অলীক
অলীক
জানিনা কেন এমন হচ্ছে? সেই
বহুদিন আগে এমন হয়েছিল, আজও একই অনুভূতি হলো। হয়তো একাকীত্বের কারণে এমন হচ্ছে। সারা ঘর খাঁ খাঁ করছে। বাইরে কনকনে ঠান্ডা। খুব বাজে লাগছে অন্ধকারে শুয়ে থাকতে। ঘরভর্তি অগুরু সেন্টের গন্ধ পাচ্ছি। তবে হ্যালুসিনেশন হচ্ছে বুঝতে পারছি। আমার প্রায়ই এমন হয়।
আজ বহুদিন পর আবার এই অনুভূতিটা হলো। শরীর জুড়ে প্রচণ্ড জ্বর। মাথা ভার। জ্বর হলেই ইদানীং আমার এমন হচ্ছে। জ্বরের ঘোরে অগুরু সেন্টের গন্ধ পাই। আগে ভাবতাম মনের কল্পনা। এখন মনে হয় সত্যি সত্যি পাই।
বেডসাইড টেবিলে ফোনটা বাজছে। অনেকক্ষণ ধরেই বাজছে। প্রচণ্ড অনিহা সত্ত্বেও ফোনটা তুলতে হলো। ওপারে সমুদ্রের গমগমে কণ্ঠস্বর, ‘বাবুই, কেমন আছিস দোস্ত?’
—ভালো নেইরে। খুব জ্বর।
—তাই বুঝি? আমিও ভালো নেই, বুঝলি। কিছুক্ষণ আগে একটা খুব বিপদ হলো।
সমুদ্রের কথা শেষ না হতেই লাইনটা ডিসকানেক্ট হয়ে গেল। বহু চেষ্টা করেও আর ওকে ফোনে পাওয়া গেল না।
মনের ভেতর নানা প্রশ্নের উঁকিঝুঁকি। মাথা জুড়ে লাশের গন্ধ। তীব্র গন্ধটা যেন আমার পিছু ছাড়ছে না। ঝাঁজালো গন্ধ। আচ্ছা লাশের কি নিজস্ব কোনো গন্ধ আছে? মানুষ মরে গিয়ে কেবল লাশ হয়ে যায়। তার নামটা আর থাকে না। যে মানুষটার সঙ্গে আমি সারাক্ষণ ছিলাম, অথচ মরে গেলে বলবে, ‘এই তো লাশটা, এই ঘরে আছে।’
গন্ধটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। না, আর পারা যাচ্ছে না। মাথা ব্যথাটা আবার বাড়ল। ডোরবেল বাজছে, কেউ এসেছে। এবার উঠতেই হবে।
—বাবু, তুমি এসেছ...বড্ড ভয় পেয়েছি জানো।
—একটা খুব খারাপ খবর আছে বাবুই। সমুদ্রের মারাত্মক একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। স্পট ডেথ।

