাসার সংজ্ঞাটা আরো ব্যাপক, এটা যে কোন ঘটনা, ব্যক্তি, প্রাণী, স্মৃতি, বিষয় ইত্যাদির ব্যাপারেও হতে পারে। বিশেষ কোন “সাবজেক্ট”-এর ব্যাপারে মানুষের বিশেষ অনুভূতির নামই ভালোবাসা। সবচেয়ে বড় যে পার্থক্য সেটা হলো, ভালোবাসা সাধারণত এক-তরফা হয়, তবে দু’তরফাও হতে পারে।
ভালোবাসার অনেক রং, রূপ. গন্ধ, বৈশিষ্ট রয়েছে। ভালবাসা বিভিন্ন বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৈরী হয়। মায়ের সাথে ছেলে ভালোবাসা, বাবার সাথে মেয়ের ভালোবাসা, ভাইয়ের সাথে বোনের ভালোবাসা, প্রাপ্ত বয়স্ক কোন ছেলে সাথে মেয়ের ভালোবাসা ইত্যাদি।
যেমন ধরুন আপনি আকাশ ভালোবাসেন, কিন্তু আকাশতো আপনাকে ভালোবাসতে পারেনা, পারলেও শুধু আপনাকে নির্দেশ করে সে(আকাশ) তার অনুভূতিকে প্রকাশ করতে পারছেনা বা পারেনা। প্রেমটা অবশ্যই দু’পক্ষের হতে হবে। শুধু এক পক্ষ থেকে প্রেম হয়না। আমার দৃষ্টিতে প্রেমের গভীরতা / আবেদন ভালোবাসা থেকেও অনেক বেশী। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া একজন মানুষের প্রতি আপনার ভালোবাসা থাকতে পারে, তবে সেটাকে প্রেম বলা যাবে না। প্রেমটা তখনই হবে যখন বিষয়টা দু’দিক থেকেই হবে। তবে অবশ্যই সেটা ভালোবাসা থেকেও অনেক গভীর হতে হবে।
যাই-ই হোকনা কেন প্রেম-ভালোবাসা একে অন্যের সমার্থক ও পরিপূরক, এর অসীম ক্ষমতা। করো প্রতি তীব্র আকর্ষণবোধ বা আসক্তি। হতে পারে মন ও মস্তিস্কের কোনা সাজানো কারসাজি। ভালোবাসার মানুষের জন্য প্রাণ পর্যন্ত মানুষ বিসর্জন দেয়।
যদি বলো কতদিন ভালবাসবো উত্তর হবে মরণ পর্যন্ত। যদি বলো কতটুকু ভালোবাসি ? উত্তর হবে ভালোবাসার কোন মাপকাঠি হয় না।
চলুন,এবার আবার মনে ফিরে যাই-
বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, মন বলতে আসলে কিছু নেই ! আমরা হৃদয় দিয়ে সবকিছু উপলব্দি করি কথাটি ডাহা মিথ্যা। আসলে আমাদের মন বলতে যা বুঝায় তা হলো মস্তিস্ক।
Biologicaly মন বলে কোনো বিশেষ বস্তু নেই। কিন্তু physiologically এবং philosophical দিকে দেখলে মনের অস্তিত্ব আছে। সেটা মানুষের হৃদয়ে আছে বলে মনে করা হয়। একটু ভালো ভাবে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, আপনি কোনো কিছু বিষয়ে দুঃখিত অথবা আনন্দিত হলে,আপনার ব্রেন বা মস্তিষ্ক এই ব্যাপারে সাড়া দেয়। আর কিছু মনে রাখার কথা বলা হলে সেটা ব্রেন বা মস্তিষ্কে এসে জমা হয় এবং এর ভিত্তি তে মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়া বা সাড়া দেয়। দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট - এর মতে ‘মন হলো সাদা অলিখিত কাগজের মত’ ।
জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন যে, মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোন কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে।
এবার তাহলে আসুন, মন-প্রাণ কোথায় থাকে ? মন-প্রাণ থাকে দেহের মধ্য সেটা হৃদয়ে হোক আর মস্তিকে হোক। হৃদয় ও মস্তিস্ক থাকতে হলে শরীর থাকতে হবে। তাই যারা শরীর ছাড়া শুধু মন ও প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা ও প্রেমের কথা বলে তারা ভয়ানক প্রতারক। তাদের কাছ থেকে যতটা দূরে থাকতে পারবেন ততটা দূরে থাকুন।
যে নারী বা পুরুষ দেহ বা শরীরকে বাদ দিয়ে আপনাকে শুধু মন দিয়ে ভালোবাসে বললো, সে কিন্তু শুরুতেই অবাস্তব ও প্রতারণা দিয়ে শুরু করলো। তাই এই প্রেমের পরিণতি কখনও ভালো হবে না আপনি নিশ্চিত থাকুন।
তবে যে নারী বা পুরুষ দেহ, মন ও প্রাণ দিয়ে আপনাকে ভালোবাসে তার সাথেই কেবল প্রেম-ভালোবাসা করুন। দেহ ছাড়া মনের কোন আবাস নেই। মন ও প্রাণের চেয়ে দেহ কখনও পবিত্র বা দামী নয়। দেহ সাবান দিয়ে ধুইলে পরিষ্কার হয়, কিন্তু মন পরিষ্কার করতে অনেক কিছুর প্রয়োজন।
তাই দেহ না দিয়ে মন ও প্রাণ দিয়ে কখনও প্রকৃতভাবে প্রেম- ভালোবাসা করা যায় কি? অশরীরি ভালোবাসা ও প্রেম কেবল একটি অকল্পনীয় গাল-গপ্পো মাত্র !
(তথ্য: আন্তর্জাল, উইকিপেডিয়া ও বিভিন্ন পত্রিকা।)