প্রতিবিম্ব
প্রতিবিম্ব
কতদিন পর ঘরে ফিরেছে মেয়ে
কলেজের ছুটিতে,
দাওয়ায় বসে সুখ-দুঃখের গল্প
করি মা-বেটি দুটিতে।
কিচিমিচি-বকবক জমে আছে কত কথা,
এক নিমেষেই যেন বলতে হবে
কলেজের অম্ল-মধুর সব অভিজ্ঞতা!
নতুন কলেজ,নতুন জায়গা,
নতুন পরিবেশ,
নতুন ক্লাশ,নতুন পড়া,
নতুন নতুন বন্ধুর সমাবেশ!
চোখে রঙিন স্বপ্ন,
মনে অদম্য উৎসাহ উদ্দীপনা-
ভবিষ্যত রূপরেখা বানাবার চলছে
প্রয়াস-পরিকল্পনা।
কখনো মুখে বলে-
কখনো দেখাচ্ছে অভিনয় করে-
বন্ধুদের হাঁটা-চলা,
স্বভাব-চরিত্র -কথা বলা
কোন শিক্ষক কত মহান,
কে কেমনে ক্লাশে পড়ান!
যেন চোখের সামনে
ভেসে ওঠে সব,
দেখি তাদের হাসি-মজা
শুনি তাদের খুশির কলরব।
যে বাসনা মনে মাঝে ছিল অবদমিত,
আজ মেয়ের মাঝে তা যেন
সুরভিত কুসুমে প্রস্ফুটিত।
পাড়াগায়ের গরীব চাষার মেয়ে,
পেরোই নি স্কুলের গন্ডি,
পড়ার ইচ্ছে ছিল অদম্য-
কিন্তু ছিল না বাপের সামর্থ।
তাই ষোড়শী মেয়েকে বাবা
অচিরে করেছিলেন পাত্রস্থ।
মনের ইচ্ছেকে করি অবদমন-
মেয়ের মধ্যে চেয়েছিলাম করতে
স্বীয় স্বপ্ন পূরণ।
আজ দেখি সাফল্যের
আকাশ ছুঁতে চাওয়া ইচ্ছে গুলো
কুলু কুলু ঝরনার মতো বইছে তার মনে।
তার চোখের বড় হওয়ার স্বপ্ন
আর মনের খুশি দেখে-
আনন্দাশ্রু এলো চোখে,
যেন নিজের প্রতিবিম্ব দেখলাম
নিজের আত্মজার মাঝে,
যেন স্বীয় আশা-আকাঙ্খা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে
নিজের কন্যার মনে।