ডেঙ্গু
ডেঙ্গু
রক্তের গন্ধ যেখানেই পায় ওরা সেখানেই ছোটে ।
রক্ত যে ওদের খাদ্য । কিন্তু ওদের শুন্ডে আছে
ডেঙ্গুর জীবানু । যাকেই কামড়াবে সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে । ওদের বাস জমা জলে । ওরা ওখানে
বংশ বিস্তার করে । জল তো অনেক জায়গায় জমে
থাকে । আস্তাকুড়ের ভাঙ্গা ভাঁড়ে , ডাবের খোলায়-
গাড়ি সারাই এর দোকানে । পুরানো টায়ারের খাঁজে জল জমে থাকে । থানার উঠোনে যেখানে পুরানো
গাড়ি গুলো বহুদিন ধরে ডাঁই হয়ে পড়ে আছে
সেখানেও ডেঙ্গু মশার জন্ম হয় । বড়ির উঠোনে গাছ পালা থাকলে সেখানেও মশা আরামে থাকে ।
বড়ির ভেতর থেকে যে ড্রেন রাস্তার ড্রেনের সাথে
মিশছে সেখানে এবং বাঁকের মুখে জল জমে থাকতেই পারে । এই সমস্ত ড্রেনে যেন জল না জমে
সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে সকলকে ।
দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ , দেশের সরকার খুব সচেষ্ট।
এবং সচেতন । করপোরেশনের সাফাই কর্মী ভায়েরাও ড্রেন পরিস্কার করছেন । মশা মারার তেল স্প্রে করছেন । তবুও ডেঙ্গু মশা কে কাবু করা
যাচ্ছে না । ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে । তার
সাথে ঘটে চলেছে অবাঞ্ছিত মৃত্যু ।
মৃত শিল্পী যখন মন্ডপে প্রথম ঠাকুর গড়তে এলেন
তখনই ক্লাব কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটা নিয়ে বেশ চিন্তা
ভাবনা করলেন । শিল্পী যেখানে ঠাকুর গড়েন
সেখানে শিল্পী একা থাকেন না । থাকেন তিনি ও
তাঁর সহকারি । আর দেখার লোক থাকে অনেকজন । পাড়ার কচিকাঁচা থেকে বুড়ো অনেকেই ।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওরা ঠাকুর গড়া দেখে । সেই কাঠামো থেকে চক্ষুদান পর্যন্ত । আর ঠাকুর গড়া
কাজ টা একদিনে হয় ও না । অনেক দিন ধরে ধাপে
ধাপে কাজটা এগোয় । এবং সেখানে শিল্পীর খাবার
জল । কাজের ব্যবহারের জল । রং তুলির জল ।
হয়তো আগের দিন চা খেয়েছিল সেই ভাঁড় একধারে আজও পড়ে আছে , এরকম হয়েই যায় ।
মানুষের রক্তের গন্ধে ডেঙ্গু মশা সেখানে ভিড় জমাতেই পারে । শিল্পীও আক্রান্ত হতে পারেন ।
ক্লাব কর্তৃপক্ষ দশ ফুট বাই বারো ফুট একটা মশারি
অর্ডার দিয়ে করিয়ে আনলেন । শিল্পী যখনই কাজে
যোগ দিতেন ঐ মশারিটা খাচিয়ে দিয়ে তার মধ্যে
উনি নিশ্চিন্তে কাজ করতেন । আর যারা কাজ দেখতো কচিকাঁচারা তাদের জন্য থাকতো পেডেসটেল ফ্যান একটু দূরে । যাতে সরাসরি মশা
এসে আক্রমন করতে না পারে । আমরা যদি জল
জমতে না দিই বাড়ির আসে পাশে এবং সকলে
সচেতন থাকি । তাহলেই ডেঙ্গু মশার হাত থেকে
শুধু নিজেদের নয় সমাজ কেও বাঁচাতে পারব ।
এই আশা টুকু রাখি । অভিনব কায়দায় মশারির
ভিতরে থেকে - বর্ষার হাত থেকে বাঁচার জন্য
থাউসান্ড পাওয়ার আলো জ্বেলে আপন মনে কাজ
প্রায় শেষ করে ফেললেন শিল্পী ।
পুজো তো এসেই গেলো । পুজোর দিন কটা সকলের খুব ভালো কাটুক । এই শুভ কামনা রইলো । ডেঙ্গু মশা নিপাত যাক ! নিপাত যাক !
..................................................................
