পাতাল চন্ডী
পাতাল চন্ডী
প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস অনেক কথাই আমরা খুঁজে পাই পাল বংশ ও সেন বংশের রাজত্ব কালে। পাল ও সেন রাজাদের সময় মালদা ছিলো বাংলার কেন্দ্র, নবাবি যুগে স্থানান্তরিত হয় তা মুর্শিদাবাদে এবং ইংরেজ আমলে চলে আসে কোলকাতায়। তবে সাতশো শতাব্দীতে সম্রাট শশাঙ্ক সময়ে থেকেই বাংলার রাজধানী ছিল গৌড়। গৌড়রে চারদিকের কোণায় চারটি দেবী চন্ডী মূর্তি দেখা পাওয়া যায় , পাতালচন্ডী, দুয়ারবাসিনী চন্ডী, জহুরা চন্ডী ও মাধাই চন্ডী।। লোক ধারণা করেন, যে এই দেবীরাই এই জনপদকে রক্ষা করবেন। চারজন দেবীর আলাদা মন্দির তৈরি হয়।
কলকাতা দিকে ফেরা পথে জাতীয় সড়ক NH34 ওপর ইন্ডিয়ান অয়েলের পেট্রোল পাম্প আছে পাশে দিয়ে , দেড় কিলোমিটার পূর্বে গেলেই পাতালচন্ডী মন্দির। লোক বিশ্বাস পাতাল থেকে উদ্ভূত হয়েছিলেন বলেই দেবীর পাতাল চন্ডী।
গৌড়ে সেন রাজাদের আমলের একটি পুরাতাত্বিক নিদর্শন পাতাল চন্ডী মন্দির বলেই গবেষকদের ধারণা। চণ্ডী ছিলেন সেন বংশের কূলদেবী।সেন রাজাদের শাসন কালে রাজধানীর গৌড়ের যে নগর দূর্গ ছিলো তার চারদিকের রক্ষাকর্ত্রী চারজন দেবীর চারটি মন্দির ছিলো তাদের মধ্যে উত্তরদিকে ছিলো মাধাইচণ্ডীর বর্তমানে গঙ্গাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে,পূর্বদিকে জহুরাচণ্ডী এবং পশ্চিমে দুয়ারবাসিনী ও দক্ষিণে পাতালচণ্ডী মন্দির।
তবে ১৯২০ র প্রথম দিকে লর্ড কার্জনের ভারতভ্রমণের মানচিত্রতে পাতাল চন্ডী মন্দিরে কথা আছে।
রাজা বল্লাল সেন সময় পাতাল চন্ডী মন্দির তৈরি হয়ছিলো বলে অনেকের অভিমত ৷ জলদস্যুদের হাতেই মন্দিরের রক্ষানাবেক্ষনের দায়িত্ব ছিলো কারন মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যেত পাগলা নদী ৷ লোককথা অনুযায়ী এই মন্দিরের ঘাটে নৌকা বেঁধে, ডাকাত দল পাতালচণ্ডীর পুজো করে তবে ডাকাতি করতে বের হত ৷নদীটি বেশ খানিকটা দূরে সরে গেছে এবং সংকীর্ণ হয়ে গেছে ৷
জহুরাচণ্ডী এখন বেশ জনপ্রিয়। তবে দুয়ারবাসিনী চন্ডী আজ অবহেলায় পড়ে আছে। হয়তো হারিয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক চন্ডী মন্দিরটি।