Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Action Thriller

4  

Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Action Thriller

বৃত্তের বাঁধনে (Part 8)

বৃত্তের বাঁধনে (Part 8)

7 mins
257


ভরদি :

----------

ঢেউ দুপুরের খাবারের খেতে ডাকার জন্য Study Room-এ ঢুকে দেখে সমুদ্র অস্থিরভাবে গোটা ঘরে পায়চারি করছে... স্থিতধী সমুদ্রের এরকম অস্থিরতা দেখে ঢেউ বেশ অবাকই হয়... সে ধীর পায়ে এগিয়ে এসে সমুদ্রের সামনে দাঁড়ালে সমুদ্র ক্ষণিকের জন্য যেন চমকে ওঠে... ঢেউ স্মিত হেসে বলে,

ঢেউ : কি !!! ধ্যানে বিঘ্ন ঘটালাম !!!

সমুদ্র : আরে না না... কি যে বলো না তুমি ঢেউ !!

ঢেউ : তা স্থিরধী প্রশান্ত মহাসাগরে হঠাৎই এমন সুনামীর উত্তালতা কেন !!! তুমি তো আর ঢেউ নও যে, বঙ্গোপসাগরের মতো দৈনিক দু'বার জোয়ার ভাটা হবে...

সমুদ্র : তে... তেমন কিছু না ঢেউ...

ঢেউ : তাহলে কিছু তো হয়েছে !!! বলা যাবে কি আমাকে !!!

সমুদ্র : কোনো হিসেব মিলছে না ঢেউ... বড় অসহায় লাগছে নিজেকে... তোমার শরীর ঠিক হচ্ছে না... স্যারের খুনের কারনটা খুঁজে পাচ্ছি না... সব... সব কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে...

ঢেউ : তুমি আমাকে নিয়ে এত কেন ভাবো বলো তো !!!

কথাটা বলেই ছোট্ট করে জিভ কাটে ঢেউ, জানে এবার তার বকুনি খাবার পালা...

সমুদ্র : কারনটা কি তোমার অজানা !!! আমি সবার মতো বারবার মুখ ফুটে বলতে পারি না ঢেউ... কিন্তু তা বলে কি অনুভূতি বলে কিছু নেই...

ঢেউ : ওরে বাপ রে !!! আজ তো দেখছি বেদ বাবু বেশ ক্ষেপে আছেন... (সমুদ্রের বুকে হাত রেখে নরম সুরে) কি হয়েছে বেদ !!! শুধু আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তাই করে যাও... তোমার দুশ্চিন্তা ভাগও তো কখনো কখনো আমাকে দিতে পারো বেদ...

সমুদ্র : শান্ত হতে পারছি না ঢেউ... স্যার মৃত্যুর ঠিক আগে একটা কিছু লিখে গেছেন... সেটা আমি কিছুতেই উদ্ধার করতে পারছি না... দেখো এটা স্যার কি লিখে গেছেন !!!

ঢেউ : আরেএএএ... এটা তো Mirror Writing... যাকে বলে 'বিপ্রতীপ পার্শ্বপ্রতিবিম্ব'... বাবাইয়ার এটা বিশেষ একটা গুণ ছিল জানো তো... বাবাইয়ার Mirror Writing লিখতে এবং পড়তে পারতো... আমাকেও নিজে হাতে ধরে শিখিয়েছিল... হয়তো বাবাইয়া নিজের পরিণতি আন্দাজ করতে পেরেই আমাকে তোমার হাতে সমর্পণ করে গিয়েছিল, যাতে আমরা পরষ্পরের শক্তি হয়ে উঠতে পারি...

সমুদ্র : একদম ঠিক কথা বলেছো ঢেউ... স্যার সব বুঝতে পেরেছিলেন... যদিও আমিও কিছুটা জানি... তাও... এই লেখাটার একটা তাৎপর্য অবশ্যই আছে... তুমি পড়তে পারবে ঢেউ...

ঢেউ : হ্যাঁ, পারব... দাও... একটা তো একটা সনেট বেদ... চন্দ্রাণী গৌতম ভট্টাচার্য-এর লেখা, বোধহয় গুজরাতের সোমনাথ মন্দির নিয়ে... দাঁড়াও পড়ি...

      ওঁ জয় সোমনাথ

রচয়িতা : চন্দ্রাণী গৌতম ভট্টাচার্য

চন্দ্রদেব হয়েছেন শাপমুক্ত যেথা,

পুরাণে কথিত, শুক্ল-কৃষ্ণ পক্ষ কথা...

আসমুদ্র বিস্তারে, দূর দক্ষিণ মেরু,

সৌরাষ্ট্রে সোমনাথ, শ্লোক হয়েছে শুরু...

আদিকাল হতে হেথা আসে নরনারী,

অবিরাম ঢেউ করে চরণ পখারি...

গণপতি, হনুমান- দু'দিকে বিরাজে,

চন্দন দারুময়, বিজয় দ্বার সাজে...

পাতকে বারংবার করেছে লুন্ঠন,

তবুও অমর সনাতন ধর্মপ্রাণ....

অনতিদূরে আছে মহাতীর্থ প্রভাস,

শ্রীকৃষ্ণের দেহোৎসর্গ যদুবংশ নাশ...

মহারানী অহল্যার ধর্ম প্রাণ দান,

হেথা বল্লভের প্রাণ, এ ভব্য নির্মাণ...

আচ্ছা বেদ, এটার মানে কি !! গজনীর সুলতান মামুদ শুনেছিলাম গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের প্রচুর ধন, ঐশ্চর্য লুঠ করেছিলেন... বাবাইয়া কি সেইসব নিয়ে কাজ করছিল !! আর তার লোভেই এই খুন !!

সমুদ্র : শুধু তোমার বাবাইয়া নয় ঢেউ... আমিও স্যারের সাথে ছিলাম... যারা স্যারকে খুন করেছে, তাদের টার্গেট যে আমিও নই- সেটা জোর দিয়ে বলতে পারি না...

ঢেউ : (আর্তনাদের মতো) কিইই !!! তুমিও বেদ !!!

মূহুর্তে যেন সবকিছু ধূসর হয়ে আসে ঢেউ-এর চোখে... হাতে ধরা তার বাবাইয়ার ডায়েরিটা হাত থেকে খসে পড়তেই সমুদ্র দেখে ঢেউ টলছে... সমুদ্র শক্ত করে ঢেউকে আঁকড়ে ধরে...

সমুদ্র : ঢেউ !! কি হলো তোমার !!! বসো... বসো এখানে... দাঁড়াও আমি জল আনি...

জল আনার জন্য সমুদ্র উঠতে যেতেই ঢেউ-এর নরম হাতের বাঁধনে আটকে পড়ে... দেখে ঢেউ-এর দু'চোখে শ্রাবণ নেমেছে...

সমুদ্র : ও কি ঢেউ !!! কাঁদছো কেন তুমি !!!

ঢেউ : আমি বাবাইয়াকে হারিয়েছি বেদ... তোমাকে হারাতে পারব না... তোমার কোনো ক্ষতি হলে আমি সহ্য করতে পারব না....

নেপথ্যে : আমি থাকতে বেদ-এর কোনো ক্ষতি আমি হতে দেব না...

ঢেউ আর বেদ দু'জনেই পেছন ফিরে দেখে পরাগ দাঁড়িয়ে... তার মানে পরাগ ওদের সব কথাই শুনেছে... নিজের Trouser Pant-এর পকেটে দুটো হাত গুঁজে দৃপ্ত পায়ে ওদের দিকে এগিয়ে আসে পরাগ... ঢেউ-এর মাথায় হাত রেখে সমুদ্রের চোখে চোখ রেখে বলে,

পরাগ : Sorry, এই Murder Case-টার Investigator Officer হিসেবে তোমাদের কথা শোনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারলাম না... আচ্ছা বেদ, তুমি ঠিক কতটা জানো আমাকে কি বলবে !!!

সমুদ্র : না বলার কিছু নেই অফিসার... ইতিহাস আমাদের সমাজের একটি অবহেলিত বিষয়, যাকে কেবলই যুদ্ধ, তারিখ, সাল, বই, লেখক এইসবের ছকে ফেলে একটা ভয়ের কারন হিসেবে দেখানো হয়... ফলে শিক্ষার্থীরা ভয়ে এই বিষয় নিয়ে পড়তে চায়... বা যারা এই বিষয় নিয়ে এগোতে চায় তাদের ওই 'মুখস্থবিদ্যা ভালো' বা আর কোনো বিষয় নিয়ে পড়ার যোগ্যতা নেই তাই পড়ে- এই জাতীয় একটা মনগড়া ধারনাতে ফেলে দেওয়া হয়....

কিন্তু ইতিহাস বহু 'না বলা গল্প'-এর সমাহার... আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের বর্তমানের আধার, হয়তো বা ভবিষ্যতেরও... আমাদের অভিভাবকরা চান সন্তানরা 'Science' নিয়ে পড়ুক.... Quote Unquote 'Science'... কিন্তু এই বিজ্ঞানের আঁকড় কি ইতিহাস নয় !!! দশমিক বিদ্যা, চিকিৎসা বিদ্যা, মহাকাশবিদ্যা- বিজ্ঞানের কোন শাখাতে প্রাচীন ভারত অগ্রদূত ছিলো না বলুন তো !!! শিক্ষার প্রয়োজনে বিভিন্ন শাখার দরকার হয়, কিন্তু জ্ঞানের কোনো শাখা থাকে না- জ্ঞান সততঃ আন্তঃশৃঙ্খলিত হয়, যাকে বলে 'Interdisciplinary'... আর এটাই ছিল আমার আর স্যারের একযোগে শেষ গবেষণার বিষয়, যা পরে স্যারের মৃত্যুর কারন হয়ে দাঁড়ায় এবং আমাদের সবার বিপদের...

পরাগ : গবেষণার বিষয়টা কি গুজরাতের সোমনাথ মন্দির, যা ১৭বার লুন্ঠিত হয় !!!

সমুদ্র : হ্যাঁ... সবার এই মন্দির সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা আছে যে, এই মন্দিরের দেওয়ালে না কি অনেক ধন দৌলত রক্ষিত ছিল... কিন্তু এর সত্যতা এখনো উন্মোচিত হয় নি... গুজরাতের সোমনাথ মন্দির দুটো আছে- একটা প্রবীণ, আরেকটা নবীন... নবীন শিব মন্দিরের ঠিক উল্টোদিকে প্রবীণ শিব মন্দির, যাতে লেখা আছে- 'অহল্যা বাঈ হোলকার পুরনো শিব মন্দির'... এই শিব মন্দিরটিই ১৭বার আক্রান্ত হয়েছিল বাইরের মুসলিম দস্যুদের দ্বারা... কিন্তু তা বারংবার নতুন করে গড়ে দেওয়া হয়...

 এটি হিন্দু দেবতা শিবের দ্বাদশ লিঙ্গের মধ্যে পবিত্রতম... সোমনাথ শব্দটির অর্থ 'চন্দ্র দেবতার রক্ষাকর্তা'... সোমনাথ মন্দিরটি ‘চিরন্তন পীঠ’ নামে পরিচিত... কারণ অতীতে ছয় বার ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও মন্দিরটি সত্বর পুনর্নিমিত হয়... হিন্দু পুরাণ অনুসারে, সোমনাথ মন্দিরের আরাধ্য দেবতা শিব সোমেশ্বর মহাদেব নামে পরিচিত... পুরাণ অনুসারে, সোমেশ্বর মহাদেব সত্যযুগে ভৈরবেশ্বর, ত্রেতাযুগে শ্রাবণিকেশ্বর ও দ্বাপর যুগে শ্রীগলেশ্বর নামে পরিচিত ছিলেন... চন্দ্র তাঁর স্ত্রী রোহিণীর প্রতি অত্যধিক আসক্তি বশত তাঁর অন্য ছাব্বিশ স্ত্রীকে উপেক্ষা করতে থাকেন... এই ছাব্বিশ জন ছিলেন দক্ষ প্রজাপতির কন্যা... এই কারণে দক্ষ তাঁকে ক্ষয়িত হওয়ার অভিশাপ দেন... প্রভাস তীর্থে চন্দ্র শিবের আরাধনা করলে শিব তাঁর অভিশাপ অংশত নির্মূল করেন... এরপর ব্রহ্মার উপদেশে কৃতজ্ঞতাবশত চন্দ্র সোমনাথে একটি স্বর্ণ শিবমন্দির নির্মাণ করেন...

পরে রাবণ রৌপ্যে, কৃষ্ণ চন্দনকাষ্ঠে এবং রাজা ভীমদেব প্রস্তরে মন্দিরটি পুনর্নিমাণ করেছিলেন... গুজরাটের সোলাঙ্কি শাসক ভীমদেব মন্দিরটি নির্মাণ করেন প্রস্তরে.. প্রসঙ্গত, সোলাঙ্কি ছিল ভারতের পাঁচ রাজপুত রাজ্যের অন্যতম...

কথিত আছে, সোমনাথের প্রথম মন্দিরটি খ্রিস্টের জন্মের আগে থেকে বিদ্যমান ছিল... গুজরাটের বল্লভীর যাদব রাজারা ৬৪৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় মন্দিরটি নির্মাণ করে দেন... ৭২৫ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধের আরব শাসনকর্তা জুনায়েদ তাঁর সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে এই মন্দিরটি ধ্বংস করে দেন... তারপর ৮১৫ খ্রিস্টাব্দে গুজ্জর প্রতিহার রাজা দ্বিতীয় নাগভট্ট সোমনাথের তৃতীয় মন্দিরটি নির্মাণ করান... এই মন্দিরটি ছিল লাল বেলেপাথরে নির্মিত সুবিশাল একটি মন্দির...

১০২৪ খ্রিস্টাব্দে মামুদ গজনি আরেকবার মন্দিরটি ধ্বংস করেন... এই সময় এই শিবলিঙ্গ উনি দু'টুকরো করে কেটে দেন... বলা হয় দস্যু মামুদের সমাধি দরজাগুলো সোমনাথ মন্দির থেকে লুণ্ঠিত চন্দন কাঠের তৈরি... ১০২৬ থেকে ১০৪২ খ্রিস্টাব্দের মাঝে কোনো এক সময়ে গুজ্জর পরমার রাজা মালোয়ার ভোজ ও সোলাঙ্কি রাজা আনহিলওয়ারার প্রথম ভীমদেব আবার মন্দিরটি নির্মাণ করান... এই মন্দিরটি ছিল কাঠের তৈরি... কুমারপাল (রাজত্বকাল ১১৪৩-৭২) কাঠের বদলে একটি পাথরের মন্দির তৈরি করে দেন...

১২৯৬ খ্রিস্টাব্দে সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির সৈন্যবাহিনী পুনরায় মন্দিরটি ধ্বংস করে... হাসান নিজামির তাজ-উল-মাসির লিখেছেন, গুজরাটের রাজা করণ পরাজিত হন, তাঁর সেনাবাহিনী পলায়ন করে "পঞ্চাশ হাজার নীরিহ মানুষকে তরবারির আঘাতে নিহত করা হয়" এবং "বিজয়ীদের হাতে আসে কুড়ি হাজারেরও বেশি ক্রীতদাস ও অগণিত গবাদি পশু"... ১৩০৮ খ্রিস্টাব্দে সৌরাষ্ট্রের চূড়াসম রাজা মহীপাল দেব আবার মন্দিরটি নির্মাণ করান...

তেরো শতকের আরব ভূগোলবিদ আসারু-ল-বিলাদের লেখা Wonders of Things Creation and Marvels of Creatures and Stange Things Existing-এ বারংবার সোমনাথ মন্দির ও তার ধ্বংসের বিবরণ পাওয়া যায় :

"বিহগ্রের দিকে সুলতান আশ্চর্য হয়ে চেয়ে রইলেন... তারপর লুটের মাল নিয়ে যাওয়ার হুকুম দিলেন... ধনসম্পদ তাঁর খুব পছন্দ হয়েছিল... সেখানে সোনা ও রুপো দিয়ে তৈরি অনেক মূর্তি ছিল... রত্নখচিত অনেক পাত্র ছিল... ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সেসব জিনিস সেই মন্দিরে পাঠিয়েছিলেন... মন্দির থেকে লুণ্ঠিত দ্রব্যের মোট অর্থমূল্য ছিল কুড়ি হাজার দিনারেরও বেশি..."

১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে এই অঞ্চলটি মারাঠা সাম্রাজ্যের অধীনে আসে... তখন আসল সোমনাথ মন্দিরের অবস্থা ভীষণ শোচনীয় ছিল... রানী অহল্যা বাঈ হোলকার এই মন্দিরের মন্দিরের ভগ্নদশা দেখে খুব মর্মাহত হয়েছিলেন এবং তিনি স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির পুনর্নিমাণ করেন... যে শিবলিঙ্গের এতো মহিমা, তা কিন্তু পুরনো তথা আদি সোমনাথ মন্দিরেই আছে, যা গোলাপী রঙের এক বিশাল শিব মন্দির...

এক নাগাড়ে এতগুলো কথা বলে সমুদ্র একটু থামে... পরাগের চোখের ইশারায় ঢেউ সমুদ্রকে এক গ্লাস জল এগিয়ে দেয়... সমুদ্রের জল খাওয়া শেষ হলে পরাগ বলে,

পরাগ : তার মানে, আগে যেটা বিদেশী দস্যুরা করতো, এখন দেশের শত্রুরা ওই ধনসম্পদের লোভে বাবুর পেছনে পরেছিল...

সমুদ্র : কথাটা খুব ভুল বলেন নি... কিন্তু আমাদের গবেষণার ক্ষেত্র এই ধনসম্পদ ছিল না... বলা হয়, এই সোমনাথ মন্দিরের দেওয়ালের একটা বিশেষত্ব ছিল... মন্দিরের দুটো দেওয়ালের মাঝে লাইব্রেরি ছিল....

পরাগ : What !!! Library !!

সমুদ্র : হ্যাঁ, আর সেগুলোই ছিল আসল ধনসম্পদ... সেখানে প্রাচীন ভারতের বহু গুরুত্বপূর্ণ পুঁথি সুরক্ষিত ছিল... কিন্তু এই দস্যুরা বারংবার এই মন্দির আক্রমণ করে সেইসব নথি নষ্ট করে দেয়, মানে তারা এইসব নথির গুরুত্বই উপলব্ধি করতে পারে নি... আমি আর স্যার চেষ্টা করছিলাম, যদি এই সনাতন গ্রন্থ এখনো কিছু অবশিষ্ট থাকে এবং তা উদ্ধার করা যায়... তাহলে আমরা সেগুলো ভারত সরকারের হাতে তুলে দিতে পারব... কিন্তু ঐতিহাসিক দ্রব্যাদি আমদানি এবং রপ্তানির যে কালো চক্র আমাদের দেশে সক্রিয়- তারা এই খবরটা পেয়ে যায়... ওই মধ্যযুগীয় দস্যুদের মতো তারাও ভেবে বসে, আমাদের কাছে হয়তো কোনো মনিরত্ন আছে... এবং তারা স্যারকে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে- স্যারের প্রাণনাশের, আমার প্রাণনাশের, ঢেউ-এর প্রাণনাশের... এই হুমকির চাপে পড়েই স্যার Massive Heart Attack হয়...

ওদের তিনজনের অন্তরের আকাশে তখন ঘন কালো মেঘ, ঠিক যেন দানবের মতো... অশান্ত হাওয়াতে গাছের পাতা সব উড়ছে... এই ঝড় তো আসারই ছিল... মনের স্বভাব করাত সমান, ব্যাথার আঁচড় কেটেই চলে... এমনসময় ঘরের কলিংবেল বেজে ওঠে....


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance