অন্তরাল-পঞ্চম পর্ব
অন্তরাল-পঞ্চম পর্ব
" ঐ কি রে? খাবি না? খাবারাটা সামনে নিয়ে কি এতো ভাবছিস্ বলতো? "
অর্জুন একটু আশেপাশে তাকিয়ে শিঞ্জিনীকে উদ্দেশ্য করে আবার বলল-
" এই তোর গলার স্কার্ফটা ঠিক কর। দুজন তোর দিকে তাকাতে তাকাতে গেল। "
শিঞ্জিনী স্কার্ফটা ঠিক করে নিয়ে এক চামচ চাউমিন মুখে ঢুকিয়ে দিল। তার মুখে চোখে একটা উদাস ভাব। মনে হচ্ছে সব সময় কি যেন একটা ভাবছে। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ গতকাল রাতে সে যা দেখেছে তাতে চিন্তা হওয়ারই কথা।
" শিঞ্জিনী? তুই এবার একটু ঝেড়ে কাশ তো। কি হয়েছে আমায় বল। কোনো কি problem হয়েছে? বাড়িতে কাকু কাকিমার শরীর ঠিক আছে তো? "
সে কোনো উত্তর দেয় না। চুপচাপ চাউমিন খেতে থাকে। অর্জুন এবার রেগে গিয়ে একটু উচ্চ স্বরে বলে ফেলে-
" কি হল কি? আমি কিছু তোকে জিজ্ঞেস করছি তো নাকি? "
শিঞ্জিনী এবার খাওয়া থামিয়ে অর্জুনের দিকে তাকিয়ে বলে-
" তুই জানতে চাস্ তো আমার কি হয়েছে। তাহলে চল আমার সাথে। "
সে খাওয়া পুরোটা শেষ না করেই অর্জুনের হাত ধরে টেনে চেয়ার থেকে তুলে দেয়। অর্জুন ব্যস্ত হয়ে বলে-
" কি হচ্ছে কি এসব? এরকম scene create করছিস কেন? সবাই এদিকেই তাকিয়ে আছে। "
" যে যা খুশি দেখুক গিয়ে। তোকে এখুনি আমার সাথে যেতে হবে আর আমি সবটা বলতে চাই। "
" আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। কিন্তু কোথায় যাবি বল। "
" আমার সাথে যেতে কি তোর ভয় করছে? আমার উপর তোর বিশ্বাস নেই? "
এই কথার পর অর্জুন আর কোনো কথা বলতে পারে না। " আচ্ছা চল " বলে শিঞ্জিনীর সাথে কলেজের ক্যান্টিন ছেড়ে বেড়িয়ে পড়ে। একটা খোলা জায়গায় এসে চারপাশে তাকিয়ে গলার স্বর একটু নামিয়ে নিয়ে শিঞ্জিনী বলে-
" আমার বাড়িতে কয়েকদিন ধরে বেশ কিছু ঘটনা ঘটে চলেছে। "
অর্জুন উদ্বিগ্ন হয়ে বলল-
" কি ঘটনা? "
শিঞ্জিনী এতো দিন ধরে ঘটে চলা সব ঘটনা গুলো খুলে বলল। অর্জুন সব শুনে কিছু বলতে চাইছিল। কিন্তু শিঞ্জিনী তাতে বাঁধা দিয়ে বলে-
" তুই এখন বলবি আমি এতদিন সব কিছু দেখেও কেন চুপ করেছিলাম? কেন আমার মেসোকে কিছু জানাইনি? কারণ কি জানিস? আমি চাই না কোন জোরাল প্রমান জোগাড় করার আগেই ওরা বুঝে যাক যে ওদের ব্যপার গুলো সবটা বুঝতে পেরেছি। তাহলে ওরা সজাগ হয়ে যাবে। আমি চাই পুলিস ওদের হাতে নাতে ধরুক। "
" শুধু তোর ইচ্ছের কথাটাই ভাবলি শিঞ্জিনী? আমার যে এখন তোকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। তুই ওখানে safe কিনা সেটাই তো এখন চিন্তার বিষয়। "
শিঞ্জিনী অর্জুনের কাঁধে হাত রেখে আশ্বাসের সাথে বলে-
" আমি ততোক্ষণ নিরাপদ থাকব যতক্ষণ না ওরা বুঝতে পারছে যে আমি ওদের কু-কর্ম গুলো বুঝতে পেরেছি। "
" কিন্তু যখন ওরা বুঝতে পারবে তখন তুই কি করবি? "
শিঞ্জিনী এই শুনে একটা বাঁকা হাসি হাসে।
" মেসোকে কল করতে তখন আমার এক সেকেন্ডও দেরি হবে না। তার আগে যতটা পারব প্রমান জোগাড় করে রাখব। "
অর্জুন শিঞ্জিনীর হাত ধরে বলে-
" কিন্তু তোকে আমায় একটা promise করতে হবে? "
" কি? "
" তুই যখনি কোনো বিপদ বুঝবি সেই মুহূর্তে তুই আমায় জানাবি। "
শিঞ্জিনী অর্জুনের হাতের উপর আরেকটা হাত রেখে বলে-
" Promise. "
ক্রমশ......