Suva Chakraborty [ অগ্নিদ ]

Tragedy

4.6  

Suva Chakraborty [ অগ্নিদ ]

Tragedy

জীবনের জুয়া

জীবনের জুয়া

2 mins
1.0K


- " যাসনি বাবু । বাইরে যাসনি এখন । প্রভাতবাবু আসছেন, একটা না একটা উপায় তিনি ঠিক বের করবেন দেখিস, আমি বলছি । বাবু আমাদের ছেড়ে যাসনি । তোর মায়ের এই অনুরোধটা রাখ বাবা । আর কিচ্ছু চাই না রে, আর কিচ্ছু চাই না । "

পলাশ, পালাতে চায় এখন । সে বাঁচতে চায় । রাতের অন্ধকারে মা, বাপকে ছেড়ে চলে যেতে চায় । তাঁদের বাঁচাতে চায় ।

ভুল তার তখনই হয়েছিল, যেদিন জুয়া খেলায় সর্বস্ব হেরে গেল । গাঁয়ের সবজান্তা মোড়ল প্রভাত মুখুজ্জের কাছ থেকে জুয়ার জন্যে নেওয়া পনের হাজার টাকা সে নিয়েছিল, আর নিয়তির লিখন এমনই, যে জুয়ার নিয়মে সেই পনের হাজার টাকা তো দূর, মায়ের গয়নার দিকেও নজর দিতে পলাশের চোখ দুটো একবারের জন্যেও বাধে নি ।

সেই জুয়ার টাকা ফেরত নেবার জন্যে প্রভাতবাবু আজ দু সপ্তাহ ধরে পলাশকে ভালো মুখে বলে গেছেন । কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ আজ ভেঙেছে । প্রভাত বাবু কাল সদলবলে এসে হুমকি দিয়ে গেছেন । পলাশের জীবননাশের শংকা তিনি কাল বাড়িয়ে দিয়ে গেছেন । বলে গেছেন আগামীকাল অর্থাৎ আজ রাতে তিনি আসবেন টাকা ফেরত নিতে । না পেলে এক গুলিতে সাবাড় করে দেবেন জঞ্জালটাকে । পুলিশ কিচ্ছু করতে পারবে না । প্রভাতবাবুর টাকা আইনের থেকেও বড় !

পলাশ বাঁচতে চায় । তাই সে পালিয়ে গিয়ে এইসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে চায় । কিন্তু মা যে নাছোড়বান্দা । জেদি মা ছেলেকে কিছুতেই পালাতে দেবেন না । তাই চোখদুটিও যে আর বাঁধ মানে না । মায়েদের অশ্রুধারার বল যে প্রচুর । ছেলেদের জেদ সেখানে খাটে না । পলাশ পালাতে পারলো না ।

রাত যখন দশটা দশ, তখন বাইরে দরজার কড়া নাড়ার শব্দে পলাশ ও তার মা চমকে উঠলেন । পলাশ কে ঘরে একা রেখে তিনি দরজা খুলতে চলে গেলেন । প্রায় পাঁচ মিনিট পর মা প্রভাতবাবুকে নিয়ে যখন ঘরে এলেন, তখন এক দৃশ্য দেখে মা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন । আর প্রভাতবাবু ওখানেই ধপ করে বসে পড়লেন ।

ঘরের মাঝখানে চেয়ারটা মেঝেতে রয়ে আছে শোয়ানো আর পাখার সাথে দড়ি দিয়ে এক দেহ ঝুলছে । দেহটা এখন নিথর । এই পাঁচ মিনিটেই এতকিছু হয়ে গেছে ।

পলাশ মুক্তি পেয়েছে । কান্নার জলে ছেলেকে হারানোর ভয়ের কষ্ট টা এখন সত্যি । মায়ের কষ্ট মা-ই বোঝেন যে !



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy