তুলাই একটি নদীর নাম
তুলাই একটি নদীর নাম
একটা সময়ে খরস্রোতা করতোয়ার বেগকে,
সামাল দিতে সৃষ্টি হয়েছিলো তুলাই বা তেঁতুলিয়া।
কির্তীনাশা করতোয়ার মেয়েকে বলা হতো রাক্ষসিনী,
কালোমাটিয়ায় নৌকায় যাত্রী ও মাল পারাপার করাতো বানু ঘাঠোয়াল পাটনী।
ঠাকুর গাঁয়ে সৃষ্টি হয়ে, সর্পিল গতিতে চলতে গিয়ে,
তুলাই হয়ে কিছুটা এসেছে কুলিকে,
বাকিটা টাঙ্গন হয়ে পদ্মা দিয়ে মেঘনায় হয়েছে বেনী।
কুলিক আর তুলাইয়ের চর আর তীরের সুগন্ধি___
ছড়িয়ে ছিলো মেঘনার বুকে সুগন্ধ।
মেঘনার বেড়জালের সুগন্ধ নদীর বুকে,
তীর্থ করছিলেন চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী নামে ব্রাহ্মণ।
জগদম্বা দেখালেন তাকে তিনটি মূর্তির স্বপন !
স্বপ্ন দেখে সঙ্গে থাকা শিষ্য রামনাথ রায়কে,
নদী থেকে মূর্তি তুলতে আদেশ করেন।
ডুব দিয়ে দশরথ বা রামনাথ দে অথবা দেবরায়,
দুই বার ডুবে কাত্যায়নী ও মদনগোপালের মূর্তি পায়।
এতো পেয়ে শেষে হারানোর ভয়ে,
তৃতীয় বার ডুব দিতে ভয় পায়।
বিক্রমপুর থেকে নিজের রাজ্যের লোক এনে,
সেই জায়গার এক দ্বীপের কচুবন পরিস্কার করায়।
মূর্তি সেখানেই স্হাপন করে, ঠাকুরেরা পূজো পায়,
গুরুর নামে দ্বীপটির নাম চন্দ্রদ্বীপ রাখেন।
ঠাকুরের আশীর্বাদে সেখানে বাকলা নামে ____
আসলে বাঙ্গালা নামে করেন এক বন্দর স্হাপন।
গৌড় বা লক্ষণাবতীর চেয়ে বড় নৌবাহিনীর
অধিকারী ছিলেন এই রামনাথ রায়।
সুলতান শাসনের সাথে পাল্লা দিয়ে,
স্বাধীন হিন্দুরাজ্য স্হাপন করেন।
গিয়াসুদ্দিন বলবন পর্যন্ত বিদ্রোহী তুঘরল খাঁকে,
শায়স্তা করতে দনুজমর্দনের সাহায্য চান।
তার চেয়েও বড় কথা, বাঙালির বুকের পাটা!
"দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা করতে হবে" এমন শর্ত রাখেন।
পায়রা ওড়ানোর অজুহাতে হলেও উঠে দাঁড়ান,
যখন দনুজমর্দন তাঁর সাথে দেখা করেন।
সেন বংশের উত্তর সুরী ভরদ্বাজ গোত্রস্হ কায়স্হ,
সমগ্র বাঙ্গালীর গর্ব, রাজা রামনাথ দনুজমর্দন ।
তাঁর নামেই দিনাজপুর জেলা !
আর কুলিক - তুলাই নদীর মাঝের ,
বা দুটো নদীর মিলনস্হলের আশেপাশের,
জমিতেই ফলে এই ধান তুলাইপান্জি !
চৈতন্য মহাপ্রভু সাথে দনুজমর্দন,
এর উত্তর পুরুষ দেখা করেন।
আতপ চালের ভাত খেয়ে মহাপ্রভু খুশি হন।
সুগন্ধের কারণে তুলাইপান্জি চালের নাম,
পৃথিবীর লোক আজ জানে সর্বজন।