অনুপ্রেরণা
অনুপ্রেরণা


গ্রামে যে ছেলেটি কখনো খারাপ কাজ বা নেশা করে নি, আজকে সে এক নামকরা নেশাখোর আর খারাপ কাজে লিপ্ত। যে ছেলেটি সিগারেটে থাকা নিকোটিনের ধোঁয়া সহ্য করতে পারত না, আজ সেই নিকোটিন তার পথ চলার সঙ্গী।
সে এখন প্রতি রাতেই ছাদের কোণে গিয়ে নিকোটিনের আগুনে নিজেকে পুড়তে দেখেযে ছেলেটি স্কুল,কলেজ, কোচিং এ বন্ধুদের সাথে আড্ডা মেরে সবাইকে মাতিয়ে রাখত, আজ সে একদম চুপ;কারো সাথে কোনো কথা বলে না সব সময় একা থাকে।
যে ছেলে অন্ধকার এবং কালো জিনিস অপছন্দ করত, আজ সে শপিং এ গেলে সবার আগে কালো রঙটাকে বেছে নেয় আর প্রায় সময়টাই অন্ধকারের মধ্যে থাকতে চায়।
এছাড়াও আরো অনেক ঘটনা আছে যা আমাদের চারপাশে ঘটে চলছে; কিছু প্রকাশ পায় আবার কোনোটা পায় না।
সমাজের ছোট বড় প্রত্যেকেই ভাবে হয়ত খারাপ সঙ্গ পেয়েই ভালো বা খারাপ হয়েছে। এরকম কিছু আমাদের সামনে ঘটে যাওয়া কর্ম-কান্ডের প্রতিক্রিয়া জানাই; এইগুলো হয় সাধারনত এইরকম-
★ ছেলেটা ভালো ছিল, কিন্তু এখন রোজ সিগারেট খায়।
★ ছেলেটা একদম নষ্ট হয়ে গেছে, রোজ মারপিট আর নেশা করে।
★ এই ছেলে ছোটবেলা সকলকে অনেক সম্মান করত, কিন্তু এখন সামনে বসে সিগারেট ধরায়।
★ ছেলেটা খারাপ হবে কখনই ভাবি নি…. ইত্যাদি ...ইত্যাদি।
আমরা ভেবে থাকি এসব ছেলেগুলোর এভাবে নষ্ট হওয়া আর বিগড়ে যাওয়ার পিছনে খারাপ সঙ্গ একমাত্র দাযকিন্তু কখনো কি জানতে চেয়েছি বা চেয়েছেন তাদের কাছে? কিসের জন্য তারা এ পথে এসেছে…?
একটা ছেলে শুধু খারাপ সঙ্গ পেয়ে নেশার জগতে পা দেয় না, এর পিছনে জড়িয়ে থাকে পারিবারিক সমস্যা নয়ত কাছের মানুষের দেয়া কষ্ট আর অবহেলা। আমাদের সমাজের প্রায় অর্ধেকের বেশি ছেলেরা নেশায় আসক্ত হয় প্রেম বিচ্ছেদে। আর অল্প কিছু ছেলেরা হয় পারিবারিক কারণে। তখন এরা বেঁচে থাকার জন্য এবং পুরাতন স্মৃতি গুলো মুছে ফেলার জন্য নেশার জগতে পা দেয়।
আচ্ছা কতটা কষ্ট পেয়ে একটা ছেলে তার চোখের জল ফেলে? হ্যাঁ, আপনাকেই জিজ্ঞাস করছি, যিনি বা যে এই গল্পটা পড়ছেন।
আমার জ্ঞান অনুযায়ী, একটা ছেলেকে কখনো আপনি সামনে বসে তেমন একটা কান্নাকাটি করতে দেখবেন না।কারণ সে জানে সবার সামনে বসে কাঁদতে দেখলে তাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা, তামাশা হবে। তাই সে নিরবে তার কষ্টটাকে বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। কারণ ওখানে লুকিয়ে রাখলে কেউ দেখতে পাবে না, একমাত্র স্রষ্টা আর নিজে ছাড়া।
রাতে অন্ধকারে, ঘরের কোনো এক কোণে বসে বা বিছানায় শুয়ে নিঃশব্দে দু’চোখের জল ফেলে কেঁদে নেবে সে। চিৎকার করেও সে কাঁদতে পারে না, যদি তার বাসার কেউ কান্নার শব্দ শুনে ফেলে।
বাসার যে ছেলেটি খুব হাসি খুশি থাকত, আড্ডা দিয়ে সবাইকে মাতিয়ে রাখতে পারত, আজ হয়ত তার ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে অবহেলা পেতে পেতে সে এত বদলে গেছে বা যাচ্ছে। আগের মত আর কারো সাথে মেশে না, মন মরা হয়ে সবসময় একা থাকতে চায়। কারণ সে জানে বন্ধুদের সাথে চলতে হলে তাকে হাসি-খুশি থাকতে হবে। যদিও বা কিছু ক্ষেত্রে চলতে হয়, তখন সে মিথ্যের আশ্রয় নেয়।
যখন একটা ছেলের জীবনে কোনো মেয়ে আসে, তখন তাকে নিয়েই জীবনটা রঙ্গিন হয়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই রঙ্গিন কে কালো করে অন্য ছেলের হাত ধরে সে চলে যায়। তখন শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সে; ভাবতে থাকে এই কি সেই মেয়ে যে কোনো একসময় আমায় নিয়ে ভালোবাসার স্বপ্ন বুনত।
তাই বলছি, আপনি যদি একটা ছেলের একদম কাছের বা ভালোবাসার মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে জনসম্মুখে এনে চড় মারুন, তাকে বেশি করে গালাগালি করুন বা অপমান করুন। হয়তো সে কেঁদে উঠবে, তার মনের কিছু ব্যথা কমে যাবে। তাকে অহেতুক ভুল বিচার করে কষ্ট দেবেননা।