দুটি মুরগীর গল্প
দুটি মুরগীর গল্প
বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে সাতটা। পেট্রল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, রাস্তা পার হবো। হঠাৎ এক মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক হিন্দিতে কিছু জিগ্গেস করলেন। চোখটা কুঁচকে না বোঝার অভিব্যক্তি নিয়ে তাকালাম। বললেন,
-----হিঁয়াসে শিয়ালদা যানেকা বাস মিলেগা? বেটা হিন্দি সমঝতে হো?
হ্যাঁ, হিন্দি বুঝি বলাতে তিনি হিন্দিতে যা বললেন, তাতে বুঝলাম তাঁর ওয়ালেটটি খোয়া গেছে। বাড়ি ফেরার সঙ্গতটুকুও নেই। তাই তিনি অমার কাছে একটু সাহায্য প্রার্থনা করছেন।ভর সন্ধ্যাবেলা, শুনেছি নাকি মহাদেব নানা রূপে আসেন মানুষের পরীক্ষা নিতে, তাই মায়াও হল।
জিগ্গেস করলাম,
----কত লাগবে?
বললেন গোটা পঞ্চাশেক হলেই যথেষ্ট। 'ঠিক হ্যায়, কোই বাত নেহি' ইত্যাদি বলে টাকাটা দিয়েই ফেললাম।
বিনিময়ে অবশ্য প্রচুর আশীর্বাদ জুটল। যাই হোক, মনে যদিও একটা দ্বিধা ছিল, তবু মনকে বোঝালাম, মানুষকে অবিশ্বাস করা পাপ!
এই তো গেল একটা মুরগীর কথা। শিরোনামের প্রথম মুরগীটি যে আমি স্বয়ং সে তা নিশ্চয়ই সবাই বুঝে গেছে!
হপ্তা দুয়েক পর, সেই একই জায়গা, আবার সেই গলা,
---বেটা হিন্দি সমঝতে হো?
ঘুরে তাকিয়ে দেখি সেই মক্কেল, আবার আমার কাছেই এসেছেন! কিন্তু তিনি অনতিদূর অতীতে যে আমাকেই বোকা বানিয়েছেন, সেই বোধের ঊর্ধে। বললাম,
----আবার হারিয়েছ নাকি??
এবার মনে হয় বুঝতে পেরে দেখি উল্টোদিকে হাঁটা লাগালো। এ হল সেই দুনম্বর মুরগী যে একই টোপ দুবার গাঁথতে গেল! এবার আমি খুশি হব নাকি দুঃখ পাবো এটা ভাবতে ভাবতে কনফিউজড হয়ে গেলাম।
(সমাপ্ত)