Bhattacharya Tuli Indrani

Classics

2  

Bhattacharya Tuli Indrani

Classics

পাহাড়ি ঝরনা

পাহাড়ি ঝরনা

2 mins
941


মুম্বই এর এত কাছে যে এত সুন্দর একটা ঝরনা থাকতে পারে, তা ধারণার বাইরেই ছিল সূর্যতপার।

বাইকে, আয়ুষের কাঁধে মাথা রেখে পনভেল পৌঁছে বাইক জমা করে ট্রেকিং শুরু করল তারা… দ্যাবা- দেবী।     

চিন্ধরন, তুন্ড্র পাহাড়ের পাশ দিয়ে, কাসাদ্রি নদী পার হয়ে তারপর দেখা মিলল, মাদপ পাহাড়ি ঝরনার… বর্ষার পরে পরে এলে তবেই দেখা পাওয়া যাবে এই ভরা যৌবনা সুন্দরীর। 

সারারাত এক বিশ্রামগৃহে নির্ঘুম কাটিয়ে পথে নামল তারা, ছটা নাগাদ।

আবছা সরের মতো কুয়াশা চারিদিকে... কেমন যেন ঘোর লাগা ভোর। শান্ত পারিপার্শ্বিকে স্বপ্নের মতো ঝিরিঝিরি হাওয়া বইছে। আবেশে আচ্ছন্ন সূর্যতপা আর আয়ুষ এগিয়ে চলল পাহাড়ের পাদদেশে, কাসাদ্রি নদীর তীরে।

বদ্ধ মনের আগল খুলে যাচ্ছে অজান্তে। নদী আর আশপাশের পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে গেল তারা… পাহাড়ি রোদ ডানা মেলেনি তখনও।

প্রকৃতির রূপ-সুধা পান করতে করতেই একঝাঁক বকপাখির উড়ে যাওয়া দৃষ্টি আকর্ষণ করল তাদের, আগের দিন সন্ধ্যাবেলায় এদেরই নীড়ে ফিরে যেতে দেখা গিয়েছিল।

সূর্যতপার খুব ইচ্ছে, নামবে সে ঝরনার জলে, তবেই না তার পুরো সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।

এখানে পাহাড়, নদী আর কুমারী ঝরনার মায়াবী আপ্যায়নে মাতোয়ারা হয়ে গেল দুটি তরুণ প্রাণ।

মাদপ ঝরনা। 

কালো পাহাড়ের পাদদেশে এই ঝরনাতে জল থাকে না, বর্ষার সময় ছাড়া।

সূর্যতপা নেমে পড়ল ঝরনার জলে, আয়ুষের বারণ না শুনে... আয়ুষ রয়ে গেল অনুভবে- কল্পনায় এই পাহাড়ি ঝরনার মোহময় রূপ উপভোগের জন্যে...

অবাক বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকল সে প্রায় ৫০ ফুট উপর থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া ঝরনাটিকে। অরণ্যের গভীরে নয়, একবারে নদীর তীরে পাহাড়ের পাদদেশে, পাহাড়ের কান্না যেন অঝোর ধারায় ঝরে চলেছে… মনটা উদাস হয়ে গেল, সদ্যবিবাহিত আয়ুষের।

সূর্যতপার আনন্দে সামিল হতে সে ও নেমে পড়ল কনকনে ঠান্ডা জলে।  

তারপর! তার আর পর নেই... মনে হলো সে যেন স্বপ্ন দেখছে... ঘোর লাগা যে স্বপ্নের দৃশ্য চোখ থেকে কোনও দিন মুছে যাবে না, কখনও। 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics