Ritu kundu

Classics Inspirational

4.1  

Ritu kundu

Classics Inspirational

ধর্ষন

ধর্ষন

6 mins
537



আমি এবার নিজে কী মনে করি না করি আর এই মারাত্মক শব্দটা কতটা ক্ষতিকারক আর -এর সূত্রপাত কোথায় সেটা একবার দেখে নি....


ধর্ষন নামটা হয়তো ছোটো কিন্তু -এর প্রভাব যে কতটা এটা শুধুমাত্র একজন নির্যাতনের শিকার নারী ই বলতে পারবে। নারী এই জন‍্য বলছি কারন আমরা এখনো পুরুষদের ধর্ষিতা ( ধর্ষিতায় লিখলাম কারন আমি এখনো মেল ভারশন কী হতে পারে সেটা জানা নেই ) হওয়ার ছবি দেখতে অভ‍্যসত হয় নি।

আচ্ছা একজন ধর্ষকের জন্ম কোথায় হয় বলুনতো?সে কী অন‍্য গ্ৰহ থেকে আসে?, না সে অন‍্য কোথাও থেকে আসে না,সে আমাদের আশে-পাশেরই কেউ কিংবা আমাদের বাড়িতেই তৈরী হচ্ছে কোনো মেয়ের ধর্ষক।


ধর্ষক তৈরী হতে কোনো ডিগ্ৰীর প্রয়োজন হয় না, প্রয়োজন হয় সঠিক শিক্ষার অভাব,অতিরিক্ত মা-বাবার ভালোবাসার,অঢেল ক্ষমতার, একটা পুরুষ তান্ত্রিক সমাজের যেটা গড়েছে একজন নারী।


একটি মেয়ের ধর্ষিতা হওয়ার পিছনে সব থেকে কার হাত বেশি জানেন একজন নারীর।কারন একজন নারী নিজেকে সম্মান দিতে জানে না সে সব সময় নিজেকে অবলা,দয়ার পাত্রী সাজিয়ে রাখতে বেশি পছন্দ করে তাহলে বলতে পারেন অন‍্যজন তাকে কী করে সম্মান দেবে। হ‍্যাঁ এবার হয়তো বলবেন না আমরা এখন অনেকটাই এগিয়েছি নিজেরা চাকরি করি,নিজস্ব নাম আছে পরিচয় আছে সেটা কতজনের আছে, আমাদের দেশের সংখ‍্যার হিসাবে যদি দেখা যায় তাহলে হয়তো সেটা প্রতি ১০০০জনের মধ‍্যে একজন নারী আছে,যে সে নিজেকে সম্মান দেই তবুও পরে সে যদি বিয়ে করে নেই তবে তার সেই সম্মানটাও কিছুদিন পর বিসর্জন দিয়ে দেয়।


আমাদের সমাজে যে ধর্ষিত হয় সে ঘরের এক কোনে লুকিয়ে থাকে কিংবা তাকে মেরে দেওয়া হয়। আর যে ধর্ষন করে সে বুক ফুলিয়ে আপনার চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায় তবুও তাকে আমরা ঘরের মধ্যে বা সমাজের মধ‍্যেই রাখি কিন্তু যে পরিবার ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেস লড়ছে তাকে আমরা সমাজ থেকে বের করে দিই তাকে বাধ‍্য করি তিনি জেনো তার অভিযোগ উঠিয়ে নেন।


কোনো ধর্ষিতাকে যদি মেরে দেওয়া হয় তখন আমরা এক হয়ে প্রতিবাদ করি। সেটা করি কতোদিন কমপক্ষে হলে একদিন আর সবচেয়ে বেশিদিন হলে একমাস...তারপরে আবার আমরা সেটা ভুলে যায়। ভুলে যায় আমরা যে আমরা এক শিক্ষিত মানুষ,ভুলে যায় আমরা এই সমাজে মেয়েদের গুরুত্ব কতটা,ভুলে যায় আমরা যে আমাদের পরিবারেও একটা মেয়ে জন্ম নেবে সে ও একদিন ধর্ষিতা হবে।


আচ্ছা একটা মেয়ে ধর্ষন হওয়ার পেছনে আমরা কি কি কারন দি??

উত্তর সেই আদিম কাল থেকে চলে আসছে মেয়েদের শরীর,মেয়েদের পোশাক,মেয়েটার চালচলন...আদেও কি এটা কোনো কারন।


না আমার মতে না কারন আমরা যখন কোনো জিনিসকে খারাপ বা ভালো বলে ভাগ করি তখনই সেটা ভাগ হয় তার আগে কিন্তু হয় না।


আচ্ছা সব ধর্ষন রাতের কালো অন্ধকারে হয় বলে মানুষ ওই মেয়েটাকে সাহায‍্য করতে পারে না ??

প্রথমত ধর্ষনের কোনো সময় নেই, যে কাজ রাতের অন্ধকারে হয় সেই কাজ সূর্যের আলোতেও হয় আর আমাদের যা পপুলেশন তাতে আমার মনে হয় না যে এমন নীচ ঘটনা ঘটছে তাদের আশে-পাশে আর তারা জানতে পারছে না মিডিয়ার কাছে না পৌঁছা অব্দি।

আসলে জিনিস গুলো যখন ঘটতে দেখে আশেপাশে তখন তারা এটা বলে এড়িয়ে যায় আমরা ঝামেলায় জড়াতে চাই না নিজেদের পরিবারের দোহায় দিয়ে চোখ বুজে কান বন্ধ করে পেরিয়ে চলে যায় জেনো তারা কিছু বুঝতেই পারেননি।

অনেকের হয়তো এতোটা পড়ে মনে হচ্ছে যারা এইসব করে তাদের গালে চড় বসানো উচিত কিন্তু সরি স‍্যার/ম্যাম সেটা আপনি পারবেন না কারন আপনিও যখন ওই মূহুর্তের সম্মুখীন হবেন আপনিও সেই একই কাজ করবেন আর যদি আপনি আমাকে মিথ‍্যা প্রমান করতে পারেন তাহলে আপনি পুরুস্কার সরূপ একটি মেয়ের জীবন বাঁচিয়ে দিলেন।


আমি আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ করবো যে ধর্ষনের প্রতিবাদ সরূপ ডিপি কালো করে,কোনো পোষ্টের কমেন্টে গিয়ে এটা বলবেন না যে ধর্ষককে ফাঁসি দেওয়া হোক বা তার গোপন অঙ্গ কেঁটে দেওয়া হোক বা সাধারণ মানুষের হাতে দিয়ে দেওয়া হোক।

আমি এইসব করতে এইজন্যই বারন করছি কারন আপনার এইসব করে না মেয়েটি ফিরে আসবে, না ধর্ষন বন্ধ হবে।


পারলে যেটা করে ধর্ষক তৈরী বন্ধ হবে সেটা করুন কারন যে ধর্ষক তার ও একটা পরিবার আছে তার ওই নীচ কর্মের জন‍্য তার পরিবার কেউ ভুগতে হয়।


ধর্ষক তৈরী বন্ধ হবে কীভাবে??


বাচ্চার বড়ো হওয়াতে নজর দিন ভুলকে ভুল আর ঠিক কে ঠিক আপনি আগে নিজে বলতে শিখুন কারন আমরা যেটা সব থেকে বেশি করি সেটা হলো ভুল আর ঠিককে মানুষ বিচারে ভেদাভেদ করি।নিজের বাচ্চার ভুলটাও ভুল বলুন নাকি ঠিক কারন আপনি ভাববেন ও তো ছোটো থাক না বড়ো হয়ে ঠিক হয়ে যাবে,না সে ঠিক হবে না কারন একটি বাচ্চা যেটা একবার শিখে যায় সেটা আর ভুলে না তার ফলে তার সব ভুল সে ঠিক মনে করবে।


বাচ্চাকে বড়োদের বা আশে-পাশের সবাইকে সে আপনাদের গরীব কিংবা অন‍্য জাতেরই হোক না কেনো সম্মান সবার অধিকার তাই তাকে মানুষকে সম্মান দিতে শেখান,আর আপনি যদি এটা না করেন তাহলে আপনার বাচ্চা আপনাকেও একদিন সম্মান দেবে না সেদিন আপনার কাছে উত্তরে বলার জন‍্য কিছু থাকবে না।


বাচ্চা যখন যেটা চাইবে তাকে সেটা দেবেন না যদি সেটা খুব দরকারি না হয় কারন আপনি তার সাথে সারা জীবন থাকবেন না তারফলে তাকে প্রত‍্যেক জিনিষের মূল‍্য বুঝতে হবে।


নিজের টাকা কোনোদিন বাচ্চাকে দেখাবেন না আর টাকার বেআইনি ব‍্যবহার তো ভুলেও না কারন সে যদি কোনো খারাপ কাজ ও করে তাহলে সে এটা ভাববে তার পরিবারের কাছে টাকা আছে আর তারা তাকে উদ্ধার করে নেবে।


আমাদের পাড়ায় যে কাকিমাগুলো এর ওর বিচার করে তাদের থেকে একটু দুরেই রাখবেন বাচ্চাকে।


নিজের চাকরি ছাড়াও দিনের বাকি সময়টা বাচ্চাকে দিন তাকে বুঝতে শিখুন,তার উপর লক্ষ‍্য রাখুন যে সে কোনো খারাপ জিনিসের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে না তো কারন আপনার হাতের ফোনটা অনেক খারাপ কাজেও লাগে।


বাচ্চার কোনো দোষকে লুকোবেন না সেটা ছোটো হোক বা বড়ো।


এইরকম অনেক কিছু আছে যেটাতে আপনার ছেলেকে একজন মেয়ের ধর্ষনকারী হওয়ার থেকে রক্ষা পেতে পারে।

আর অনেক তো মুখে বললেন ছেলে মেয়ে তে ভেদাভেদ করেননা দয়া করে এবার কাজে করে দেখান আপনার ছেলেকে করা একটা চড় কোনো মেয়েক বাঁচিয়ে দিতে পারে।


আমি ফেসবুকের অনেক কমেন্টে অনেক ছেলেকে বলতে দেখেছি যে আপনি হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী আর সব ছেলেকে মেরে দেন তাহলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে এটা কী ধরনের কথা বলুনতো আমরা তো ধর্ষক শেষ করতে চাই পুরুষ জাতিকে তো শেষ করতে চাই না।


যে মেয়েটা ধর্ষিতা হয় তার ও বাড়িতে বাবা আছে ভাই আছে আর যে ধর্ষক তার বাড়িতেও মা আছে বোন আছে তাও তো ধর্ষন হচ্ছে।


সমাজে অনেক ধরনের মানুষ আছে আপনি সব মানুষকে পরিবর্তন করতে পারবেন না কিন্তু নিজের বাড়িতে তে তো করতে পারবেন তাহলে চলুন আজ থেকেই পরিবর্তনটা নিজের বাড়িতে আনা শুরু করি দেখবেন একদিন দেশ ও পরিবর্তন হয়ে গেছে।


মেয়েটার কতখানি দোষ আছে কিনা জানা নেই একটা ধর্ষন কান্ডে তবে আমি এটা দেখেছি মা-বাবা কোনো টিউশনিতে রাতের ব‍্যাচে যেতে মানা করতো যখন জিজ্ঞাসা করতাম কেনো যাবো না তখন উত্তরে বলতো বাইরের পরিবেশ ভালো না তখন আমি উত্তরে বলতাম কেনো ভালো না ওই নীচ ছেলেগুলোর জন‍্য আমি বেরোবে না আমি টিউশনি যাবো তখন তারা বলতো না যাবি না আমি আরো জেদি আমি বলতাম তাহলে ওই ছেলে গুলো ওদের ওই মেন্টালিটি নিয়ে বাড়িতে বসুক আমি তো যাবোই।

আমার বাড়িতেও ভাই আছে আমার থেকে সাত বছরের ছোটো আমি জানি না বড়ো হয়ে কি তৈরী হবে তবে আমি বা আমার পরিবার এটাই চেষ্টা করবো যে ও কোনো মেয়ের ধর্ষিতা হওয়ার কারন না হয়ে উঠে।


দয়া করে কমেন্টে এটা কেউ বলবেন না আইন ঠিক হলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে আমার মতে সেটা শুধু আমরা জিনিসটাকে দুরে সরানোর জন‍্য বলি ।


আমার এই লেখাটা অনেকের খারাপ লাগতে পারে কিন্তু একবার সত‍্যিকারের মানুষ হয়ে একবার ভেবে দেখুন আমি কী কিছু ভুল বললাম।


ভালোবাসা,শাসন সব কিছু ভালো কিন্তু সব কিছুরই একটা পরিমান আছে অতিরিক্ত সব কিছুই ক্ষতিকর।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics