শান্তি-অশান্তি
শান্তি-অশান্তি
শান্তি-অশান্তি
অশান্তি কত রকমের আছে ? এর উত্তর দেওয়া খুব শক্ত । সহজ কথায় বলতে পারি অশান্তি বহু
রকমের । প্রথম -- স্বামী স্ত্রীর অশান্তি ! এতো ঘরে
ঘরে । এ অশান্তি তপ্ত কড়াই য়ে জলের বুদবুদের মত । ওঠে আবার মিলিয়ে যায় । আর যেটা মিলায়
না - তার পরিনতি খুব খারাপ । শেষ গন্তব্য আদালত । সেখানে নিষ্পত্তি ঘটবেই ।
রাজনৈতিক অশান্তি ----। এ তো অশান্তি নয় । এ
দাবানল । চর্তুদিকে লেগেই আছে । যদিও বা একটা
কোন রকমে একটু স্তিমিত হচ্ছে পরক্ষনেই আবার
কোথাও না কোথাও একটা নতুন তৈরি হয়ে যাচ্ছে ।
এ অশান্তি মিটবার নয় ।
খেলার মাঠে অশান্তি । কোন খেলোয়াড় থাকবে,
কোন খেলোয়াড় থাকবে না । ওকে কেন বাদ দেওয়া হলো ....। যিনি থাকছেন তিনি হয়তো কারো মদত পুষ্ট । যিনি থাকছেন না তাঁর হয়তো
সাপোর্ট কম । এই রকম কত শত ব্যাপার কাজ করে । হাটে বাজারে খুচখাচ বিষয় নিয়ে কতই না
অশান্তি লেগে যায় নিত্য । আবার মিটেও যায় ।
শুধু গ্রামে নয় শহরেও দেখা যায় কোন বয়স্ক পুরুষ
বা মহিলা কোন বিশেষ ইঙ্গিত বা কোন বিশেষ কথা
বললে রেগে যান ,এটা কোন ভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
আর যায় কোথা । শুরু হয়ে যায় অশান্তি ....।
অফিসে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের তো অভিজ্ঞতা
ভালো এ ব্যাপারে , অফিসের কাজ মানে একঘেয়েমি । সেই একঘেয়েমি কাটাবার জন্য
কৃত্রিম অশান্তি তৈরি করা হয় পিছনে লেগে ।
আজ একটা নতুন অশান্তির সাক্ষী হলাম । সেটাই
বলছি । গল্প একই রকম । বাজারে গিয়েছিলাম ।
বেশ সকাল । আকাশের মুখ তো গোমড়াই ।
অন্ততঃ আবহাওয়ার খবর সেই রকমই । আজ অবশ্য ছাতা নিয়ে গেছি । দু একটা জিনিস কেনার
পরেই শুরু হলো টিপ টিপ । ব্যাপার সুবিধের নয়
বুঝে একটা আশ্রয় খুজলাম। বেশিদূর যেতে হয়নি।
নিকটেই একটা শিবদুর্গা মন্দির আছে । ওখানে
তিরপল দিয়ে অনেকটা জায়গা ঘেরা । ওখানেই ঢুকে পড়লাম । যথারীতি দেবদর্শন ও বৃষ্টিদর্শন
দুটোই একসাথে চলতে লাগলো ।
যেহেতু বলেছি মন্দির কাজেই সকাল বেলা দু একজন মহিলা স্নান সেরে ভেতরে ঢুকে ফুল ও ধূপ
দান করে গেলেন । তারপর একজন বৃদ্ধা এলেন ।
তিনি দেখছি আপন মনে চিৎকার করছেন । .......
এতো ধূপ দেওয়ার সখ কিনেই দাও না । পাঁচ টাকা
তো দাম ।......ইত্যাদি .... ইত্যাদি ।
আমি থাকতে না পেরে জিজ্ঞাসা করলাম , কি হলো
ঠাকুমা ?
এবার ঠাকুমা বললেন ....আর বাবা , কি বলবো
এখানে ধূপের প্যাকেট রাখা থাকে । যে আসছে সেই এখান থেকে ধূপ নিচ্ছে আর জ্বেলে দিয়ে
চলে যাচ্ছে । এতো যদি ধূপ দেওয়ার সখ তো কিনেই দাও না । পাঁচ টাকা তো দাম । ঠাকুমা
বলেই চলেছেন । ওঁকে থামাবার ক্ষমতা আমার
নেই । আমি চুপ করেই রইলাম । যিনি এ কাজ করছেন তিনি অনুচিত কাজ ই করছেন। পরের
দ্রব্য না বলে নেওয়া মানে চুরি ।সে তো আমরা
ছেলে বেলায় পড়েছি । তবে দেবতাকে ধূপ কিংবা
ফুল চুরি করে দিলেও তা কিন্তু পাপ বলে গণ্য হয়
না । সে যে দেব্তার জন্য করছে ।
ভোর বেলায় উঠলে ফুল চোর প্রচুর দেখা যায় ।
এর ওর বাগানে পাচিরেরধারে হাত বাড়িয়ে ফুল
চুরি করছে ।পাপের থেকে পূন্য ই বেশী হয় ওদের ।
ঠাকুমা তখনও দাঁড়িয়েছিলেন । চীৎকারও করছিলেন ।
আমি বললাম , ঠাকুমা তাহলে আমিও
একটা ধূপ দিয়ে দিই । সবাই যখন দিচ্ছে ।
ঠাকুমা হাসতে হাসতে বললেন ---দাও ।
আমিও ঠাকুমার সাথে হাসলাম ।
ঠাকুমার মন টা একটু শান্ত হলো ।
...................................................
