Aniruddha Goswami

Abstract Fantasy

4.5  

Aniruddha Goswami

Abstract Fantasy

দ্য ক্যাট এন্ড মি এন্ড হলিডে

দ্য ক্যাট এন্ড মি এন্ড হলিডে

4 mins
340


দ্য ক্যাট এন্ড মি এন্ড হলিডে 

অনিরুদ্ধ গোস্বামী


কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা। কাল থেকে চেন্নাইয়ে তামিলনাড়ুর প্রধান উৎসব পোঙ্গল শুরু হচ্ছে তাই পরের চার দিন ছুটি। এদিকে কোনো প্ল্যান ই নেই। সন্ধ্যে তে জ্যাক ড্যানিয়েল এর একটা কালো টি শার্ট আর লাল বারমুডা পরে "বিনস ব্যাগের "ওপর বসে ব্যালকনি তে পা দুটো তুলে এইসব চিন্তা করছি। দেখছি গোধূলি বেলায় সূর্যাস্তের আগে চারিদিকে লোকেরা বাড়ি সাজাবে বলে খুবই ব্যস্ত। ভাবছি হারমোনিকা ক্লাবের একটা প্রোগ্রাম আছে সেখানেই চলে যাবো কিনা। মেরিন ড্রাইভে একদিন যাওয়া যেতে পারে বা নেটফ্লিক্স এ সিরিজ ও দেখা যেতে পারে। ধুসস্স এসবের কিছুই ভালো না ,এই এক মুশকিল ছুটি থাকলে একা কাটানো খুবই একঘেয়ে হয়ে যায়।

এসময় পুদুচেরির বিচ এর কথা মনে পড়ে । নীল সমুদ্র আর আইসক্রিম আর ফ্রেঞ্চ কলোনি। যেন স্বপ্নের এর শহর। বার বার ফিরে আস্তে বলে এই পুদুচেরি। এইসব ভাবছি আমার গলার সোনার চেন এর "N " লেখা লকেট টা তর্জনী দিয়ে ঘোরাচ্ছি। চিন্তার ঘোরটা কেটে গেলো যখন মনে হলো চেনটা আমার গলায় নেই ,আর হাতে লকেট টা ঘোরাচ্ছি ঠিকই কিন্তু পরের তিনটি আঙুলে নরম এক স্পর্শ। চমক অপেক্ষা করছে তখন কি জানতাম!

এটা কি হলো আমার লকেট বিড়ালের গলায়। আধো অন্ধকারে আমার ব্যালকনি যেন বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপ। আমি আধ সোয়া আছি ঠিক ই আর তার সাথে আভির্ভাব হয়েছে আমার সেই বেড়ালের। বাইরের কোনো কোলাহল বা আলো ইন্দ্রিয় গুলো ছুঁয়ে যাচ্ছে না। শুধু আমি আর বেড়াল আর নিস্তব্ধতা। অবশ্য বিড়াল আসলে এমনই হয়। আমার মুখের ওপর ঝুকে মোহময়ী হাসি হেসে বললো কেমন অবাক করে দিলাম নীল ? মনে মনে ভাবছি এবার আবার কি হয় ? লকেট আর চেন তো তারই কাছে চলে গেছে কোন জাদুবলে। আমি হাঁ করে আছি দেখে বিড়াল হাত ধরে বললো পোঙ্গালের ছুটিতে তো তুমি পন্ডিচেরী যাও ,আর আগেরবার তো এক একাই ঘুরে এসেছিলে আর লিখে ফেলেছিলে "আ পারফেক্ট প্যাসিফায়ার" । নিয়ে তো যাওনি আমায়। এবার নো রিস্ক ,কাল তো তুমি যাবেই আমি জানি আমিও যাবো তোমার সাথে। কাটানোর জন্য বললাম কিভাবে যাবে ? তোমার তো কোনো ড্রেস নেই।

কোনো আপত্তি টিকলো না ,দেখালো ড্রেস ও নিয়ে এসেছে। একটা নীল সিল্কি গাউন আরো কত কি সাজগোজের জিনিস। এরপর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সোজা আমার ঘরে ঢুকে গেল।

রাতে তার জন্যও ডিনার বানাতে হলো বিড়াল সাহায্য তো করলেই না "N " লেখা চেন টা পরে সারাঘর মিঁউ মিঁউ করে পায়ে পায়ে ঘুরে ঘুরতে লাগলো । মাঝে মাঝে গুন্ গুন্ করছে "নীল নীল আকাশে ..."গানটা।

ডিনারের পর শুয়ে পরেছি। বিড়াল কে আলাদা শোবার জায়গা দিয়েছি। চেন্নাই এ হালকা ঠান্ডা থাকায় পাতলা একটা কম্বল জড়িয়ে নিয়েছি।বিড়াল সোজা এসে কম্বলের মধ্যে সেঁধিয়ে গেল বললো নীল তোমার কাছে শোবো যাতে ভোরে উঠে আগেই না কেটে পড়ো। পাস্ বালিশ টাও ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমার গলা জড়িয়ে শুয়ে পড়লো। আমি একটু রেগে বললাম এভাবে হয় নাকি ? না শোনার ভান করে বিড়াল শুধু বললো বেশ হয়। আশ্চর্য মিনিটের মধ্যে নাক ডাকছে তার। দশ মিনিট পর কেউ আলাদা শুয়ে আছে মনে হচ্ছে না ,মনে হচ্ছে আমাতে সমাহিত। বিড়াল আসলে কত কি যে হয় ,ভেবে লাভ নেই।

ভোরে উঠে বেরিয়ে পড়লাম পন্ডিচেরী র রাস্তায়। বিড়াল পাশে বসে সিটটা পিছনে হেলিয়ে আরাম করে বসে পড়লো। নীল সিল্কি গাউন পড়েছে। পিছনে কাঁধের দিকে একটা রঙিন ট্যাটু যথেষ্ট সাহসিক বলতে হবে। কাজল চোখে র মেকাপ দেখে যে কেউ ভিরমি খেয়ে যাবে। গাড়িতে উঠে পা দুটো ড্যাশবোর্ড এর উপর তুলে দিলো। দেখতে পেলাম গাউন টা ডান পায়ে মাঝ বরাবর ঝুলছে । বিড়ালের কোনো হেলদোল নেই। বাড়ির সামনে পেট্রল পাম্প গাড়িতে তেল ভরার সময় স্টাফ মেয়েটি একবার আমাকে মেপে নিল। আজ গাড়ি চালাতে হবে সাবধানে আর সঙ্গে নিতে হবে সেই "পারফেক্ট প্যাসিফিয়ার " কে।

পোঙ্গাল এর জন্য রাস্তায় এমনিতেই ভিড় কম। বিচ রোড ধরে এগোচ্ছি। এর মধ্যে কিছু লোক প্রাতঃ ভ্রমণ এ বেরিয়ে পড়েছে। ইস্ট কোস্ট রোড ধরে যাবো। লাইট হাউস এর কাছে এসে গাড়িটা আস্তে করে দিলাম। বিড়াল বলল নীল থেমে যাও। বললাম কেন ? বিড়াল বললো যারা যাচ্ছে যেতে দাও। দেখলাম একটি ছোট্ট মেয়ে তার বাবার হাত ধরে রাস্তা পেরোচ্ছে ,লাল ফ্রক পরা , ছোট ছোট পায়ে নাচতে নাচতে।তার বাবা তার ডান হাত টি ধরে আছে। বাবার কাঁধে দুটি কালো আখের গোছা ।মনে হয় পোঙ্গালে লাগবে বলে নিয়ে যাচ্ছে। আখের ডগায় ডাগর সবুজ পাতা গুলো এখনো তাজা।

চলার তালে তালে আখ গুলো দুলছে ,আমার মনে হলো মেয়েটির খুশিতে আখ গুলো তাল মেলাচ্ছে। তাদের পোঙ্গাল খুবই খুশি তে ভরা হবে। যতক্ষণ তারা রাস্তা টা পেরোলো ততক্ষন চেয়ে থাকলাম।

বিড়াল কে ধন্যবাদ দিলাম,সে না থামতে বললে এমন সাধারণ অথচ অপরূপ দৃশ্য দেখা হতো না। বিড়াল চোখে চোখ রেখে বললো নীল আমি আছি তুমি চালাও নিশিন্তে। আরো বললো আজ সেলিন এ পানাহার করে বিচে গিয়ে নাচবো। যদিও নীল জল কালো থাকবে আর পাশের দুনিয়া টা বদলে যাবে বিড়াল থাকলে, এড়ানো যাবে না । বিড়ালের বাদামি চোখে নীল সমুদ্রের গভীরতা। পাড়ে বসে এর শোভা দেখবো না ডুব দেব ? "প্যাসিফিয়ার ও কাজে আসবে বলে মনে হচ্ছে না। এ যে সেই মোহময়ী চাহনি। চোখে চোখ রেখেই বিড়াল নিজের চুল গুলো চোখ থেকে সরিয়েই মিউজিক সিস্টেম এ চালিয়ে দিলো "নীল নীল আকাশে চাঁদ ওই যখন আসে ....। ডুব ই দি ....


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract