শেষ দেখা
শেষ দেখা
সেই স্টেশনেই আমাদের শেষ দেখা হয়েছিল।
তারপর ট্রেনটা এগিয়ে গেল, তুমিও দূর হতে হতে আরও দূরে চললে।
ক্রমাগত গন্তব্য বাড়িয়ে চলল তার দূরত্ব। ছিঁড়তে লাগল সময়।
চেষ্টা করেও আর দেখা হয়নি কখনো। ঠিকানাটা তুমি বদলে নিয়েছিলে। গিয়ে ঘুরে এসেছিলাম।
কামরার এপার ওপারে বসে তুমি আমাকে একটা কবিতা উপহার দিয়েছিলে।
আনন্দ হয়েছিল, ভালোবাসা নেমেছিল।
লেখাটা আজও আঠার মতো চিটে আছে শরীরের প্রতিটা আনাচে-কানাচে।
তোমার কবি সত্ত্বার কাছে ধরা পড়েছিল পাগলপারা, উড়োনচন্ডী উসকোখুসকো ছেলেটা।
দু-একবার যখন তোমার আঙুলে ছোঁয়া গেছল হাতটা-সেখানেই এক আকাশ কল্পনা বাঁচতে চেয়েছিল।
সাংসারিক দায়িত্ববোধের যে শেকল আমাকে বেঁধে রয়েছে চারিপাশে,
সেখানে তুমি ছিলে মুক্তি।
আমার মনখারাপের খবর কোনোদিন মিডিয়ায় উঠে আসে না।
যে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যায় পাঁজর তার এক্সরে হয় না।
চশমার ঝাপসা কাঁচের আড়ালেই সন্ধ্যা নামে, পাখিরা ফিরে আসে বাসায়। আমি আরেকটা দিনের বিশ্বাস বুকে নিয়ে বাঁচি।
কত চিঠি ভেসে গেছে বৃষ্টিতে কাগজের নৌকায়,
কত নাম ছাই হয়ে গেছে প্রতিদিনের শুকনো পাতায়,
কত রোদ আঁকিবুকি কেটে যায় ঝুল বারান্দাটায়,
তার মাঝে তোমার স্বর শুনে নেব হাওয়ায় হাওয়ায়।
সেই ট্রেনটা আসুক আরেকবার, ভুল হবে না আর...
একটা কামরা থাকবে আমাদের বন্ধুত্বের নামে।

