প্রবাসের ডাক
প্রবাসের ডাক
চোখে একরাশ স্বপ্ন আর
বুকভরা আশা নিয়ে ছেড়েছিলাম তোমায়।
অচেনা,অজানা দেশ,
অপরিচিত লোকজন,
অজানা পরিবেশ-
ভিন্ন জাতি,ভিন্ন ভাষা,
ভিন্ন খাদ্য,ভিন্ন বেশভূশা।
নতুন পেশা-নতুন নেশা,
নতুন এক দেশ কে ভালোবাসা !
সবই ছিল নতুন-
এ যেন এক নতুন ধরণী,
শুধু ছিল উন্নতির অদম্য হাতছানি!
সব পেয়েছি এখানে-
বাড়ি,গাড়ী,ধন দৌলত,
আয়েস-আরাম-হীরে-জহরত।
সাফল্যের চরম সোপান,
সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যত।
এ দেশ ভরে আছে প্রাচুর্যে,
নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে।
এখানে আমি সুখের সাগরে
করি অবগাহন,
প্রদূষণমুক্ত বায়ুতে নিই শ্বাস,
ভেজাল বিহীন আহার করি,
বিশুদ্ধ জল করি পান।
শৈশবে মা যেমন
ছুটে বেড়ায়-দামাল শিশুর পেছনে,
আমিও তেমনি
সারাজীবন ছুটছি বেড়িয়েছি-
জানিনা কিসের আশায়!!
সুখ বৈভব সব পাওয়ার মাঝেও
আছে কিছু না পাওয়ার কষ্ট।
আছে কিছু অব্যক্ত ব্যাথা,
অবসরে মনে পড়ে সেসব কথা,
অনুভবি তোমার অভাব।
এখানে পাইনি বন্ধুদের আন্তরিকতা,
পাইনি মায়ের মমতার আঁচল,
পাইনি ভাইবোনের সাহচর্য,
ক্ষীণ হয়েছে আত্মীয় পরিজনের সাথে সব সম্পর্ক।
পাইনা দেশের মাটির ছোঁওয়া,
পাইনা রোদ ঝলমলে
শরতের আকাশ।
পাইনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা
খাওয়ার মজা,
পাইনি দুর্গা পুজোর রাত জেগে
ঠাকুর দেখা আর চুটিয়ে আড্ডা দেওয়ার আনন্দ।
নেই কোন আপন,
নেই কোন পরিজন,
নেই প্রাণ খোলা হাসি,
নেই মন খুলে কথা বলা।
নেই পড়শীর সাথে বাক্যালাপ,
নেই বন্ধুদের সাথে সেই খুনসুটি,
অতীতের সে সব কথা এখন
শুধুই মধুর স্মৃতি।
আজ জীবন সায়াহ্নে নিজেকে
বড় নিঃসঙ্গ-অসহায় লাগে,
তোমার বুকে ফেরার কথা মনে জাগে।
সব ছেড়ে হয়তো আর কখনো হবে না দেশে ফেরা,
মনে আশা জীবনের শেষবেলায়,
একবার তোমার মাটি কে ছোঁওয়া।