STORYMIRROR

Nityananda Banerjee

Crime

4  

Nityananda Banerjee

Crime

ভোরের সূর্য্য পর্ব পাঁচ

ভোরের সূর্য্য পর্ব পাঁচ

4 mins
322

পর্ব সংখ্যা পাঁচ

- বিশ্বাস করুন স্যার !

শশাঙ্ক খেতে খেতে বলল - এমন এলাহি খাবার আমি কোনদিন চাক্ষুষ করিনি । যেমন স্বাদ তেমনই আয়োজন।

তারপর সঞ্জনাকে উদ্দেশ্য করে বলল - থ্যাঙ্ক ইউ ম্যাডাম ; রান্নায় আপনার হাতযশ আছে । কিন্তু কি জানেন ? এই যে পেটপুরে খাচ্ছি; হজম করবার সময়ও পাব না । স্যারের কথামত আর তো কয়েকটা ঘন্টা ! হজম হোক না হোক, চোয়া ঢেকুর উঠুক বা না উঠুক, যা যা এনেছেন সব সাবাড় করে তবে মরব ।

মিসেস সঞ্জনা কুমার বললেন - খাও না। খেতে খেতে কথাও চলুক । শুনি তোমার কথা । তারপর কি হল বল। গাড়িটা কি পুলিশের ছিল ?

- না না ম্যাডাম ! পুলিশের গাড়ি হলে তো আজকের দিনটাই আসত না । স্বয়ং গাজী সাহেব এসে নামল । আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল - তোমার মত বুদ্ধিমান ছেলে আমি দ্বিতীয়টি দেখিনি ।

আমি তো হাঁ করে ওর মুখের দিকে চেয়ে আছি । গন্তব্যে না যেয়ে মাঝপথে নেমে গেছি টাকাগুলো আত্মসাৎ করতেই হয়তো ভেবেছে গাজী সাহেব । তাই হাতের মুঠোয় পেয়ে বলির পাঁঠার মত মনে করছে । এই বুঝি ছুরি বা গুলি বেরিয়ে ফুঁড়ে দিল ।

আমি ফ্যালফ্যাল করে গাজী সাহেবের মুখের দিকে চেয়ে আছি । এটাচি নিয়ে কেউ গাড়িতে তুলে রেখে দিল । গাজী সাহেব বলল - শশাঙ্ক ! তোমাকে প্রমোশন দিলাম । মাইনেও বাড়িয়ে পঞ্চাশ হাজার করে দিচ্ছি ।

আমি তো আরও ঘাবড়ে গেলাম । গাজী সাহেব বলে কি ?

গাজী সাহেব বলল - ভাগ্যিস যাওনি । আমি তো খুব ভয় পেয়ে গেছলাম । ওখানে ভয়ংকর গণ্ডগোল বেধেছে। নাও উঠে পড় গাড়িতে । ফিরে যাই ।

কাকে ধন্যবাদ দেব ভাবতে পারছি না । এই একটু আগে যে লোকটা আমাকে প্রমোশন দিয়ে মাইনে প্রায় দ্বিগুণ করে দিল ; নাকি ওই মেয়েটা! যে আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমি কোন দুষ্কর্মে জড়িত ।

গাজী সাহেব ওর বাসায় আমাকে নিয়ে গেল । হঠাৎ মাঝপথে নেমে যাবার কারণ জিজ্ঞাসা করল । আমি সোজা মনে সহজ করে বুঝিয়ে দিলাম বিপাশা নামের মেয়েটির কথা ।

রং ফলিয়ে বললাম - বিপদে পড়েছিল মেয়েটা গাজীচাচা । পাড়ার চেনাজানা মেয়ে - বিপদে পড়েছে দেখে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম ।

লম্বা শ্বাস নিয়ে গাজী সাহেব বললেন - ওই ঝোপে নিশ্চয় কিছু দুষ্কর্ম করছিলে ? বলি প্রেম-ট্রেমে পড়েছ নাকি !

আমি হেসে বলি - কি যে বল চাচা । কখনো ওই দিক দিয়ে যাবার সুযোগই হয়নি ।

গাজী সাহেব হাসলেন । পরক্ষণেই গম্ভীর কন্ঠে বললেন - তাহলে এটাচিটা খুলেছিলে কেন ? কে তোমাকে এটাচি খুলতে বলেছিল ? গাজী সাহেবের চোখ দুটো জানোয়ারের মত জ্বলে উঠল । সে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে উঠে কোথাও চলে গেল । আমার মনে তখন ঝটকার পর ঝটকা লাগছে। সে কি বলি স্যার ! রিখটার স্কেলে মাপলে তা' দশ ছুঁই ছুঁই তো হবেই ।

বিপাশার বিপদ দেখে আমিও পিছু পিছু চলতে শুরু করি । অবশ্যই দূরত্ব রেখে । একদমই ঠিক। আমার অনুমান সত্যি । ওরা বিপাশার বাড়ির দিকেই যাচ্ছে ।

চার পাঁচজন লোক ওরা । এদিকে একলা আমি । ওরা বাড়ির দেয়াল বেয়ে বাড়িতে ঢুকে ডিপাশার চুলের মুঠি ধরে টেনে আনল উঠোনে । তারপর কাঁধে নিয়ে চলে এল গাজীর ডেরায় ।

গাজী বলল - শশাঙ্কর সাথে কি সম্পর্ক তোর ?

- কোন সম্পর্ক নেই ।

- মাগি ! মিথ্যা কথা বলিস কেন ? ঝোপের আড়ালে শশাঙ্কর সঙ্গে কি করছিলি ?

বিপাশা বলল - ওকে বলেছিলাম কাজটা ছেড়ে দিতে । ভালো কাজ করতে।

- তাই এটাচি খুলে দেখতে বলেছিস ?

বিপাশা চুপ করে আছে । চারটে ষণ্ডাকে ডেকে গাজী বলল - ওকে আমার বিছানায় তোল। দেখি মাগির কত রস গড়ায় ?

বিপাশা চিৎকার করে কেঁদে উঠল । মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে দিল একজন । তারপর একে একে ওরা পাঁচ জন বিপাশাকে নগ্ন করে পৈশাচিক খেলায় মেতে উঠল । আমি কি করব ভাবছি । বিপাশা ঠিকই বলেছিল শাঁখের করাত গলায় লাগিয়েছি । আমার তারুণ্য শক্তি ক্ষেপে গেল । আমি এলোপাথাড়ি পাথর ছুঁড়ে ওদের বিরত করতে লাগলাম। গাজী আমার চুলের মুঠি ধরে বিছানায় ফেলে দিল ।

বলল - একটা তরতাজা মালকে কি ভাবে উপভোগ করতে হয় আমাদের দেখা । নইলে তোর লিঙ্গচ্ছেদ করে দেব ।

আমি স্যার তখনই মরে যেতে চেয়েছিলাম । ওরা মরতে দেয়নি । বলেছিল মরাটা এত সোজা নয় রে বেটাচ্ছেলে । যা বলছি কর । নইলে একটু একটু করে শরীর থেকে মাংসগুলো ছিঁড়ে নেওয়া হবে ।

বিশ্বাস করুন স্যার ! আমি মরণ চেয়েছি তবে এভাবে নৃশংস ভাবে মরতে চাইনি । আমি বিপাশার সঙ্গে .....

মুখ নীচু করে রইল শশাঙ্ক ।

মিঃ কুমার বললেন - তোর লজ্জা আছে ? মাথা নামিয়ে রেখেছিস কেন ? মাথা তুলে চোখের দিকে চেয়ে কথা বল । তবে জানব তুই পুরুষ।

মিসেস কুমার বললেন - আহা! অমন করে বল না । নাও নাও শশাঙ্ক । তুমি বলে যাও । আমি কথা দিচ্ছি তোমার জীবনী লিখব আমি । তা ছাপিয়ে গোটা দুনিয়াকে পড়াব ।

তারপর কি হল বল । গাজী তোমাকে ছেড়ে দিল না তুমি কাজ ছেড়ে দিলে ?

( চলবে ) 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime