মর্ডান মানুষের মর্ডান সমাজ
মর্ডান মানুষের মর্ডান সমাজ
আমরা ২০২১-এ বাস করছি,আমরা নানাধরনের গেজেট ইউস করছি কিন্তু মানসিকতা সে কী মর্ডান হয়েছে।সে তো ১৯৪৭ সালেই পড়ে আছে আর যারা মর্ডান হয়েছে তারা অতিরিক্ত হয়ে গেছে আর যারা হয়নি তারা একদমই হয়নি।
আগেকার দিনে যেমন পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ছিলো আর এখনও সেই আছে তবে কিছু মানুষ লড়াই করছে যারা লড়ছে তারা নিজেদেরকে নারীবাদী বলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে জায়গা চাইছে।আমি বলি কি আমরা নারী আমরাই তো একটা প্রজন্মের জন্ম দিই আমরা কি এতই দূর্বল যে আমাদের জায়গা দিতে হবে আমরা কি নিজের জায়গা নিজে করে নিতে পারি না...
আমরা তথাকথিত মর্ডান হয়েছি মানসিকতা টা মর্ডান করতে পারিনি না হলে এখনও আমরা একটা ছেলেকে নাচ করতে বা মেকাপ আর্টিস্ট হতে দেখলে তার লিঙ্গ নিয়ে কথা বলি,না হলে একটা মেয়েকে বা ছেলেকে তার গায়ের রং নিয়ে বাজে মন্তব্য করি,তার ওই গায়ের রংয়ে তার সব গুন গুলোকে না দেখার ভান করি।
আমরা এতোটাই মর্ডান হয়েছি যে নিজের জামায়ের সাহায্যকে বলি ভাগ্য করে জামায় পেয়েছি আর ছেলের করা তার শশুর বাড়ির সাহায্য কে বলি ছেলে আমার বউ পাগল।
আমরা এতটাই মর্ডান হয়েছি যে পিঠে এতো এতো ডিগ্রীর বোঝা থাকা সত্তেও সামাজিক শিক্ষার বোঝাটাকে ফেলে দিয়েছি তাই সোসাল মিডিয়াতে বৃদ্ধাশ্রমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় আবার নিজের বাবা- মাকে অবহেলা করি।
আমরা মর্ডান বলতে বার বার ওয়েষ্টার্ন ড্রেস,মুখে ইংরেজি কথা,কিছুটা আত্ম অহংকার, আর কিছু টা স্বার্থপরতাকেই বুঝি কি তাই তো।আমরা মর্ডান বলতে এটা বুঝিনা যে সবার অধিকার সমান সে সাদা হোক কিংবা কালো,আমরা এটা বুঝিনা যে সে নিজের মা- বাবা হোক বা অন্যের সে তো মা-বাবা তাই না।
আমার মতে আমরা যখন ২০২১ সে বাস করছিই তখন একটু নিজেদেরকে মন ও মাথা দুদিক থেকেই মর্ডান হওয়া উচিত।আমাদের নীচু মানসিকতা গুলোকে নিজের পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা উচিত সেটাকে এই ভাবে জনসম্মুখে আনা মর্ডান মানুষের কাজ না।মর্ডান মানে এটাই না যে বড়োদেরকে সম্মান করবো না,মর্ডান মানে এটা না যে নিজের নিজস্বতাকে বিসর্জন দিয়ে সামনে থাকা মানুষটার মতো অতি মর্ডান হওয়ার চেষ্টা করবো,মর্ডান হওয়া মানে এটাও না যে মানুষকে ছোটো চোখে দেখবো।
১) আমরা যদি একটু মন দিয়ে নিজেদের চারপাশটা বা নিজেকে যদি দেখিনা তাহলে আমাদের এই তথাকথিত মর্ডান হওয়াতে কত ভুল করেছি সেগুলো দেখতে পাবো কিন্তু আমরা কি সেটা করি,আমরা কি করি নিজের ভাবনা না ভেবে অন্যের ভুল গুলো খুঁজে বেড়ায়।
২) আমরা তো শব্দভাণ্ডারে যে একটা শব্দ ছিলো একতা বলে সেই শব্দটাকে আর মর্ডান মানুষের মর্ডান সমাজে জায়গা দিয়ে উঠতে পারিনি ঠিক তাই তো?
৩) আমরা মর্ডান মানুষেরা অন্যের বিপদে দাঁড়াতে চাই না অথচ নিজের বিপদে কেউ না দাঁড়ালে অনেক অনেক খারাপ কথা বলি তাদের,তাদের স্বার্থপর বলি।আমরা এটা একবার ও ভেবে দেখি না যে আমরা কি আদেও ভালো যে তাদের স্বার্থপর বলছি।
৪) আমরা মর্ডান মানুষেরা এটা জানি যে মরার সময় সাথে কিছুই নিয়ে যাবো না তাও টাকা টাকা করে পরিবারকে ভুলে যায়।যে টাকার জন্য পরিবারকে খুশি রাখতে চাই সেই টাকা রোজগারের সময় পরিবারকেই বারবার কষ্ট দিই।
৫)আমরা মর্ডান মানুষরা পরিবার বলতে নিজের স্বামী, একটা বা দুটো ছেলে - মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকাটাই বুঝি।
৬)আমরা টাকা রোজগার করি কিন্তু সেই টাকা থেকে অল্প কিছু দিয়ে মানুষকে সাহায্য করতে চাই না কারন তাতে যে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
৭) আমরা মর্ডান হয়েছি তাই এখনো ছেলে -মেয়ে এক এটা বার বার মুখে বলে চলেছি কাজে এখনও করে দেখাতে পারিনি।আমরা মতে এক হওয়ার কিছু নেই দুটো লিঙ্গ ই মানুষ শুধু কিছু শারীরিক চেঞ্জের জন্য আলাদা, তাছাড়া আর কিছুই না।আসলে বুঝতে অনেকটা সময় লাগছে তাই এই ছোটো বিষয় গুলোকে নিয়ে পড়ে আছি।
৮) আমরা কোনো ভালো কাজের মধ্যে যদি নিজের ভালো জড়িয়ে না থাকে তাহলে আর সেটাকে ভালো বলেও গন্য করি না...
৯) আমরা আসতে আসতে এই মর্ডান সমাজের সাথে তালে তাল মেলাতে গিয়ে আর করোর চোখের জলের দাম দিতে চাই না,বাংলা সিরিয়ালের ভিলেনের ফেক চোখের জল ভেবে নিই।
১০) আমরা সিরিয়ালে কোনো অবলা নারী দেখলে তাকে প্রতিবাদ করার জন্য বলি এটা ভুলে যে ওটা সিরিয়াল,আর বাড়ির মেয়ে বা বউমা কে প্রতিবাদী হতে বারন করি এটা জেনেও যে এটা বাস্তব।
অনেক কিছু বললাম,আপনাদের কে শুধু এটাই বলতে চাই যে মর্ডান হোন ক্ষতি নেই তবে সেটাতে যেনো কারো ক্ষতি না ,সেটা কারোর দুঃখের কারন যেনো না হয়।
আর আমাদেরকে নিয়েই তো এই সমাজ সব কথাতে সমাজকে দোষ দেবেন না,দোষটা দেবেন নিজেকে কারন আমার জন্য আপনি সমাজ আর আপনার জন্য আমি তাই কেউই যদি কারোর ব্যপারে মাথা না গলায় তাহলে এই সমাজ ও অচল।সব কিছুর খারাপ দেখার আগে তার ভালোটা দেখুন তারপর খারাপটা।কিছু তৈরি হতে অনেক সময় লাগে কিন্তু ভেঙে যেতে মাত্র কিছু সেকেন্ড।
মর্ডান হওয়াটাকেও ভালো কাজে লাগান আর মর্ডান সমাজটাকেও,এইভাবে কোনো জিনিস শেষ হয়ে যেতে দেবেন না।
লেখাটা কেউ খারাপ ভাবে নেবেন না আমার আপনার কিছু করে যাওয়া প্রতিদিনের ভুল গুলো তুলে ধরে ভবিষ্যতের জন্য কিছু ভালো রেখে যাওয়ার চেষ্টা আর কি...