অনবরত অপরাজিত
অনবরত অপরাজিত


শুরু হলো আরেকটা দিন।
জেগে ওঠে মৃদু স্বরে
বাঙালির ভোর,
কিচিমিচি পাখিদের ডাকাডাকি
রিক্সার পেঁ পোঁ, হকারের হাঁকাহাঁকি
ঘন্টা, আজানের ডাক মিলে মিশে এঁকে বেঁকে
আসে ভেসে মন্দির, মসজিদ থেকে,
সাইকেল বোঝাই কাগজ
ক্রিং ক্রিং করে
বাড়ির বারান্দায় উঠোনে
আছড়ে পড়ে
নিয়ে কতনা অজানা খবর!
দুধওয়ালা দুধ দিয়ে যায়
দরজায়, আঙিনায়
ঠিকে কাজের লোক, ওবেলার ঢাঁই করা
বাসন মাজে ফ্লাটেতে, বাড়িতে
টুংটাং করে,
পাড়ার কলতলায় পড়ে যায়
সারিসারি বালতির লাইন
স্কুল বাস নিয়ে যায় ছোট ছোট
বাপি, ইমরান, বুলা, আমিরাকে
ভালনামে ডেকে
ছুটোছুটি করে নানা লোকজন
বড়রাস্তায়, লেকে
দাদুদিদারা হাহা করে হাঁসে
মাসি মেশরা হাঁটে জোরে জোরে
পরনিন্দা, পরচর্চা করে,
সবাই বাঁচতে চায়
সুস্থ থাকতে চায়
ছোট ছোট কথা
ছোট বড় ব্যথা
জীবনের গল্প বলে
অনবরত…
চায়ের দোকানে ভিঢ়
গরম কাপেতে ওঠে প্রভাতী আড্ডার ঝড়
গলাগলি, গালাগালি শুরু হয় থেমে যায়
আসে এইভাবে ভোর, বড়োই স্পর্শকাতর
বাঙালির বাজারে পড়ে হাঁক
রুই, চিংড়ি, ইলিশের ডাক
আগুন আগুন বলে,
রান্নাঘরে বাজে বুঝি রকমারি
ভাজা, জিভে-চোখে জল আনা
সুরগুলো, পেটে ডাক পেড়ে চলে।
আরেকটা দিন এসে গেলো
সারাদিন চলবে না জানি কত কাজের বহর
বাঙালির একটানা দিনের ওপর
বেজে ওঠে এলোমেলো
সুরে, তালে, ছন্দে
নানা স্বাদে গন্ধে,
বয়ে চলে সুন্দর, সুমধুর
এক নিরলস নদীর মতো
অপরাজিত,
জীবনের সুর।