ঋণ
ঋণ
আমি তখন অনেক ছোট - নেইকো অতো মনে,
তবে - বড়ো অল্পতেই জল এসে যেত আমার চোখের কোণে,
কোলে টেনে নিয়ে - আদরে, আঁচলে, চোখটা মুছিয়ে দিয়ে-
মা বলতো - " আয় তো দেখি! এতখানি জল জমা থাকে কোনখানে? "
অভিমানী মন খুলে দিতো দ্বার - উঠতো কথার ঝড়,
মাকে তো সামনে বসতেই হবে - আমি বদ্ধপরিকর,
রান্নাবান্না, ঘরের কাজ আর কত্ত সময়ের ডাক,
সবকিছু ভুলে মা তখন, আমার মুখে - হাসি ফোটানোর কারিগর.
আরো মনে পড়ে - যেদিন আমার জন্মদিনটা হতো,
ঘেমে নেয়ে মা ঠিক রেঁধে দিতো বাহারি রান্না কত,
আমার জয়েতে সবথেকে খুশি - হারেতে সে অভিমানী,
পরীক্ষার আগে প্রণামটা তাই - মাকেই যে করতে হতো.
পিছু ডাকে আজও আদুরে শাসন, ঘুম পাড়ানিয়া গান,
বয়েসের আবে
শে দূরে ঠেলেছি যাদের - হয়তো রাখিনি মান,
নির্জলা থেকে জল দিয়েছিলো যে আমার আগামীর চারাগাছে-
সেই মা-কেই তো কখনো বিঁধেছি কথায় - করেছি অপমান.
তবুও, ধূমজ্বর যখন চাপতো মাথায় - ভুল বকতাম আমি,
রাতজাগা ঐ চোখে মিশেছিল - কত প্রার্থনা আমি জানি,
সাক্ষী দিচ্ছে লোডশেডিং-এর ঐ হাতপাখাগুলো আজও -
জীবনের দেওয়া সব উপহারে মা-ই যে সবচেয়ে দামী.
আঙ্গুল ধরে চলতে শেখালে - বলতে শেখালে কথা,
হাজার কষ্ট হাসিতে লুকিয়ে - সইলে কত না ব্যাথা,
হাত বাড়ালেই বন্ধু হয়ে ভরসার আলো জ্বেলে-
তুমিই তো মা লিখেছো আমার জীবনপথের গাথা.
মাগো! তোমায় সত্যি বলছি, তোমাতেই আমি পূর্ণ,
ক্ষমা কোরো দোষ করেছি যত - তুমি মা হয়েই কোরো ধন্য.