শুভদীপ (রাতপাখি)

Horror Thriller

3.9  

শুভদীপ (রাতপাখি)

Horror Thriller

আত্মার আহ্বান

আত্মার আহ্বান

8 mins
235



(১)

ভুত। এই ভুত নামক বস্তুটা আমি কখনো দেখিনি। ভূতে বিশ্বাস আমার শূণ্যের সামান্য নিচে। একসময় আমি ভাবতাম ভূত দেখা সূর্য পশ্চিম দিকে উঠতে দেখার মতই অবাস্তব। তবে একদিনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার বিশ্বাসের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পড়লে পাঠকও বিশ্বাস করবেন আমি বিন্দুমাত্র বানিয়ে বলছি না।

আমার মামার বাড়ী পুরুলিয়া। ছোট ছোট পাহাড় ঘেরা চারপাশটা খুব সুন্দর একটা প্রকৃতি সেখানে বিরাজ করছে। চারিদিকে গাছপালায় ঘেরা বিশুদ্ধ বাতাস সেখানে পাওয়া যায়। শহুরে এই একঘেয়ে জীবনে যেনো দম আটকে আসে। হাজার হাজার গাড়ির ধোঁয়া কোলাহল যেনো পরিবেশটাকে একবারে কলুষিত করে রেখেছে। তাই শহুরে জীবন ছেড়ে এই পাহাড় ঘেরা ছোট্ট গ্রামটায় প্রতি বছর আসতে আমার খুব ভালোই লাগে।

এবার আমার মামার বাড়ির কিছু বর্ণনা দিই।


আমার মামার বাড়িটি খুব বেশি বড় নয় মোটামুটি ছোটখাটো দুতলা বলা যায়। একটা বাগান আছে পিছন দিকটায় সেখানে রকমারি অনেক ফুল আছে। আর একটা জমি আছে মামা সেখানে ওই চাষবাস করে।

আমি মামা বাড়িতে বেড়াতে এলে সাধারণত টিভির রুমে রাতে একাই থাকি, মাঝরাত পর্যন্ত টিভি দেখে তারপর ঘুমাই। জানালার পাশে একটা সরু পিচঢালা রাস্তা, তার পরেই অতি পুরনো একটা কবরস্থান (সম্ভবত ব্রিটিশ আমলের)। ছোট থেকে আমি অনেকরাত সেখানে একা কাটিয়েছি, কখনো ভৌতিক কিছু হয়নি।

সেদিন কলকাতা থেকে পুরুলিয়ায় আমার মামার বাড়ি গিয়ে পৌঁছলাম। মামা তো দেখে খুব খুশি হলো। এত গাড়ির জ্যমা ছিল রাস্তায় তাই যখন গিয়ে পৌঁছলাম সেখানে, তখন প্রায় রাত আটটা মতন হবে। প্রচুর জ্যাম ঠেলে, দীর্ঘ ভ্রমণে অবসন্ন শরীর।তাই সেদিন আর তেমন গল্পঃ করা হলোনা ।মামা তাড়াতাড়ি খাবার তৈরি করে আমাকে খেতে দিল আর নিজেও একবারে খেয়ে নিল। খাওয়া সেরে যখন ঘুমোতে গেলাম তখন রাত প্রায় সাড়ে নয়টার কাছাকাছি।

মামা তার নিজের ঘরে ঘুমাল আর আমি ওই টিভির ঘরটায়। কিন্তু সেদিন আর টিভি চালাইনি। এত ক্লান্তি ছিলাম তাই ভাবলাম যা করার কাল সকাল থেকে করবো এখন ঘুমাই।।

কিন্তু ঘুম টা ঠিক পুরো হলনা আমার। মাঝরাত দুটো কি তিনটে হবে, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। তারপর যা দেখলাম, নিজের চোখকেও বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না। ডিম লাইটের আবছা আলোয় দেখলাম রুমের ভিতর একটা স্পষ্ট ছায়ামূর্তি যেনো আমার খাটের সামনে ঠিক পায়ের কাছে , শ্বেত পোষাকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে ভাবলাম হ্যালুসিনেসন,এতটা পথ হত পরিশ্রম করে এসছি তাই হয়তো এরম ভুল দেখতে পাচ্ছি। সব মনের ভুল, এইভেবে আবার শুয়ে পড়লাম।

কিন্তু আবার একটা খটখট আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙে গেল।আবারও সেই ছায়ামূর্তি।

যেহেতু আমি ভুতে অবিশ্বাসী, তাই ভূত যদি আমার গায়ের ওপরও উঠে যায় তবুও আমি ভাববো ওটা আমার হ্যালুসিনেসন, অথবা কোন দুষ্টু বন্ধুর ভয় দেখানোর কারসাজি। বিশ্বাসের দৃঢ়তা আমার আছে, তবুও মাঝরাতে একা ঘরে স্পষ্টত রহস্যময় ছায়ামূর্তি দেখে আমার রক্তের বহু প্রজন্মের ভীতি জেগে উঠল। কেমন একটা ভয় চেপে বসছিল আমার মধ্যে ধীরে ধীরে।

শেষ পর্যন্ত সাহস করে প্রশ্ন করলাম,

কে এখানে?

ছায়ামূর্তি নীরব। আবারো একই প্রশ্ন করলাম।

এবার মনে হল ছায়ামূর্তি কিছুটা হাসল। আমি আবারো প্রশ্ন করে কোন জবাব না পেয়ে ঠিক করলাম বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ওর মুখোশ খুলে দেব। যদি কোন দুষ্টু মামাত ভাইয়ের কারসাজি হয়, হাতেনাতে ধরে জব্দ করব। করলামও তাই। উঠে এগিয়ে গিয়ে ওর সাদা কাপড়টিতে টান মারলাম খোলার জন্য, সাথে সাথে মূর্তিটি অদৃশ্য হয়ে গেলো আর আমার সারা গা মৃদু ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। ঝাঁকুনি ক্রমশ বাড়তে লাগল, তারপর যে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম নাকি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম আমার খেয়াল নেই।


(২)

পরদিন সকালবেলা পাখিদের আওয়াজে আমার ঘুমটা ভাঙলো। ঘর থেকে বেরিয়ে বাইরেটা গেলাম কি সুন্দর মনোরম পরিবেশ চারদিকটা ঠান্ডা বাতাস বইছে, যেন মন টা জুড়িয়ে দেয়। এরকম বাতাস শহুরে জীবনে পাওয়া বড় দুষ্কর। রাতের ওই কথা একবারে ভুলে গেলাম ভাবলাম অত পরিশ্রম হয়েছিল বলেই হয়তো স্বপ্ন দেখেছি কোনো।

এবার মামার ঘরে গেলাম দেখলাম মামা নেই। তারপর একটু ডাকলাম জোরে "মামা ও মামা কোথায় গো তুমি বাথরুমে নাকি?"

কিন্তু কোনো সারা পেলাম না তার।

হঠাৎ আমার চোখ পড়ল মামার নিজের সোয়ার ঘরটার দিকে। সেখানে একরাশ ধুলো পরে রয়েছে। মনে হচ্ছে প্রায় ৩ ৪ মাস ধরে এই ঘরে কেউ বসবাস করেনি।

আমি ভাবলাম "কাল রাতে তো দেখলাম কই এরম তো ছিলনা ঘরটা অবশ্যি মামার সোয়ার ঘরটায় আমি যাইনি তখন, তা হলেও নোংরা যদি থাকে তাহলে সব ঘরেই থাকবে শুধু ওই ঘরটা কেনো ? এবার ভালো ভাবে দেখলাম সব ঘরগুলোই প্রায় অগোছালো আর একরাশ ধুলো ভর্তি। অবশ্যি রাতে ঠিক মত এত খেয়াল করিনি বটে। তখন তো খেয়ে এসেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।"

কিন্তু প্রায় অনেকক্ষণ হয়ে গেলো মামার দেখা পেলাম না। ভাবলাম উনি হয়তো বাজার গেছে আমি এসছি বলে দুপুরে ভালো রান্না বান্না করবে। আমি আর কি করি সকালে ফ্রেশ হয়ে নিজে একটু চা করে পাউরুটি দিয়ে খেয়েনিলাম। তারপর বাড়ীর সামনেটা একটু হাঁটাহাঁটি করছিলাম।

হঠাৎ বলাই কাকুর আওয়াজ পেলাম। উনি বলে উঠলেন "কি হে ছোটন তোরা কবে এলি এখানে আবার?"

(এখানে বলে রাখি খাতায় কলমে আমার নাম প্রীতম হলেও কিন্তু এখানে সবাই আমাকে ছোটন বলেই ডাকে।)

আমি উত্তর দিলাম "এইতো কাল সন্ধ্যার দিকেই এসছি। তুমি কেমন আছো বলাই কাকা? আর রুমকির (বলাই কাকার মেয়ে,আমার ছোট বেলার খেলার সাথী) খবর কি?"

বলাই কাকা এবার ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো 'হ্যা সবাই ভালো আছিরে। তা তোর সাথে এইবার সিধু (আমার বাবার নাম) আসেনি?

আমি বলল "না বাবা এবারে আর আসতে পারেনিগো কাকা খুব কাজের চাপ পড়ে গেছে অফিসে তাই।"

বলাই কাকা কয়েক মিনিট চুপ থেকে বললো "তাহলে তুই একা এসছিস এই বাড়িতে সারারাত একাই ছিলি?"

আমি একটু হেঁসেই বললাম "একা কইগো কাকা আমিতো মামার কাছে এসছি। মামার সাথেই তো ছিলাম। কিন্তু দেখোনা সকাল হতেই তাকে আর দেখতে পাচ্ছিনা। কোথায় গেছে কে জানে আমাকে তো ঘুম থেকে ডেকে তারপর বেরোবে! তা না আমি একা একা বসেই আছি এখন।"

কাকা এবার একটু থতমত খেয়ে বললো "কি বলছিস এসব তুই, তুই তোর মামাকে কোথায় পেলি? সে তো….

আমি, বলাই কাকার কথা শেষ না করতে দিয়েই বললাম "কোথায় আবার পাবো আমিতো জানি এই বাড়িতেই তো সে আজ জন্ম থেকেই আছে। এটাই তো আমার মামার বাড়ি। তোমার কি হয়েছে বলোতো বলাই কাকা। কিসব যেনো বলছো। তোমাকে কেমন একটু যেনো অস্থির মনে হচ্ছে।"

কাকা তখন বলল "তুই কিছু জানিসনা, তোর বাড়িতে কোনো খবর যায়নি?"

আমি বললাম "না কই কিছুতো খবর পাইনি মামার বাড়ি থেকে"

কাকা বলল "কিন্তু খবর তো দেওয়া হয়েছিল তাহলে কি কোনো কারণে চিঠি গিয়ে পৌঁছায়নি!"

বলাই কাকা এবার আমার কাঁধে হাত দিয়ে রেখে সামনের উঠোন টার দিকে গিয়ে বসলো।

সে এবার তার কথা বলতে শুরু করলো,-

"আজ থেকে প্রায় ৪ মাস আগের একটা ঘটনা তোর মামা রোজকারের মতোই তার ওই জমিটা চাষ করার জন্য কাজে বেরোয়। ভালই ফলন হয় সেখানে। তোর মামাকে তেমন বাজার যেতে হতোনা চাষের সবজিপাতি তুলেই তার একার পেট চলে যেতো ভালোভাবেই।

একদিন ৩ ৪ ছেলে তারা সম্ভবত এই গ্রামের নয় পাশের কোনো গ্রাম থেকে এসছিল। জমিটা দেখে তাদের একটা লোভ সৃষ্টি হয়। ওরা গোপাল (আমার মামার নাম) কে ওই জমিটা বিক্রির জন্য বলে। তার পরিবর্তে অনেক টাকা দেবে এই লোভও দেখায়। কিন্তু গোপাল রাজি হয়না সেটা বিক্রি করার জন্য ও বলে যে না এই জমি তার পৈতৃক ভিটা বাপ ঠাকুরদার সম্পত্তি ,এটা সে কখনোই কাউকে দেবেনা মরে গেলেও না। কিন্তু সত্যি তাকে মরতে হলো একদিন"

আমি হতবাক হয়ে কাকার সব কথা শুনছিলাম। একটু ভয় পেয়ে তুতলে গিয়ে বললাম,"ম...ম...রতে হলো মানে?! এসব কি বলছো তু.. তু...মি কাকা?"

বলাই কাকা আবার শুরু করলো, "হ্যা রে ঠিকই বলছি, সেদিন গভীর রাত। ওই ছেলেগুলো আসার ঠিক দুদিন পর আবার হাজির হয় সে রাতে তার দল বল নিয়ে। কম করে ৭ ৮ জন তো হবেই। সবার হাতেই নাকি অস্ত্র ছিল।

ওই রাতটাই তোর মামার কাছে শেষ রাত ছিল।সে নিজেও জানতোনা যে তার কি পরিনতি হতে চলেছে।

তখন চারপাশ সব নিস্তব্দ সবাই ঘুমাচ্ছে। ওই ছেলেগুলো তোর মামার দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে। আর সাথে সাথে তার মুখ হাত পা সব বেধে ফেলে। ঘটনাটা এতটাই দ্রুত হয়েছিল যে, তোর মামার কিছু করার ক্ষমতাও ছিলনা। ছেলেগুলো তাকে অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। অতগুলো ছেলে প্রত্যেক অস্ত্রের আঘাত গোপালের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গে পড়েছিল। কোনো জায়গা বাদ যায়নি। সে যে কি বিভৎস তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা।

কাজটা এতটাই চুপি চুপি করেছিল ওরা তাই একটা লোকও টের পাইনি।

পরদিন সকাল বেলা ওই হারুর মা পুকুরে ঘাটে যাওয়ার সময় দেখতে পায়, গোপালের ঘর থেকে লাল রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। যেনো ওখানেই একটা রক্তের পুকুর হয়ে গেছে।সে গ্রামের সকলকে জানায় তারপর আমরা পুলিশে খবর দিই।ওরা এসেই গোপালের লাশ উদ্ধার করে। গোপালের শরীরে আর কিছু ছিলনা গোটা শরীর পুরো ফালাফালা করে ফেলা হয়েছিল।"

কাকা একটু থামলো আমার তখন মুখে কোনো শব্দ নেই আওয়াজ যেনো বন্ধ হয়ে গেছে। আমি যেনো একদম স্তব্ধ হতে গেছি। বলাই কাকাও দেখলাম ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদঁছে। আমার তখন কষ্টের থেকে রাগ বেশি হচ্ছে ওই পিশাচ লোকগুলোর জন্য। আমার চোখে যেনো তখন আগুনের লেলিহান শিখা ঠুকরে বেরিয়ে আসছে।

আমি শুধু কাকাকে একটাই প্রশ্ন করলাম," লোকগুলোর কি কোনো শাস্তি হয়নি কাকা ওরা এখন কোথায়?

তারপর আমি তখন অনেক জোরে কেঁদে উঠলাম। কাকা আমার মাথায় হাত রাখলো।

কাকাও তখন কাঁদো কাঁদো গলায় উত্তর দিলো,"হ্যা, ওরা দলে ৭জন ছিল। পুলিশ ধরেছিল ওদের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায়। তারপর ওদের বিচারে ৩ জনের ফাঁসি হয়। দুজন এখনো জেলে। আর দুজন পালিয়ে গেছে তাদের এখনও পর্যন্ত ধরা যায়নি।"

আমি বলে উঠলাম, "আমার মামাকে যারা যারা মেরেছে আমি সবার ফাঁসি চাই।"

একটু চুপ থেকে উত্তেজিত হয়ে বললাম "আচ্ছা বলাই কাকা আমি আগের দিন রাতে তাহলে কর সাঠে ছিলাম। কে আমাকে খেতে দিল। কার সাথেই বা গল্পঃ করলাম। কাকাকে রাতের সমস্ত ঘটনাটা বললাম যেটা আমি রাতে দেখেছিলাম ঘুম চোখে।"

কাকা তখন বলল " তোর মামা তোকে দেখা দিতে এসেছিল তার আত্মা হয়তো শান্তি পেতোনা তাই এই বাড়িতেই আটকে ছিলো। গোপাল মারা যাওয়ার পর এই বাড়িতে কেমন একটা গা ছমছম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। অনেকে বলে তাকে নাকি এই বাড়িতে ঘোরাঘুরি করতেও দেখেছে ।

তাই এই বাড়ির সামনে দিয়ে সন্ধ্যেবেলা তেমন কেউ যাওয়া আসা করতোনা।

এখন সে হয়তো মুক্ত হবে কারণ তুই তার বাড়িতে এসছিস আর তোর মামা তোকে তো অনেক ভালোবাসতো। তুই সবটা জানতে পারলি আমার থেকে। গোপালের মৃত্যুর পরও কেউ আসেনি তাকে দেখতে। তোদের বাড়িতে তো আমি খবর পাঠিয়েছিলাম কিন্তু সেই খবর হয়তো গিয়ে পৌঁছায়নি কোনো কারণে। তাই তোরা কিছুই জানতে পারিসনি।"

এই অব্দি বলে বলাই কাকা থামলো। আমি তখন খুব ভেঙে পড়েছি কাদঁছি। কাঁদার সাথে সাথে রাগ টাও হচ্ছিল ওই নর পিশাচ গুলোর ওপর।

আমি আর কি করি, আমার মন মেজাজ খুবই খারাপ। মোটামুটি দুপুরের দিকে গ্রামের চেনা পরিচিত মানুষগুলোর সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে পুরুলিয়ার সেই ছোট্ট গ্রামটি থেকে প্রস্থান করলাম।

বাড়ি ফিরে সবাইকে মামার ঘটনাটা জানালাম। সবাই তো কান্নায় ভেঙে পড়লো একেবারে। অনেকে অনেক কথাই বললো।

তার কিছুদিন পর আমরা সকলে বাড়ির সবাই মিলে সেই গ্রামে গেলাম মামার শ্রাদ্ধ শান্তি করার উদ্দেশ্যে। ভালো মতোই সব করে আবারও বাড়ি ফিরে এলাম। সবারই মন খুব খারাপ আর সেটা হওয়ারই কথা। এই শোক কোনোদিন কাটিয়ে ওঠা সম্ভব কিনা আমি জানিনা। তাও ধীরে ধীরে আমরা নিজেদের জীবনে আবার এগোতে শুরু করে দিলাম।

এরপর প্রায় কেটে গেছে দুইমাস এর মধ্যে গ্রাম থেকে খবর পাওয়া যায় যে। মামার হত্যাকারী যারা পালিয়ে গেছিলো তারা ধরা পড়েছে। এবং সকলেরই ফাঁসি হয়েছে। এটা শুনে আমি এবং আমার পরিবারও খুব খুশি হয়েছিলাম।

আর অবশ্যই হয়তো আমার মামার আত্মাও শান্তি পেয়েছিল অনেক।

এবার আসি আমার কথায়। আমি ছোটন মানে প্রীতম, যে কোনোদিন এসব ভূতে বিশ্বাস করতাম না, কিন্তু আমার সাথে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর আমার মনে বিশ্বাস জন্মে গেছে যে ভুত আছে। ভূত আছে কি নেই সেটা জর দিয়ে বলতে পারিনা, তবে এই পৃথিবীতে অলৌকিক বলেও একটা বস্তু আছে আর সেটা হলো আমাদের আত্মা যা চোখে দেখা যায়না শুধু অনুভূতির মাধ্যমে প্রকাশ পায়।।

সমাপ্ত।।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror